সীতাকুণ্ডে শারীরিক প্রতিবন্ধীদের আঙুলের নখ তুলে ক্যাসিনো মিন্টু
ভাটিয়ারীতে ক্যাসিনো মিন্টুর বিরুদ্ধে সীতাকুণ্ডে শারীরিক প্রতিবন্ধী এক অটোরিকশা চালকের নখ কেটে ফেলার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে মাসখানেক আগে সীতাকুণ্ড উপজেলার ভাটিয়ারীতে। একজন ১৭ বছর বয়সী শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী (এক পা বাঁকা, এক পা লুলা) রাব্বির মুখে শোনা যায় এই ভয়ঙ্কর ঘটনাটি ।
রাবির বয়স যখন চৌদ্দ, তখন তার মা তার ছোট ছেলে রাসেলকে নিয়ে অন্য একজনের সাথে নতুন সংসার শুরু করেন। তিন মাস পর তার বাবা আবার বিয়ে করে আলাদা হয়ে যান। রাব্বির বাড়ি রাউজান এবং বাবা-মায়ের বাড়ি কুমিল্লা। রাব্বি তার দাদীর সাথে ভাটিয়ারী ৪ নং ওয়ার্ডে গোয়ালিনী ফ্যাক্টরির পাশে একটি ভাড়া বাড়িতে থাকেন। বাবা-মা দুজনেই তাকে ছেড়ে চলে যাওয়ার পর, দাদি ও রাব্বি বাজারে ভিক্ষা করে তাদের জীবন পরিচালনা করে। ৬/৭ মাস ভিক্ষা করার পর রাব্বি ভাবল সে অটোরিকশা চালাবে। তাই ক্যাসিনো মিন্টুরের গ্যারেজ থেকে একটি অটোরিকশা ভাড়া করে চালানো শুরু করে। এভাবেই চলছিল তার জীবন। হঠাৎ করে এক মাস আগে এক প্রতিবন্ধী রাব্বির রিকশা চুরি হয়ে যায়। রাব্বির রিকশার মালিক ক্যাসিনো মিন্টু রিকশার জন্য ক্ষতিপূরণ দাবি করেন। রাব্বি অন্য মালিকের একটি রিকশা চালায় এবং অনেক কষ্টে পাঁচ হাজার টাকা দিয়ে বাকি টাকা পরিশোধ করতে পারেনি।
এক পর্যায়ে ক্যাসিনোর মালিক মিন্টু তাকে পাহাড়ের অভ্যন্তরে গুয়ালিনি সিনার্জি বাগানে নিয়ে যান এবং বৈদ্যুতিক প্লায়ার দিয়ে মধ্যযুগীয় ফ্যাশনে তার দুই হাতের আঙুল খুলে দেন। এরপর থেকে মিন্টু ওকে রিকশা চালাতে না দিয়ে প্রতিবন্ধী রাব্বিকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে আসছে। আর কত দিন সে অর্ধাহারে থাকতে পারবে, তাই পেটের দায়ে তাকে নির্যাতনকারী মিন্টুর বাড়ি থেকে পালিয়ে এসে রাব্বি এখন আবার ভিক্ষা করছে।
জানা যায়, ভাটিয়ারী তেলিপাড়ার কবির আহম্মদ ভোলার ছেলে ক্যাসিনো মিন্টের রিকশা গ্যারেজের আড়ালে দীর্ঘদিন ধরে ইয়াবা, মদ ও মোবাইল ক্যাসিনো জুয়া ব্যবসা করে মোটা অংকের টাকার মালিক হয়েছেন। জানা গেছে, পাঁচতলা বাড়ি ও নিজের নামে বিপুল সম্পত্তির মালিক মিন্টু এর আগে মাদক মামলায় কারাগারেও ছিলেন।
অভিযুক্ত মিন্টুকে (ক্যাসিনো মিন্টু) জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, আমি প্রতিবন্ধী রাব্বিকে সামান্য মারধর করেছি কিন্তু নির্যাতন করিনি। তার যা হয়েছে তা আমি মিটিয়ে দেব। সে অন্য কারো রিকশা চালাতে পারে।
ভাটিয়ারী ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ড সদস্য সাব্বির আহমেদ জানান, এক মাস আগে প্রতিবন্ধী রাব্বিকে মারধরের ঘটনায় দুজনকে ডেকে নিয়ে বাকি ১০ হাজার টাকা মিন্টু কাট্রিক রাব্বিকে ক্ষমা করে দিয়ে বিষয়টি মিমাংসা করতে রাজি হয়েছিলাম।
সহকারী পুলিশ সুপার, (সীতাকুণ্ড সার্কেল) এবিএম নাইহানুল বারী বলেন, ভাটিয়ারীতে রাব্বি নামের এক শারীরিক প্রতিবন্ধীকে নির্যাতনের ঘটনায় কেউ অভিযোগ করেনি বলে আমার জানা নেই। তারপরও তদন্তে সত্যতা পাওয়া গেলে অপরাধীকে আইনের আওতায় আনা হবে।