‘ফুটবল খেলার পুরস্কার না দিয়ে তারা আমার ভাতিজার মরদেহ দিয়েছে’
“ফুটবল খেলার পুরস্কার না দিয়ে ওরা আমার ভাগ্নের লাশ দিয়েছে। আমি এই হত্যার দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।’ নিহত হেলিমের চাচা আব্দুল হাশেম তার ভাতিজা হত্যার খবর দিতে গিয়ে চিৎকার করে ওঠেন।
এর আগে নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলায় ফুটবল খেলা নিয়ে মারামারিতে কৃষক হেলিম মিয়া (৩৫) নিহত হয়েছেন। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ঢাকা নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
গত বৃহস্পতিবার বিকেলে ফুটবল খেলা নিয়ে মারামারি হয়। এতে হেলিম নিহত ও তার চাচি সহ তিনজন আহত হন। হেলিম মিয়া কলমাকান্দা উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের কান্দাপাড়া গ্রামের নেওয়াত আলীর ছেলে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বুধবার বিকেলে নাজিরপুর ইউনিয়নের হরিপুর ও কান্দাপাড়া গ্রামের মধ্যবর্তী বড়ায়ুন্দ গ্রামের একটি ধান ক্ষেতে ফুটবল খেলার আয়োজন করা হয়। খেলার একপর্যায়ে দুই গ্রামবাসীর মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরে স্থানীয়রা তা বন্ধ করে দেয়। পরে ওই ঘটনার জের ধরে গত বৃহস্পতিবার আবারও ঝগড়া হয় এবং উভয় পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে কলমাকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। সেখানে হেলিমের অবস্থার অবনতি হলে বৃহস্পতিবার রাতে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে শুক্রবার বিকেলে আবারো হেলিমের অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠায়। পরে সন্ধ্যায় ঢাকার উদ্দেশে রওনা হলে পথেই তার মৃত্যু হয়।
আহতদের মধ্যে নিহতের চাচাতো ভাই খেলোয়াড় এমদাদুল হক (২২) কলমাকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন এবং এমদাদুলের মা হাবিবা খাতুন (৫৩) হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
নিহতের চাচাতো ভাই আহত এমদাদুল হক জানান, সেদিনের খেলায় আমাদের কান্দাপাড়া ফুটবল দল হরিপুর গ্রাম দলকে ১-০ গোলে পরাজিত করে। পরে আয়োজক মাজহারুলের কাছে পুরস্কার চাইলে তিনি পুরস্কারটি পরে দেওয়া হবে বলে আমাদের জানান। পরে আমরা বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলে হরিপুর দলের রুবেলসহ আরও কয়েকজন পেছন থেকে আমাদের ওপর হামলা চালায়।
নিহতের চাচা আব্দুল হাশেম জানান, খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। গুরুতর আহত অবস্থায় আমার ছেলে এমদাদুল, ভাতিজা হেলিম ও স্ত্রী হাবিবাকে উদ্ধার করে কলমাকান্দা হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।
এ ব্যাপারে খেলার আয়োজক মাজহারুলের সঙ্গে ওই পক্ষের লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। হেলিমের মৃত্যুর খবর শুনে ওই গ্রামের ফুটবল দলের সংগঠক ও সদস্যরা লাশ ঢেকে দেন।
কলমাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম (পিপিএম) ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। জড়িতদের গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান চলছে।
নিহতের চাচাতো ভাই খেলোয়াড় এমদাদুল হক (২২) কলমাকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।