কঠিন পরীক্ষায় মুশফিক-মুমিনুল

0

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচ শুরুর আগে আলোচনায় বাংলাদেশ দলের দুই ব্যাটসম্যান। মুমিনুল হক এমন একজন অধিনায়ক যিনি দীর্ঘদিন ধরে রান পাচ্ছেন না। আরেকজন রিভার্স সুইপার মুশফিকুর রহিম। মুমিনুল হয়তো তেমন চিন্তিত নন। প্রিয় ভেন্যুতে ভালো ইনিংস খেললেই সমালোচনা চাপা পড়বে। মুশফিককে নিয়ে উদ্বেগ। যা সহজে কোনো সিদ্ধান্ত থেকে ঝেড়ে ফেলা যায় না। উল্টো যতবারই রিভার্স সুইপে আউট হওয়া নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে, ততবারই রিভার্স সুইপে আউট হতে দেখা গেছে উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যানকে। এই শট খেলতে দলের ভেতর থেকেও তাকে সমর্থন দেওয়া হয়েছিল। যে কারণে গত দুই দিনে মুশফিকের রিভার্স সুইপ এবং মুমিনুলের ব্যাট প্যাচ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কোচ বা অধিনায়ক এই দুই প্রশ্নের সন্তোষজনক উত্তর না দিলেও মুশফিক ও মুমিনুল বুঝতে পেরেছেন তারা এক সুতোয় হাঁটছেন। এই পরীক্ষায় পারফর্ম করতে না পারলে অবশ্যই বিতর্কের ঝড় উঠবে। কারণ দলের এই দুই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান তিন, চার বা পাঁচে ব্যাট করতে নামেন। তাদের কাছ থেকে রান না পাওয়া মানে পুরো ইনিংস ঝুঁকিতে ফেলা।

টেস্টে দেশের দ্রুততম সেঞ্চুরিয়ান মুমিনুল। সেঞ্চুরি এবং গড় উপরে। কিন্তু সে এখন ঘুমন্ত দানব। শেষ ১২ ইনিংসে সেঞ্চুরি দূরে থাক, মাত্র একটি হাফ সেঞ্চুরি। শেষ সাত ইনিংসে ৩৭। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জয়ের টেস্টে রান আসে ৮৮। দক্ষিণ আফ্রিকা সফরেও ফ্লপ ব্যাটসম্যানদের একজন তিনি। যে কারণে গত সিরিজ থেকেই প্রশ্নের মুখে পড়েছেন অধিনায়ক। গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে তাকে প্রশ্ন করা হয়, ব্যাটের প্যাচ থেকে বেরিয়ে আসার পথ খুঁজছেন কিনা। ব্যাট প্যাচের বিষয়টি মানতে চাননি মুমিনুল, ‘আমি বিশ্বাস করি না আমি ব্যাট প্যাচে আছে। আমি বিশ্বাস করলে এর থেকে বের হতে পারব না। আমি মনে করি, আমরা যেভাবে প্রস্তুতি নিয়েছি তাতে দলটি অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী। সবাই সেরা পারফরম্যান্স দেখাতে পারবে ইনশাআল্লাহ। রানের ক্ষুধা আছে মুমিনুলের। গত পাঁচ দিনের অনুশীলনে ব্যাটিংয়ে কঠোর পরিশ্রম করেছেন তিনি। হেড কোচ রাসেল ডমিঙ্গো তাকে ট্র্যাকে ফিরিয়ে আনতে প্রায় আঠারো সময় লেগেছিল। টপ অর্ডারে ব্যাটার ব্যাট পজিশন, ফুটওয়ার্ক এবং শট নির্বাচন নিয়ে কাজ করেছে। নিজের হোম ভেন্যুতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে রানের সুবাসও ছড়াতে পারেন তিনি। কারণ তার ১১টি টেস্ট সেঞ্চুরির সাতটিই ছিল জহুর আহমেদ স্টেডিয়ামে। ২০১৮ সালে লঙ্কানদের বিপক্ষে ড্র টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরি করেছিলেন মুমিনুল। ম্যাচের আগেও রানে ছিলেন না বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলার আশায় থিতু হতে পারেন অধিনায়ক। তবে মুশফিক রিভার্স সুইপ বাদ দিতে পারবেন কিনা তা জানা যায়নি।

মুশফিক রিভার্স সুইপ খেলেন এবং ঝুঁকিপূর্ণ শট খেলা বারণ। সেশন শেষ হওয়ার ১০ মিনিট আগে বা হাফ সেঞ্চুরির ঠিক আগে রিভার্স সুইপ খেলতে বসেন তিনি। এই হঠকারিতার কারণে দল ক্ষতিগ্রস্ত হবে তা জানলেও তিনি নিজেকে সংশোধন করেননি। চট্টগ্রাম টেস্টেও মুশফিকের রিভার্স সুইপকে সমর্থন করবেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি বলেছি, পরিস্থিতি বুঝে খেলব। সে যদি মনে করে সে সময়ে সে অবস্থায় সে ঠিক নেই, তাহলে বুঝবে। আমার সেটা বলার দরকার নেই। তাহলে সবাই বুঝবে সে শিখতে পারেনি। আর আমি ড্রেসিংরুমে এটা নিয়ে কথা বলি। ‘ ভালো কথা হলো গত কয়েকদিনে মুশফিককে রিভার্স সুইপ খেলতে দেখা যায়নি। এখন দেখা যাক কতক্ষণ ম্যাচে রিভার্স সুইপ ভুলতে পারেন। মুশফিকের শেষ টেস্ট সেঞ্চুরি দেখা গিয়েছিল ২০ ইনিংসে আগে। গত পাঁচ ইনিংসের চারটিতে দশের নিচে আছেন তিনি। সব মিলিয়ে ব্যাট হাতে মুশফিকের রান দেখার অপেক্ষায় চট্টগ্রাম। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজটাও মুশফিক ও মুমিনুলের জন্য টার্নিং পয়েন্ট।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *