মাঠ প্রশাসনের কর্মচারীদের পদের নাম পরিবর্তন করা হচ্ছে
মাঠ প্রশাসনের কর্মচারীদের ধর্মঘটের পরিপ্রেক্ষিতে বেতন গ্রেড অপরিবর্তিত রেখে শুধু পদের নাম পরিবর্তন করছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। তবে গত বছরের ২৪ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্মচারীদের নাম পরিবর্তন ও বেতন গ্রেড বাড়ানোর নীতিগত অনুমোদন দিলেও তা হচ্ছে না। কারণ, প্রধানমন্ত্রী সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে ১৩, ১৪ ও ১৫ গ্রেডের কর্মচারীদের পদের নাম দেন এবং ১৩তম গ্রেডে পদোন্নতির বিষয়ে সম্মতি দেন। এখন ১৩ তম গ্রেডের কর্মচারীদের নাম হবে উপ-প্রশাসনিক কর্মকর্তা, ১৪ তম গ্রেডের সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা, ১৫ তম গ্রেডের উপ-সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা হবেন। আর ১৬ গ্রেডের অফিস সহায়কদের কোনো পরিবর্তন নেই।
এতে আগের মতো কর্মচারীদের তিন ভাগে ভাগ করে শুধু কর্মকর্তা যোগ করা হবে, বেতন গ্রেড বাড়বে না। ফলে পদে পদে নামের পরিবর্তে কর্মচারীদের সামাজিক মর্যাদা বাড়লেও ক্ষোভ থেকে যাচ্ছে।
জনপ্রশাসন ও অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পর এক বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও অর্থ মন্ত্রণালয়ে আটকে ছিল মাঠ প্রশাসনের সংস্কার। এরপর ফেব্রুয়ারিতে কর্মচারী ইউনিয়ন, বাংলাদেশ বিভাগীয় কমিশনার অফিস এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশন (বিবিআইসিসিএস) এবং বাংলাদেশ কালেক্টরেট সহকারী সমিতি (বাকাস) ধর্মঘটের ঘোষণা দেয়। তবে জনপ্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আশ্বাসে তারা ফেব্রুয়ারিতে কর্মসূচি স্থগিত করে ১ মার্চ থেকে শুরু করেছে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব আবদুর রউফ তালুকদার সংশোধিত প্রস্তাব পাঠাতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কে এম আলী আজমকে চিঠি দেন। জনপ্রশাসন সচিব চিঠিটি মন্ত্রণালয়ের সংস্থা ও ব্যবস্থাপনা বিভাগে পাঠিয়েছেন। কর্মচারীদের বেতন গ্রেড অপরিবর্তিত রেখে পদের নাম তিনভাবে ভাগ করে বিধি বিভাগে পাঠিয়েছে মহকুমা। অর্থ বিভাগের অনুমোদন সাপেক্ষে চলতি মাসের মধ্যে পদটির নাম পরিবর্তনের প্রজ্ঞাপন জারি করতে পারে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
এ বিষয়ে জানতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কে এম আলী আজমের কার্যালয়ে গেলে তার একান্ত সচিব ফয়সাল হক বলেন, স্যার এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করবে না। তবে কর্মচারীদের নিয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগে কাজ চলছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব খোরশেদা ইয়াসমিন বলেন, প্রস্তাবটি আইনি মতামতের জন্য বিধি বিভাগে পাঠানো হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, ১৩ থেকে ১৫ গ্রেডের পদ একই করা হলে সমন্বয় করা কঠিন হবে। এ কারণে গ্রেড অপরিবর্তিত রেখে পদের নাম পরিবর্তন করছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
তবে এমন প্রস্তাব মানতে রাজি হননি মাঠ প্রশাসনের কর্মচারীরা। তারা বলেন, এতে শুধু সংঘর্ষ বাড়বে। তবে বেতন গ্রেড পরিবর্তন না হলে প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের প্রস্তাব অনুযায়ী সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তার পদ চান তারা।
এদিকে ডিসি অফিস ও এসিল্যান্ড অফিসের রাজস্ব শাখায় কর্মরতদের পদ ও গ্রেডেও কোনো পরিবর্তন হচ্ছে না।