অবরোধে অগ্নিসন্ত্রাস ঠেকাতে কক্সবাজারে কঠোর অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী

0

বিএনপিসহ সমমনা দলগুলোর ডাকা চতুর্থ দফা অবরোধের দ্বিতীয় দিন সোমবার সকাল থেকে শুরু হয়েছে। ৪৮ ঘণ্টার এই কর্মসূচিতে দলগুলোর পক্ষ থেকে সড়ক, রেল ও নৌপথ অবরোধের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এদিকে অবরোধের নামে নাশকতা ঠেকাতে বাংলাদেশ পুলিশ, পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স (অপারেশন্স) শাখাকে ইতোমধ্যে বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। চিঠির একটি কপি প্রতিবেদকের কাছে রয়েছে।

অন্যদিকে, ডিএমপি কমিশনার ১০টি নির্দেশনা দিয়ে ১২ নভেম্বর আরেকটি চিঠি দেন। এদিকে অবরোধে অগ্নিসংযোগ, পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ ঠেকাতে কক্সবাজারে কঠোর অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সোমবার সকালে কক্সবাজার শহরের বিভিন্ন স্থান ঘুরে ও বিভিন্ন উপজেলায় খোঁজ নিয়ে এসব তথ্য জানা গেছে। বলা যায়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোরতায় বিএনপি-জামায়াতের লোকজন মাঠে নেই। বিশেষ করে পেট্রোল পাম্প সহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সতর্কতা জোরদার করা হয়েছে।

দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ থাকলেও মহাসড়ক ও বাইওয়েতে ছোট গাড়ি চলাচল করছে। সকাল থেকে কক্সবাজার শহর থেকে উপজেলা পর্যন্ত সব ধরনের যানবাহন চলাচল করছে। সোমবার ভোরে কক্সবাজার বাস টার্মিনাল থেকে চট্টগ্রামগামী কিছু লোকাল বাস ছেড়ে যেতে দেখা গেছে। তবে কক্সবাজার থেকে দূরপাল্লার কোনো বাস ছেড়ে যায়নি বলে জানিয়েছেন কয়েকজন পরিবহন কর্মকর্তা।

সোমবার সকালে দেখা গেছে, কক্সবাজারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট ও মহাসড়কে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন। প্রতিটি সড়কে বিপুল সংখ্যক পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবির টহল ও অবস্থান দেখা গেছে। নিবারী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের টহল দিতে দেখা গেছে। এছাড়া কক্সবাজার চট্টগ্রাম মহাসড়কে ‘পেট্রোল বোমার’ নামে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ ঠেকাতে মোটরসাইকেলসহ অন্যান্য যানবাহনে সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।

এদিকে সোমবার সকাল থেকে কক্সবাজারের চকরিয়া-পেকুয়ায় অবরোধের নামে ভাঙচুর ঠেকাতে স্থানীয় এমপি জাফর আলম এমএ-এর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলো কঠোর অবস্থানে রয়েছে বলে এমপির ব্যক্তিগত সহকারী আমিন চৌধুরী জানিয়েছেন। তার দেওয়া তথ্যমতে, দিন বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন স্থানে শান্তি সমাবেশ ও অবরোধবিরোধী বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হবে।

অপরদিকে, কক্সবাজার শহরের লালদিঘী এলাকায় জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে জড়ো হচ্ছেন কক্সবাজার পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. নজিবুল ইসলামের নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা। শান্তি সমাবেশ ও অবরোধ বিরোধী বিক্ষোভ করার পরিকল্পনা রয়েছে। কক্সবাজারের শহীদ সরণিতে জেলা বিএনপির কার্যালয় সকাল থেকে তালাবদ্ধ থাকলেও পুলিশের একটি দল সেখানে অবস্থান করতে দেখা গেছে।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) মো. জসিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, কক্সবাজারের পরিবেশ স্বাভাবিক রয়েছে। কিছু লোকাল বাসসহ বিক্ষিপ্তভাবে মানুষ চলাচল করছে। তিনি আরও বলেন, বিশেষ করে রাতে কক্সবাজার থেকে ছেড়ে আসা দূরপাল্লার বাসগুলো যাতে নিরাপদে পৌঁছাতে পারে সেজন্য জেলা পুলিশের বিশেষ নজরদারি জোরদার করা হয়েছে।

কুমিল্লা অঞ্চল চট্টগ্রাম অঞ্চলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মোঃ নাসিম খান জানান, হাইওয়ে কুমিল্লা অঞ্চলের এসপির নির্দেশে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কে চলাচলকারী ছোট-বড় যানবাহন চলাচলে বিশেষ নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে হাইওয়ে পুলিশের টহল দল সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। তিনি আরও বলেন, যানবাহন যাতে নিরাপদে চলাচল করতে পারে সেজন্য সংশ্লিষ্ট ইউনিটের কর্মকর্তাদের কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *