পার্বত্য অঞ্চলের মানুষ দেশের উন্নয়নে কাজ করছে-

0

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের পশ্চাদপদ মানুষদের অধিক সুযোগ সুবিধা প্রদান করে আসছেন। যার ফলশ্রুতিতে পার্বত্য অঞ্চলের মানুষ শান্তিকামী। তারা দায়িত্বশীল হয়ে দেশের সার্বিক উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন। মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নির্মমভাবে হত্যা করার পরে ধর্মীয় সাম্প্রদায়িক, স্বাধীনতা বিরোধী এবং প্রতিক্রিয়াশীল চক্র পার্বত্য অঞ্চলের পরিবেশকে আবার শূন্যস্থানে নিয়ে যেতে চেয়েছিল, কিন্তু পার্বত্য অঞ্চলের গণতন্ত্রকামী নেতৃত্বশীল মানুষ অত্যন্ত সুচারুভাবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর গৃহীত পদক্ষেপ, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় পদক্ষেপকে অনুসরণ করে পার্বত্য অঞ্চলের উন্নয়ন ও শান্তির সুপ্রতিষ্ঠা করে চলেছেন।

আজ রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী প্রাঙ্গনে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ১২-১৫ জানুয়ারি, ২০২৩ চার দিনব্যাপী পার্বত্য মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম এমপি এসব কথা বলেন।

পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি’র সভাপতিত্বে এসময় মিজ বাসন্তী চাকমা এমপি, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অংসুই প্রু চৌধুরী, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চৌধুরী বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মোসাম্মৎ হামিদা বেগম। এসময় অন্যান্যের মধ্যে পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সত্যেন্দ্র কুমার সরকার, অতিরিক্ত সচিব মো. আমিনুল ইসলাম, যুগ্ম সচিব প্রশাসন আলেয়া আক্তার, যুগ্মসচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম, যুগ্মসচিব হুজুর আলীসহ মেলার অংশীজন সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

পার্বত্য মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি সভাপতির বক্তব্যে বান্দরবান জেলার দুর্গম এলাকার একসময়কার কথা তুলে ধরে বলেন, একসময় দুর্গম থানচি এলাকা যেতে ৪ দিন ও আসতে ৩ দিন সময় লাগতো। সেখানে যাতায়াতের কোনো পাকা সড়ক ছিল না। সেখানকার ছেলেমেয়েরা উচ্চতর ডিগ্রী থেকে বঞ্চিত ছিল। সেখানে এসএসসি পরীক্ষার সেন্টার ছিল না, একটি উচ্চ বিদ্যালয় ছিল না। একসময় থানচি এলাকায় কোনো এসএসসি পাশ ছেলে মেয়ে পাওয়া যেতো না। এখন সে এলাকায় উচ্চ বিদ্যালয় হয়েছে, এসএসসি পরীক্ষার সেন্টার হয়েছে। মেয়েদের স্কুল হয়েছে, কলেজ হয়েছে, হাসপাতাল হয়েছে, উপজেলা কমপ্লেক্স হয়েছে। আজ সেখানে মানুষের ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে গেছে। যেসব এলাকা দুর্গম অঞ্চল, সেসমস্ত এলাকায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সোলার প্যানেলের মাধ্যমে বিদ্যুৎ পাড়া, মহল্লা, বিদ্যালয়সহ ৪২ হাজার ৫০০ পরিবারের কাছে পৌঁছানো হয়েছে। এসব কিছুই সম্ভব হয়েছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঐকান্তিক ইচ্ছায়। মন্ত্রী বীর বাহাদুর বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের আমলে পার্বত্য অঞ্চলে কৃষিক্ষেত্রে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জিত হয়েছে। কাজু বাদাম, কফি, আখ, কমলা, কলার চাষ করে এখানকার কৃষকরা স্বাবলম্বি হচ্ছে। মন্ত্রী আশ্বাসের সাথে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে পার্বত্য অঞ্চলের এক ইঞ্চি জায়গাও খালি রাখা হবে না। সমতল অঞ্চলগুলোতে সেচের জন্য নালা তৈরি করে পানির সংরক্ষণ করা হচ্ছে। ক্রীক তৈরি করে সেচের জন্য আশে পাশে পানি ধরে রাখার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আধুনিক সেচ সরঞ্জামের মাধ্যমে বাংলাদেশের এক দশমাংশ এলাকা পার্বত্য অঞ্চলের মানুষ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতার দিকে এগুচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পার্বত্য তিন জেলাকে স্মার্ট জেলায় পরিণত করার জন্য দৃঢ় প্রত্যয় নিয়েছি।

পরে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার শিল্পীদের পরিবেশনায় এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হয়। প্রধান অতিথিসহ সকলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানটি উপভোগ করেন।

উল্লেখ্য, পার্বত্য মেলায় ১০৩টি স্টল বিভিন্ন পাহাড়ি পণ্য নিয়ে হাজির হয়। মেলার স্টলে চার দিনব্যাপী তিন পার্বত্য জেলায় উৎপাদিত কৃষি পণ্য সামগ্রী, হস্তশিল্প, ঐতিহ্যবাহী কোমর তাঁতে বোনা পণ্য, ঐতিহ্যবাহী পার্বত্য খাবার দ্রব্য প্রদর্শন ও বিক্রয় করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *