১১২০টি মিলের মধ্যে ২৪টি চাল বিক্রির চুক্তি।বগুড়ায় মোটা চাল ৪৮ সরকারি রেট ৪২ টাকা

0

বগুড়ার বাজারে গড়ে ৪৮ টাকা কেজি দরে মোটা চাল কেনা-বেচা হয়। এর বিপরীতে সরকারি ক্রয়মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৪২ টাকা। মিলাররা অভিযোগ করছেন, সরকারি ধান-চালের দাম বাজারের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। কিন্তু খাদ্য অধিদপ্তর বলছে এটা মিলারদের অজুহাত। এ প্রেক্ষাপটে ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত বগুড়ায় ১ হাজার ১২০টি মিলের মধ্যে মাত্র ২৪টি খাদ্য বিভাগের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। এর মধ্যে ১৮টি হাস্কিং ও ৬টি অটোরাইস মিল। এখনও চুক্তির বাইরে রয়েছে ১,৯৬৬টি মিল। চুক্তির অভাবে গত বছর ২৭০টি মিলের লাইসেন্স বাতিল করা হয়। এবারও চুক্তি না করা বা চুক্তির পরও চাল সরবরাহ না করা মিলারদের লাইসেন্স বাতিলের পাশাপাশি মিলের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

বগুড়া খাদ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলায় আমন মৌসুমে ১০ হাজার ২২২ টন ধান ও ২৬ হাজার ৯২১ টন চাল কেনার সিদ্ধান্ত হয়। প্রতি কেজি ধানের দাম ২৮ টাকা এবং চালের দাম ৪২ টাকা এবং কেনার সময় ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এবার চাল ৪ হাজার টন কম এবং ধান ১ হাজার ১০০ টন বেশি।

সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ধান কেনার সার্কুলার জারি করা হলেও চাল কেনা হয় মিলারদের কাছ থেকে। কিন্তু কয়েক বছর ধরেই মিলাররা সরকারকে চাল দিতে নারাজ। এ কারণে গত বছরও জেলার অনেক মিলার খাদ্য অধিদপ্তরের সঙ্গে চুক্তি করেনি। ফলে সরকারের চাল সংগ্রহ কার্যক্রম ব্যাহত হয়। পরে সরকার বাধ্য হয় বিদেশ থেকে এলসির মাধ্যমে চাল আনতে।

এবারও একই অবস্থা হয়েছে। মিলাররা সরকারকে চাল দিতে নারাজ। দুপচাঁচিয়ার ৪৪২টি হাস্কিং মিলের মধ্যে মাত্র সাতটি মিলার চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। বাকি ৪৩৬ চুক্তি করেনি। ওই উপজেলার ১৪টি অটোরাইস মিলের মধ্যে দুটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।

দুপচাঁচিয়া উপজেলা চালকল মালিক সমিতির সভাপতি মোবারক আলী জানান, বাজারে মোটা চাল কেজি প্রতি ৪৮ টাকা ও ধান ৩৫ টাকা। সরকারি দাম বাজারের সঙ্গে সঙ্গতি না থাকায় ধান-চাল কিনে সরকারকে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এবার তার ওপর যোগ করা হয়েছে ২ শতাংশ উৎস কর। এসব কারণে মিলাররা সরকারকে ধান ও চাল দিতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে।

দুপচাঁচিয়া উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক রেবেকা সিদ্দিকা বলেন, যেহেতু এখনো দুই দিন বাকি, দেখা যাক মিলাররা কী করেন!

বগুড়ার অন্যতম ধান উৎপাদনকারী এলাকা হিসেবে পরিচিত শেরপুরের ৩০৭টি হাস্কিং মিলের মধ্যে ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত চুক্তিবদ্ধ হয়েছে; বিপুল সংখ্যক মিল এখনও চুক্তির বাইরে রয়েছে। ওই উপজেলার ভাই ভাই রাইস মিলের মালিক আক্তার হোসেন খাদ্য অধিদপ্তরের সঙ্গে চাল সরবরাহের চুক্তি করেননি। তিনি বলেন, সরকার বেশি দামে চাল কিনে সরকারকে দিলে লোকসান গুনতে হবে। তাই আমি এখনো কোনো চুক্তি করিনি। সরকার উৎসে ট্যাক্স মওকুফ করলে আমি চুক্তি করব।

জেলা সহকারী খাদ্য নিয়ন্ত্রক মনিরুল ইসলাম জানান, সরকার হিসাব-নিকাশ করে ধান-চালের দাম নির্ধারণ করেছে। মিলারদের লোকসান হওয়ার কথা নয়। তবে তারা চাল দিতে নারাজ।

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কাজী সাইফুদ্দিন জানান, সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী যারা চাল দিতে রাজি নয় তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *