খেলাপি ঋণ আদায়ে ব্যাংকের অনীহা!

0

চট্টগ্রামে পাঁচ বছর ধরে এক কোটি টাকার খেলাপি মামলার কোনো খবর রাখেনি জনতা ব্যাংক। আইন অনুযায়ী ১২০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি হওয়া মামলার বিচার ৩০ বছর ধরে চলে আসছে। খেলাপি ঋণ আদায়ে ব্যাংক কর্মকর্তাদের উদাসীনতা দেখে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছেন আদালত। আদালতের নির্দেশে জনতা ব্যাংক কর্তৃপক্ষ এক সঙ্গে ৫০ জন আইন কর্মকর্তা (আইনজীবী) নিয়োগ দিতে বাধ্য হচ্ছে।

চট্টগ্রাম অর্থ আদালতে খেলাপি ঋণের প্রায় পাঁচ হাজার মামলা রয়েছে। সবচেয়ে করুণ দশা হলো জনতা ব্যাংকের মামলা। ১০ থেকে ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে বিচারাধীন মামলার বেশির ভাগই জনতা ব্যাংকের!

অর্থ আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. রেজাউল করিম বলেন, মামলার সংখ্যার তুলনায় আইনজীবীর সংখ্যা কম। ব্যাংকের এমন অনীহার কারণে খেলাপিরা ঋণ পরিশোধ না করে পার পেয়ে যাচ্ছেন।

জনতা ব্যাংক লালদীঘি পূর্ব কর্পোরেট শাখার উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. নুরুল মোস্তফা বলেন, খেলাপির মামলার তুলনায় আদালতের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তার সংখ্যা অপ্রতুল। তাই অনেক সময় দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সঠিক সময়ে ব্যাংকের নিয়োগকৃত আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ করে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারছেন না। তাই মামলা চালু ও ঋণ আদায়ে একটু জটিলতা দেখা দিয়েছে।

সাম্প্রতিক আদেশে, আদালত উল্লেখ করেছে যে জনতা ব্যাংক লালদীঘি পূর্ব কর্পোরেট শাখা ১৯৯২ সালের ১৯ এপ্রিল ১ কোটি ২ লাখ ১৪ হাজার ৯৩৩ টাকার খেলাপি ঋণ আদায়ের জন্য একটি মামলা করে। দীর্ঘ ৩০ বছর অতিবাহিত হলেও খেলাপির কাছ থেকে ঋণ আদায় না হওয়ায় মামলা চলছে। মামলার ফাইলে খেলাপির উপস্থিতি বা তার কাছ থেকে ডিক্রিকৃত টাকা আদায়ের কোনো প্রমাণ নেই। খেলাপি শেখ আব্দুল মমিন খেলাপির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন এবং ২০০৭ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেন। যদিও ২০১০ সালের ১০ মার্চ হাইকোর্ট স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করেন। রিট মামলায় বলা হয়, জনতা ব্যাংক, যেটি ২০১০ থেকে২৯ আগস্ট, ২০১৬ পর্যন্ত ডিক্রি পেয়েছে, খেলাপি ঋণ আদায়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। ব্যাংকের অনুরোধে ২০১৬ সালের ২৯শে আগস্ট মামলাটি পুনরায় চালু করা হলেও দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে খেলাপিদের কাছ থেকে খেলাপি ঋণ আদায়ে কোনো আইনি পদক্ষেপ নেয়নি জনতা ব্যাংক।

আদালতের নির্দেশে জনতা ব্যাংকের টনক নড়েছে। ২৮ নভেম্বর, ২০২১-এ, ব্যাঙ্কের মানবসম্পদ বিভাগ ৫০ জন সিনিয়র আইনি অফিসার নিয়োগের সুপারিশ করেছিল। ওই বছরের ২৭ ডিসেম্বর ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ এটি অনুমোদন করে। অনুমোদিত প্যানেল আইনজীবীদের তালিকা শিগগিরই সার্কুলার আকারে জারি করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *