বন্ধুদের সঙ্গে বেড়াতে গিয়ে অপহরণ, গ্রেফতার ৩
নারায়ণগঞ্জ থেকে কুমিল্লা যাওয়ার পথে রমজান হোসেন (৩৫) নামে এক ব্যক্তিকে তার বন্ধুরা অপহরণ করেছে। এরপর তার হাত-পা গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করা হয়। রমজানের স্ত্রীকে মোবাইল ফোনে ভিডিও কলের মাধ্যমে মুক্তিপণ দাবি করে নির্যাতনের দৃশ্য দেখানো হয়।
অপহরণকারীর স্ত্রী ঘটনাটি জানালে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) অপহরণকারী চক্রের তিন সদস্যকে আটক করে অপহরণকারীকে উদ্ধার করে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন, জেলার আদর্শ সদর উপজেলার গাজীপুর গ্রামের মোতাহার হোসেন (৩০) ও সাইমুন (১৯) এবং রাজমঙ্গলপুর গ্রামের দেলোয়ার হোসেন (৪১)।
এ ঘটনায় শনিবার মামলা দায়ের করে গ্রেফতারকৃত তিনজনকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। কুমিল্লা জেলা সদরের কাছে বিবির বাজার এলাকায় এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। র্যাব-১১ কুমিল্লার কোম্পানি কমান্ডার মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
র্যাব জানায়, লিজা বেগম (৩৪) নামে এক নারী ১৩ এপ্রিল লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন এবং ১১ এপ্রিল কুমিল্লার বিবি বাজার এলাকায় তার স্বামী রমজানের বন্ধু রাকিবের বাড়িতে বেড়াতে যান। একই দিন সন্ধ্যা ৬টার পর তিনি , তার স্বামীর মোবাইল ফোন নম্বর বন্দ ছিল। রাকিব ওই নারীকে জানান, সন্ধ্যা পর্যন্ত রমজান তাদের বাড়িতে পৌঁছায়নি। পরে একটি নম্বর থেকে ভিডিও কলে তার স্বামীকে হাত-পা বেঁধে মারধরের দৃশ্য দেখানো হয় এবং ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়।
অভিযোগ পেয়ে শুক্রবার তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার বিবির বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে অপহরণ চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় র্যাব। পরে তাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কোতয়ালী মডেল থানাধীন জগন্নাথপুর ইউনিয়নের গাজীপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে রমজানকে উদ্ধার করে। র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে শাহীন ওরফে তারকা শাহিন (৪০) ও তার সহযোগী রুবেল (৩৫), জাকির (৪১) অপহরণকারীর হাত-পা গাছের সঙ্গে বেঁধে পালিয়ে যায়।
উদ্ধারের পর রমজান জানান, গত ১১ এপ্রিল কুমিল্লার বিবির বাজার এলাকায় বন্ধু রাকিবের বাড়িতে বেড়াতে আসেন। সেখানে থাকা রাকিবের বন্ধু শাহীন ও রুবেলের সঙ্গে তার আগে থেকেই পরিচয় ছিল। পূর্ব পরিচিতি সূত্রে জানা যায়, শাহিনের সাথে বিবির বাজার সীমান্ত এলাকায় বেড়াতে যায়। ইফতার শেষে তিনি বের হলে শাহীন ও তার সহযোগীরা তাকে দারাতে বলেন, এভাবে চলে যেতে পারবেন না। এখান থেকে বের হতে হলে মুক্তিপণ দিতে হবে। তিনি তার হাত-পা বেঁধে তাকে মারধর করেন এবং নির্যাতনের ভিডিও মোবাইল ফোনে রেকর্ড করে মুক্তিপণ দাবি করে পরিবারের কাছে পাঠিয়ে দেন।
র্যাব-১১ কুমিল্লার কোম্পানি কমান্ডার মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন বলেন, শনিবার কোতয়ালী মডেল থানায় মামলা দায়েরের পর আসামিদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এই চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে এ ধরনের অপকর্ম করে আসছে। চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।