নির্বাচন নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য শুনে অবাক হয়েছি: ফখরুল
জাতীয় নির্বাচন নিয়ে গতকাল সংসদে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে ‘বিস্মিত’ হয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শুক্রবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিব এ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী গতকালও বলেছেন, নির্বাচনের কথা বলা হচ্ছে কেন, প্রশ্ন করা হচ্ছে কেন তিনি অবাক? তিনি (প্রধানমন্ত্রী) যা বললেন তা শুনে আমরা বিস্মিত।
ফখরুল বলেন, বাংলাদেশের সব মানুষ জানে বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন নেই, ভোট নেই, বাংলাদেশের মানুষ ভোট দিতে পারে না।
তাদের অধীনে দুটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল… একটি ১৪ সালে, আরেকটি ১৮ সালে। মানুষ দেখেছে কি হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন কেন? সাধারণ মানুষকে জিজ্ঞাসা করুন।
মানুষকে বোকা বানানোর জন্য আপনি সবসময় যা খুশি বলতে ধাকেন। আর আপনার মতে একদল মিডিয়া আছে, তারা সারাদিন এটা (প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ) প্রচার করে। আমরা বলতে চাই, এখনও সময় আছে, এই সরকার বুদ্ধিতে আসুক, তাদের প্রজ্ঞা ফুটে উঠুক। তারা জনগণের কল্যাণের কথা চিন্তা করবে, জনগণের অধিকারের কথা চিন্তা করবে, এসব কিছু বাদ দিয়ে তারা ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য কাজ করবে যাতে তারা ভোট দিয়ে সংসদ নির্বাচন করে তাদের সরকার গঠন করতে পারে।
তা না হলে বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে, বাঁচানো যাবে না, ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হবে।
গতকাল জাতীয় সংসদের ২৪তম অধিবেশন শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বর্তমান সরকারের আমলে বাংলাদেশে সব নির্বাচনই স্বচ্ছ ও শান্তিপূর্ণ হয়েছে। এ দেশে ভালো নির্বাচন কবে হবে? কোন দেশে গেছেন? বিরোধী দলগুলো এখনো অনেক দেশের নির্বাচন মেনে নেয়নি। দেশ যখন সুষ্ঠুভাবে এগোচ্ছে তখন নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন কেন?
ফখরুল বলেন, ২০১৮ সালের নির্বাচন সংক্রান্ত ৫০টি মামলা এখনও হাইকোর্টে রয়েছে, যার বিচার হয়নি এবং কোনো আদেশও দেওয়া হয়নি। তাহলে পুরো সিস্টেমটা কি? পুরো ব্যবস্থা হলো একটি দলকে নির্বাচন করা, পুরো ব্যবস্থা হলো একটি দলকে সব ব্যবস্থা দেওয়া, যাতে তারা আবার ক্ষমতায় থাকতে পারে।
‘এ প্রেক্ষাপটে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন আসছে। নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকার হলেই এই নির্বাচনে যাওয়া সম্ভব হবে বলে আমরা স্পষ্ট বলেছি। আমরা অতীত অভিজ্ঞতায় দেখেছি, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে সে নির্বাচন কখনোই সুষ্ঠু হতে পারে না। সেজন্য আমরা সব রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধ করেছি এবং একটি পয়েন্ট দিয়েছি, যেখানে স্পষ্ট বলা আছে নির্বাচনের আগে এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে, নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা দিতে হবে, সংসদ ভেঙে দিতে হবে।
এ সময় সরকার পতনের দাবিতে যুগপৎ আন্দোলনের পরবর্তী কর্মসূচি ১৮ সেপ্টেম্বর ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব ঢাকা ও জামালপুরসহ বিভিন্ন স্থানে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের ওপর সরকারের নিপীড়নের কথাও তুলে ধরেন বিএনপির মহাসচিব।
নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলর আবদুস সালাম, কেন্দ্রীয় নেতা খায়রুল কবির খোকন, আবদুস সালাম আজাদ, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী, আবদুস সাত্তার পাটোয়ারী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।