ছাত্রলীগ নেতাদের পেটানো সেই এডিসি হারুনকে এপিবিএনে বদলি

0

থানার ভেতরে দুই ছাত্রলীগ নেতাকে মারধরের ঘটনায় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত উপ-কমিশনার হারুন অর রশিদকে রমনা বিভাগ থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তাকে এপিবিএনে বদলি করা হয়েছে। ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে মহানগর পুলিশ।

ছাত্রলীগ নেতাদের মারধরের ঘটনায় এডিসি হারুন অর রশিদকে প্রথমে ডিএমপির রমনা জোন থেকে পুলিশের দাঙ্গা দমন বিভাগে বদলি করা হয়।

ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স শাখার উপকমিশনার মো. ফারুক হোসেন এ তথ্য জানান।

গত শনিবার রাতে এডিসি হারুন অর রশিদের নেতৃত্বে পুলিশ শাহবাগ থানায় নিয়ে ছাত্রলীগের দুই নেতাকে মারধর করে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। মারধরে আহত দুই নেতা হলেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও ফজলুল হক হলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন নাইম এবং ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় বৈজ্ঞানিক বিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ হলের সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহমেদ মুনিম। এদের মধ্যে গুরুতর আহত নাইম এখনো রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

গতকাল ঘটনার বর্ণনা দিয়ে নাঈম বলেন, ‘শনিবার রাতে আমি ও মুনিম শাহবাগের বারডেম হাসপাতাল হয়ে ক্যাম্পাসের দিকে আসছিলাম। আমরা বারডেম হাসপাতালের সামনে সভাপতি এপিএস আজিজুল হক মামুন ভাইকে দেখি। আমরা নেমে আসতেই মামুন ভাই লিফট নিয়ে কার্ডিওলজি বিভাগের সামনে গেলেন। পাঁচ-সাত মিনিট পর দেখলাম মামুন ভাই আর এডিসি হারুনের মধ্যে কথা হচ্ছে।

আমি এবং মুনিম ঘটনাটি সমাধানের চেষ্টা করি। এটা নিষ্পত্তি হয়. কিছুক্ষণ পর এডিসি হারুন ১০-১৫ জন পুলিশকে ডেকে নিয়ে আসেন। তারা মামুন ভাই, মুনিম ও আমার ওপর হামলা চালায়। সেখান থেকে মুনিমকে শাহবাগ থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।

‘নাঈম বলেন, “ঘটনার পাঁচ-সাত মিনিট পর আমি শাহবাগ থানায় যাই। থানায় প্রবেশ করলে এডিসি হারুন উপস্থিত পুলিশ সদস্যদের দেখিয়ে আমাকে বলেন, ‘এটা আমাকে মারছে। এবার তোরা মার!’ তারপর ১০-১২ জন। এডিসি হারুনসহ ১৫ জন এসআই ও কনস্টেবল থানার ওসির কক্ষে আমাকে নির্মমভাবে নির্যাতন করে। তারা আমাকে বুট দিয়ে লাথি মেরে,, ঘুষি মেরে মেঝেতে পড়ে যায়। এরপর কী হয়েছিল মনে নেই।”

নাইম বলেন, “এডিসি হারুন সরাসরি আমার গায়ে হাত তোলেন, তার রিভলভারের বাট দিয়ে আমার ঠোঁট কুঁচকে দেন, প্রায় ১০-১৫ জন সন্ত্রাসী পুলিশ আমাকে বুট দিয়ে আঘাত করে, আমি ভেবেছিলাম আমি বাঁচব না।”

পুলিশের একটি সূত্র জানায়, শাহবাগের একটি হাসপাতালে এডিসি হারুনের সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছিলেন এক নারী পুলিশ কর্মকর্তা। ওই নারী কর্মকর্তার স্বামী ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের নিয়ে সেখানে হাজির হন। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এরপর সেখান থেকে চলে যান এডিসি হারুন। পরে পুলিশ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের শাহবাগ থানায় ডেকে নিয়ে মারধর করে।

খবর পেয়ে রাতেই শাহবাগ থানার সামনে জড়ো হন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। মধ্যরাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও পুলিশ কর্মকর্তারা থানায় যান।

ঘটনার বিষয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও এডিসি হারুনের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কল রিসিভ করেননি। এ বিষয়ে রমনার ডিসি ও শাহবাগ থানার ওসিকে পাওয়া যায়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *