কৃষি আবহাওয়া তথ্য বোর্ডে পাখির বাসা

0

কৃষকদের বৃষ্টি, তাপমাত্রা, আর্দ্রতা, বাতাসের প্রবাহ, আলোর সময় সম্পর্কিত তথ্য দিতে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন পরিষদে কৃষি আবহাওয়া পূর্বাভাস বোর্ড গঠন করা হয়েছে।

অবহেলা ও অযত্নে এসব বোর্ড দীর্ঘদিন ধরে অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে। কোথাও কোথাও রেইন গেজ মিটার ও সোলার প্যানেল চুরি হয়েছে। কয়েকটিতে রয়েছে পাখির বাসা।

কৃষকরা জানান, ইউনিয়ন পরিষদের আবহাওয়া বোর্ডের চাকা কখনোই ঘুরেনি। তারা কোনো তথ্য পায়নি। প্রতিবছর ফসলের ক্ষতি হলেও কাজে আসে না বোর্ড। তারা বোর্ড সংস্কারের দাবি জানান।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, কৃষি সম্প্রসারণ ও বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর ২০১৮-১৯ অর্থবছরে কৃষি আবহাওয়া তথ্য ব্যবস্থার উন্নয়ন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে ফসল রক্ষা এবং সঠিক সময়ে চাষাবাদের আগাম তথ্য প্রদানের লক্ষ্যে এই প্রকল্প গ্রহণ করে।

বৃহস্পতিবার যদুবয়রা ইউনিয়ন পরিষদের ভবনের দেয়ালে বোর্ড ঝুলতে দেখা যায়। বোর্ডের একপাশে পোস্টার আটকান। বোর্ড তথ্য আপডেট করা হয় না. নীচে ডানদিকে কৃষি কর্মকর্তাদের ফোন নম্বর থাকতে হবে কিন্তু সেখানে নেই। একই চিত্র দেখা গেছে চাপড়া, নন্দনালপুর ও জগন্নাথপুর ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে।

কৃষক আমিরুল ইসলাম বলেন, পরিষদের আবহাওয়া তথ্য বোর্ড অকেজো। ওখান থেকে আর কখনো শুনিনি। এটি চালু হলে কৃষকরা উপকৃত হতেন।

যদুবয়রা ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মোঃ রেজাউল ইসলাম জানান, তিন-চার বছর আগে থেকে বোর্ডটি চালু ছিল না। এমনকি কৃষি কর্মকর্তাদের সঙ্গেও বৈঠক করেন না তারা। তিনি উপজেলা সভায় বিষয়টি তুলে ধরবেন।

চাপড়া ইউনিয়নের ভাড়া গ্রামের কৃষক আব্দুল আজিজ জানান, প্রতিবছর ঝড়ের কারণে তাদের ফসলের ক্ষতি হয়। কিন্তু পরিষদ থেকে তারা আগাম তথ্য পান না। তারা টেলিভিশন দেখে আবহাওয়ার তথ্য পান।

ইউপি চেয়ারম্যান এনামুল হক মঞ্জু দাবি করেছেন, কৃষি কর্মকর্তারা কখনোই আবহাওয়া তথ্য বোর্ডের তথ্য হালনাগাদ করেননি। তিনি বলেন, এটি নিয়মিত ব্যবহার না করায় সেখানে পাখিরা বাসা বেঁধেছে। যন্ত্রপাতিও চুরি হয়েছে। তিনি একটি আধুনিক তথ্য সেবা বোর্ড চালুর দাবি জানান।

নন্দনালপুর ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মুস্তাফিজুর রহমান জানান, তিনি সব সময় মাঠে থাকেন। ইনস্টলেশনের পর থেকে ডিসপ্লে সমস্যা। রেইন গেজ মিটারের সৌরবিদ্যুতের প্যানেলটিও শেষ হয়ে গেছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দেবাশীষ কুমার দাস জানান, কৃষকদের আবহাওয়ার আগাম তথ্য দিতে ১১টি ইউনিয়নের মধ্যে ১০টি পরিষদ ভবনে তথ্য বোর্ড স্থাপন করা হয়েছে। বিভিন্ন কারণে সবই অকেজো। কিছু যন্ত্রাংশ চুরির ঘটনায় জিডি।

কৃষি কর্মকর্তা বলেন, তথ্য বোর্ডগুলো ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে বসানো হয়েছে তাই কোনো সুফল পাওয়া যায়নি। আধুনিক পদ্ধতিতে বোর্ড স্থাপন করলে কৃষক ও কৃষি কর্মকর্তারা উপকৃত হতেন। তিনি বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানান।

তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান ইউএনও বিতন কুমার মন্ডল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *