চলতি মাসেই প্রত্যাবাসন শুরুর চেষ্টা।মিয়ানমারে যেতে পারে রোহিঙ্গা প্রতিনিধি দল

0

প্রত্যাবাসনের সহায়ক পরিবেশ তৈরি হয়েছে কিনা তা দেখতে কক্সবাজার থেকে ২০ সদস্যের রোহিঙ্গা প্রতিনিধিদল চলতি সপ্তাহে মিয়ানমারে যেতে পারে। মঙ্গলবার ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বৈঠক করতে আসেন। খুরশেদ আলমের সঙ্গে প্রায় ৪৫ মিনিট বৈঠক করেন ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব রিয়ার অ্যাডমিরাল (বৈঠক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করছেন। খুরশেদ আলম বলেন, চীনের রাষ্ট্রদূত রোহিঙ্গাদের নিয়ে আলোচনা করতে এসেছেন। তবে এর বেশি কিছু বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন তিনি।

বৈঠক সূত্র জানায়, চীনের মধ্যস্থতায় চলতি মাসের মধ্যে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন শুরু করার চেষ্টা চলছে। এ কারণে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের আগাম পাঠানোর প্রস্তাব দেয় বাংলাদেশ। দীর্ঘদিন ধরে এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করা হলেও এখন মিয়ানমার রাজি হয়েছে। বৃহস্পতিবারের মধ্যে প্রতিনিধি দল রাখাইনে পাঠানোর চেষ্টা চলছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বর্ষা মৌসুম শুরুর আগেই রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন শুরু করতে চায় মিয়ানমার। বাংলাদেশও দ্রুত প্রত্যাবাসন শুরু করতে চায়। উভয় দেশ এ বিষয়ে একমত।

প্রথম ধাপে ১,৪০০ প্রি-স্ক্রিন করা রোহিঙ্গার যাওয়ার কথা রয়েছে। তবে শেষ পর্যন্ত প্রত্যাবাসন সফল হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে এই কর্মকর্তার।

প্রসঙ্গত, চীনের মধ্যস্থতায় দুইবার রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। সব ধরনের প্রস্তুতি থাকলেও শেষ মুহূর্তে দুইবার রোহিঙ্গাদের অনীহার কারণে প্রত্যাবাসন সম্ভব হয়নি।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই কর্মকর্তা বলেন, আগের দুটি অভিজ্ঞতা থেকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরুর আগে কোনো পক্ষই আনুষ্ঠানিকভাবে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চায় না। শেষ পর্যন্ত রোহিঙ্গা প্রতিনিধিদল মিয়ানমারে পর্যবেক্ষণে যাবে কি না তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। পুরো বিষয়টি নির্ভর করছে রোহিঙ্গাদের ওপর। মিয়ানমারকে তাদের আস্থায় আনতে হবে। বাংলাদেশ মিয়ানমারকে সেই বার্তা দিয়েছে।

রাখাইনে কতটা অবকাঠামো তৈরি হয়েছে, রোহিঙ্গাদের ফেরার সহায়ক পরিবেশ তৈরি হয়েছে কি না, তা নিজ চোখে দেখবেন রোহিঙ্গা প্রতিনিধি দল। সফর থেকে ফেরার পর প্রতিনিধি দল রোহিঙ্গাদের সঙ্গে আলোচনা ও পরামর্শ করবে। তারপর সিদ্ধান্ত নিন। ফলে চলতি মাসের মধ্যে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হবে কিনা তা নিশ্চিত করা কঠিন।

জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা মামলার তারিখ ২৪ মে রয়েছে। এই দিনে মিয়ানমার পাল্টা স্মারক বা জবাব দেবে। এরপরে থেকে অন্য কোনো বিষয়ে আবেদন না করা হলে পরবর্তী তারিখ থেকে মামলার শুনানি হবে।

এ পর্যন্ত বাংলাদেশ প্রায় ৮ লাখ ৩০ হাজার রোহিঙ্গার সম্পূর্ণ তথ্য মিয়ানমারকে দিয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ৭-৮ শতাংশ অর্থাৎ প্রায় ৭০,০০০ রোহিঙ্গাকে দেশটি যাচাই করেছে। এই ৭০ হাজার রোহিঙ্গার মধ্যে ৫২ শতাংশের জন্য সবুজ সংকেত দিয়েছে কিছু রোহিঙ্গাকে মিয়ানমার সন্ত্রাসী হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *