আচরণবিধি লঙ্ঘন রোধে কঠোর নির্দেশ।চার সিটির স্থানীয় প্রশাসনকে ইসির চিঠি
রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল ও সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আচরণবিধি মেনে স্থানীয় প্রশাসনকে কঠোর হতে নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এই চার সিটির পুলিশ কমিশনার, ডেপুটি কমিশনার (ডিসি) এবং পুলিশ সুপারদের (এসপি) বলা হয়েছে যে কোনো মূল্যে আচরণবিধি লঙ্ঘনের সব কার্যক্রম ঠেকাতে।
আগামী ১২ জুন খুলনা, বরিশাল এবং ২১ জুন রাজশাহী, সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন। এই চার সিটি নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় প্রার্থীদের মধ্যে শোডাউন ঠেকাতে ইসি এসব বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছে বলে জানা গেছে।
এদিকে ২৭ এপ্রিল গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আজমত উল্লা খানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার আলমগীর। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনে এসে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
ব্যাখ্যা সন্তোষজনক না হলে শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।
নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘন ঠেকাতে এর আগে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদককে চিঠি দিয়েছে ইসি। মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশনের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় প্রশাসন, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার এবং খুলনা, বরিশাল, রাজশাহী ও সিলেট সিটি করপোরেশনের জেলা কমিশনারদের লিখিত নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দেওয়ার সময় কোনো কোনো প্রার্থীর মিছিল, মোটরসাইকেল মিছিল বা শোডাউনের প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে সিটি করপোরেশন (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালা উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়েছে, মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দেওয়ার সময় কোনো মিছিল বা শোডাউন করা যাবে না এবং পাঁচের বেশি সমর্থকসহ প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দিতে পারবেন না। কোনো ধরনের মিছিল বা শোডাউন করতে দেওয়া হবে না। কোনো প্রার্থী বা তার পক্ষে কোনো রাজনৈতিক দল, অন্য কোনো ব্যক্তি, সংগঠন বা প্রতিষ্ঠান- কোনো ট্রাক, বাস, মোটরসাইকেল, নৌকা, ট্রেন বা অন্য কোনো যান্ত্রিক যান নিয়ে মিছিল বা মশাল মিছিল বা অন্য কোনো ধরনের মিছিল করতে পারবে না। .
শাস্তির মুখে পড়তে পারেন আজমত
আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে সন্তোষজনক ব্যাখ্যা না দিলে মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লা খানের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর। গতকাল নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি আরও বলেন, আজমত উল্লা খান মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন বলে গণমাধ্যমের ফুটেজ দেখে কমিশনের কাছে প্রতীয়মান হয়েছে। এজন্য আগামী ৭ মে তাকে নির্বাচন ভবনে উপস্থিত হয়ে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে। তিনি সন্তোষজনক ব্যাখ্যা দিলে সমস্যা নেই। তবে ব্যাখ্যা সন্তোষজনক না হলে তাকে শাস্তি দেওয়া হবে। শাস্তি নির্ভর করবে অপরাধের গুরুতরতার ওপর। কমিশনার উল্লেখ করেন, আইনে তিরস্কার, জেল-জরিমানা ও প্রার্থিতা অযোগ্য করার বিধান রয়েছে।
মন্ত্রী-এমপিদের আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে কমিশনার বলেন, অনেকেই হয়তো আইন সম্পর্কে অবগত নন। সে জন্য মন্ত্রিপরিষদের মাধ্যমে জানাতে চিঠি দিয়েছে কমিশন। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সবাইকে নিয়ম মেনে চলতে হবে। আচরণবিধি না মানা হলে রিটার্নিং কর্মকর্তা, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা ব্যবস্থা নেবেন। এরপর প্রার্থিতা বাতিলের ক্ষমতাও কমিশনের রয়েছে।