ডিজেল বিক্রি প্রতিদিন ২০০ টন বেড়েছে
মে মাসের তুলনায় জুলাই মাসে প্রতিদিন গড়ে ২০০টন ডিজেল বিক্রি বেড়েছে। মে মাসে প্রতিদিন গড়ে ১৩ হাজার ৪০০ টন ডিজেল বিক্রি হয়েছে। আর চলতি মাসের ২৬ তারিখ পর্যন্ত প্রতিদিন গড়ে ১৩ হাজার ৬০৭ টন ডিজেল বিক্রি হয়েছে।
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) এ তথ্য জানিয়েছে। লোডশেডিংয়ের কারণে জেনারেটরের বিদ্যুৎ উৎপাদন বেড়েছে, সম্প্রতি ডিজেল বিক্রিও বেড়েছে।
বিপিসির তথ্য অনুযায়ী, প্রতি বছর ১ থেকে ২৬ জুলাই পর্যন্ত ৩ লাখ ৫৩ হাজার ৭৮২ টন ডিজেল বিক্রি হয়েছে। প্রতিদিন গড় বিক্রি ১৩ হাজার ৬০৭ টন। প্রতিদিন গড়ে ১ হাজার ৩১৪ টন অকটেন বিক্রি হচ্ছে।
দেশে তেল মজুদ ক্ষমতা ১৩ লাখ ৮ হাজার ৪৭ টন। পরিশোধিত তেল সংরক্ষণের ক্ষমতা ৯ লাখ ৪০ হাজার ৪৩৫ টন। গতকাল বুধবার পর্যন্ত তেল মজুদ রয়েছে ৬ লাখ ৩১ হাজার ৩৪৬ টন। এর মধ্যে ডিজেল ৪ লাখ ৩৩ হাজার ২৯৬ টন, কেরোসিন ১৪ হাজার ১৭০ টন, পেট্রোল ২১ হাজার ৮৮৫ টন, অকটেন ১৩ হাজার ৯৪৪ টন, ফার্নেস অয়েল ৮৫ হাজার ৪০ টন, জেট ফুয়েল ৬৩ হাজার ১১ টন।
প্রতিদিনের হিসাবে ডিজেল স্টক প্রায় ৩২ দিন। অকটেনের স্টক ৯ দিনের, জেট-এ-১-এর স্টক রয়েছে ৪৪ দিনের, পেট্রোল ১৫ দিনের এবং ফার্নেস অয়েলের ৩২ দিনের স্টক রয়েছে। যাইহোক, প্রায় ১০ শতাংশ তেল সবসময় জলাধারের নীচে থাকে। বাংলাদেশ সব পেট্রোল উৎপাদন করে। বাংলাদেশ প্রায় ৪০% অকটেন উৎপাদন করে।
সরকারের জ্বালানি নীতি অনুসারে, জ্বালানি তেলের মজুদ ৬০ দিন পর্যন্ত গড়ে তোলার কথা। কিন্তু বর্তমানে দেশে ৪৫ দিনের স্টোরেজ ক্ষমতা রয়েছে। জ্বালানি তেলের বার্ষিক চাহিদা ৬৫ লাখ টন, যার ৭০ শতাংশ ডিজেল।
বিপিসি তেল শোধনাগার ইস্টার্ন রিফাইনারি বিপণন স্থাপনা ব্যতীত, পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা অয়েল কোম্পানি চট্টগ্রাম পতেঙ্গার প্রধান স্থাপনা, মংলা তেল স্থাপনা, গোদানীল, ফতুল্লা, ইমার্জেন্সি ডিপো ঢাকা, দৌলতপুর, বাঘাবাড়ী, পার্বতীপুর, সিলেট, শ্রীমঙ্গলবাজার, শ্রীমঙ্গলবাজার, মোংলা। , ঝালকাঠি, চাঁদপুর, ভৈরব, আশুগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, রাজশাহী, হরিয়ান, রংপুর, নাটোর, চিলমারী ডিপো ছাড়াও তেল বিক্রির মজুদ রয়েছে।
বিপিসির চেয়ারম্যান এবিএম আজাদ গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, দেশে ডিজেল, অকটেন ও জেট ফুয়েলের কোনো ঘাটতি নেই। আগামী ছয় মাসের জন্য জ্বালানি তেল আমদানি নিশ্চিত করা হয়েছে। তিনি বলেন, বৈশ্বিক পরিস্থিতির কারণে সবাই জ্বালানি সংকট মোকাবেলার চেষ্টা করছে। রাজধানীসহ সারাদেশে পেট্রোল পাম্পের সরবরাহ স্বাভাবিক ও স্থিতিশীল রয়েছে। বিপিসি চেয়ারম্যান বলেন, জ্বালানি তেল আমদানির জন্য ব্যাংক লেটার অব ক্রেডিট (এলসি) খোলার সমস্যা আপাতত সমাধান করা হয়েছে।
বিপিসি জানিয়েছে, দেশের তেলের মজুদ ধারণক্ষমতার চেয়ে কম হওয়া নিয়ে কোনো উদ্বেগ নেই। কোম্পানিটি বলছে, আগামী কয়েকদিনের মধ্যে ৫০ হাজার টন তেল ২টি জাহাজে দেশে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বিপিসি ইতোমধ্যে ৯টি জাহাজ থেকে ২ লাখ ৫৫ হাজার টন ডিজেল, দুটি জাহাজ থেকে ৪৩ হাজার টন জেট-এ-১, একটি জাহাজ থেকে ২৪ হাজার ৬৭৭ টন অকটেন এবং দুটি জাহাজ থেকে ৫৩ হাজার ৩৫৮ টন ফার্নেস অয়েল পেয়েছে।
আগস্ট মাসে ৮টি জাহাজে ২ লাখ ১৮ হাজার টন ডিজেল, একটি জাহাজে ২৫ হাজার টন জেট-এ-১, একটি জাহাজে ২৫ হাজার টন অকটেন আসবে।
বিপিসি জানিয়েছে, আগামী ৬ মাসের আমদানি পরিকল্পনা অনুযায়ী জ্বালানি তেল বাংলাদেশে আসবে। এর ৫০% জি-টু-জি চুক্তির মাধ্যমে এবং বাকি ৫০% খোলা টেন্ডারের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয়েছিল।
এদিকে দেশে তেলের মজুদ কমতে পারে এমন ধারণায় বুধবার সকাল থেকেই তেল কিনতে বাধ্য হচ্ছে পেট্রোল পাম্পগুলো। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার পাম্পগুলোতে গতকাল বাইক ও গাড়ির দীর্ঘ সারি দেখা গেছে। মালিবাগের একটি পাম্পে বাইকে তেল কিনতে আসা মকবুল হোসেন বলেন, শুনেছি দেশে তেলের মজুদ কমছে। তাই বেশি তেল কিনতে আগে পাম্পে আসি।