পদ্মা সেতুর প্রভাব: লঞ্চের কেবিন-ডেকে যাত্রী সংখ্যা কমেছে।
শনিবার সকালে পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরদিন রোববার সকাল ৮টা থেকে পদ্মা সেতু যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়। আজ সকাল থেকেই বরিশালের নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে ঢাকাগামী যাত্রীদের ভিড় দেখা যায়। আর ঠিক উল্টো চিত্র দেখা যায় লঞ্চ ডকে। রোববার রাতে বরিশাল সমুদ্রবন্দর ঘুরে দেখা যায়, পন্টুনে যাত্রীদের ভিড় আর নেই।
ঢাকা-বরিশাল নৌপথের যাত্রীরা দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে আসছেন স্থানীয় প্রভাবশালী মহলের মাধ্যমে তদবির ছাড়া এ রুটে লঞ্চের কেবিন বা সোফা মিলছে না। এমনকি বিকেলে ডেকে বসতে হতো। কিন্তু রোববার বরিশাল সমুদ্রবন্দরের চিত্র ছিল উল্টো।
রোববার বরিশাল সমুদ্রবন্দরে নোঙর করা ৬টি বিলাসবহুল লঞ্চের সামনে যাত্রীদের ভিড় দেখা যায়নি। বরং লঞ্চের ক্রুদের যাত্রীদের ডাকতে দেখা গেছে। এ সময় তারা কেবিন ও সোফা বিক্রির জন্য যাত্রীদের ডাকাডাকি করছিল।
বরিশাল নদীবন্দর সূত্রে জানা গেছে, রোববার ঢাকার উদ্দেশে বরিশাল ছেড়েছে ৬টি লঞ্চ। লঞ্চগুলো হলো এমভি অ্যাডভেঞ্চার ১, কুয়াকাটা২, সুন্দরবন ১১, সুরভি৭, পারাবত ১২ এবং পারাবত ৯।
একাধিক লঞ্চের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা যায়, কুয়াকাটা-২ লঞ্চের ২৫০টি কেবিনের মধ্যে ৬টি, এমভি অ্যাডভেঞ্চার ১ লঞ্চের ১৭৫টি কেবিনের মধ্যে ৮৫টি, এমভি পারাবত ১২ লঞ্চের ২৪০টি কেবিনের মধ্যে ১২০টি বিক্রি হয়েছে। এমভি সুন্দরবন ১১ লঞ্চের ২৪০টি কেবিনের মধ্যে ২১৫টি বিক্রি হয়েছে।
কুয়াকাটা-২ লঞ্চের যাত্রী মীর মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, আমি ঢাকায় ব্যবসার সুবাদে ১০ বছর ধরে ঢাকা-বরিশাল নৌ-রুটে যাতায়াত করছি। আজ মনে হচ্ছে লঞ্চের কর্মীরা যাত্রীদের কদর করছে। ঘুরে ঘুরে শুনলাম সব লঞ্চই কেবিনের যাত্রী খুঁজছে। এমন যাত্রী আগে দেখিনি।
সুন্দরবন ১১ লঞ্চের যাত্রী কবির হোসেন বলেন, আজ খুব কম যাত্রী। পুরো ডেক ভরেনি আমরা তিনজন ঢাকা যাচ্ছি। কেবিনের ভাড়াও কমিয়েছে তারা।
যাত্রী সংখ্যা কমবে কি না তা আগামী ঈদে বোঝা যাবে বলে জানান তিনি। এ সময় সাধারণত যাত্রী একটু কম থাকে। যাঁরা বলছেন যাত্রী সংখ্যা কমেছে, তাঁরা ভুল বলছেন।
বরিশাল নদী বন্দরের কর্মকর্তা ও বিআইডব্লিউটিএর যুগ্ম পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, লঞ্চে যাত্রী কমানো হয়েছে। তবে কেবিনের যাত্রীর সংখ্যা কমেছে। কেবিন ভাড়া কমানোর বিষয়ে আমাদের কিছু বলা হয়নি। তবে যাত্রী ধরে রাখতে ভাড়া কমানোর সিদ্ধান্ত নিতে পারেন মালিকরা।