ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে হামলায় ওসিসহ তিন পুলিশ সদস্য আহত
ঢাকার মোহাম্মদপুর ও নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে বিক্ষোভকারীদের হামলায় তিন পুলিশ কর্মকর্তাসহ পাঁচজন আহত হয়েছেন। এদিকে সিদ্ধিরগঞ্জের মসজিদে ইমামের বক্তৃতার সময় এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ভারতের ঘটনা ভারতে হোক, আমরা তা নিয়ে বিশৃঙ্খলা করি না। এতে উপাসকরা ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে মারধর করে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও দুজন। অন্যদিকে, ১০ মিনিটের মধ্যে কর্মসূচি শেষ করার দাবিতে মোহাম্মদপুরের ঢাকা উদ্যান এলাকায় আন্দোলনকারীদের হামলায় ওসিসহ দুই পুলিশ কর্মকর্তা আহত হয়েছেন।
পুলিশ ও সূত্র জানায়, ভারতের দুই বিজেপি নেতা হজরত মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্যের প্রতিবাদে শুক্রবার ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়। এদিকে ঢাকা উদ্যান এলাকায় ইসলামী সংগঠনের ব্যানারে কর্মসূচি চলছিল। এতে অংশ নেন প্রচুর মানুষ। একপর্যায়ে মোহাম্মদপুর থানার ওসি আবুল কালাম আজাদসহ পুলিশের একটি দল সেখানে যায়। ওসি ১০ মিনিটের মধ্যে তাদের কার্যক্রম শেষ করার অনুরোধ জানান। উত্তেজিত হয়ে পুলিশের সঙ্গে তাদের বাকবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এ ঘটনায় ওসি ও তার সহযোগী এসআই জাহাঙ্গীর আলম আহত হয়েছেন। ওসি মাথায় গুরুতর আঘাত পান। তাকে উদ্ধার করে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাকে আগারগাঁওয়ের নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মোহাম্মদপুর জোনের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মৃত্যুঞ্জয় দে সজল বলেন, শুক্রবার জুমার নামাজের পর তারা বিক্ষোভ শুরু করেন। তাদের পূর্বানুমতি ছিল না। একই সময়ে তাদের অবস্থান যান চলাচলে বিঘ্নিত করে। এ অবস্থায় দ্রুত কর্মসূচি শেষ করতে বলায় পুলিশের ওপর হামলা চালানো হয়। আহত দুজনই নিরাপদ বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
এদিকে, নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে আদমজী বিহারী ক্যাম্প এলাকার আদমজী শাহী জামে মসজিদে জুমার নামাজের পর বিক্ষোভের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন মুসল্লিরা। এ বিষয়ে কথা বলছিলেন মসজিদের ইমাম মো. একপর্যায়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এসআই সৈয়দ আজিজুল হক ভারত ইস্যুতে দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না করার অনুরোধ জানান। উপাসকরা ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁর দিকে জুতা নিক্ষেপ করে এবং তাঁকে প্রচণ্ড মারধর করে। তাকে উদ্ধার করে মসজিদ কমিটির চেয়ারম্যানের বাড়িতে নিয়ে গেলে বিক্ষুব্ধ জনতা সেখানেও হামলা চালায়। পরে স্থানীয় ৮নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও পুলিশ সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ সদর জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়। সেখান থেকে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে তাকে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। এ ঘটনায় মসজিদ কমিটির সভাপতি জয়নাল আবেদীন ও সাধারণ সম্পাদক বিল্লাল হোসেন রবিন আহত হয়েছেন। তাদের স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতি বলেন, বিষয়টি এলাকার লোকজন জানালে আমি ওসির সহায়তায় পুলিশ কর্মকর্তাকে উদ্ধার করি। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মশিউর রহমান বলেন, এটা খুবই দুঃখজনক ঘটনা। এ ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।