সয়াবিনের দাম কমানোর আশ্বাসে গুড়োবালি

0

সয়াবিন তেলের সংকট অমীমাংসিত রয়ে গেছে, যা আবারও প্রমাণিত হয়েছে। বিশ্ববাজারে ভোজ্যতেলের দরপতনের কথা উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি সম্প্রতি আশ্বস্ত করেছেন যে জুনের মূল্য সমন্বয়ের কারণে দাম বাড়বে না। তবে বৃহস্পতিবার ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট পেশের দিন লিটারে সর্বোচ্চ ৭ টাকা বাড়িয়েছে ভোজ্যতেল ব্যবসায়ীরা। ওই দিন ভোজ্যতেল আমদানিকারক ও পরিশোধনকারী কোম্পানিগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল অ্যান্ড ভেজিটেবল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের সিদ্ধান্ত অনুমোদন করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

এ প্রসঙ্গে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, ভোজ্যতেলের আমদানিকারকরা দাম আরও বাড়ানোর জন্য ট্যারিফ কমিশনের কাছে প্রস্তাব দিয়েছেন। মন্ত্রণালয় পর্যালোচনা করে দাম সমন্বয় করেছে।

দেশের বাজারে এখন সয়াবিন তেলের কোনো সংকট নেই। বেশির ভাগ তেল আগের দামেই আমদানি করা হয়। ক্রেতাদের বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষ আশায় বুক বেঁধেছেন বলে আশ্বস্ত করেন বাণিজ্যমন্ত্রী। কিন্তু তাদের আশা ভেস্তে গেল। আরেক দফা মূল্যবৃদ্ধিতে হতাশা প্রকাশ করেছেন ভোক্তারা। শুক্রবার রাজধানীর বেশ কয়েকটি খুচরা বাজারে আগের দামে সয়াবিন তেল বিক্রি করতে দেখা যায়নি।

নতুন দর অনুযায়ী খোলা সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ৫ টাকা বেড়ে ১৮৫ টাকা হয়েছে। লিটারের বোতলের দাম ৭ টাকা বেড়ে ২০৫ টাকা এবং ৫ লিটারের বোতলের দাম ১২ টাকা বেড়ে ৯৯৭ টাকা হয়েছে। তবে পাম অয়েলের দাম ১৪ টাকা কমে ১৫৮ টাকা হয়েছে। লিটার

ঈদুল ফিতরের আগে দাম বাড়ানোর কথার মধ্যেই বাজার থেকে উধাও হয়ে গেছে সয়াবিন তেল। পরে মজুদ ভাঙতে ভ্রাম্যমাণ আদালতে নামতে হয়। তবে এবার দাম বাড়ানোর ঘোষণার পর সেই চিত্র দেখা যায়নি। বাজারে পর্যাপ্ত তেল দেখা গেছে। ক্রেতারা উপযুক্ত দেখায় এমন প্রত্যেককে কল করতে পারে, যদি অল্প কয়েকজন থাকে। বোতলজাত তেলের ক্ষেত্রে আগে কেনা খোলা সয়াবিন তেলের দাম বেশি রাখা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ক্রেতারা।

কারওয়ান বাজারে আসা ইসমাইল হোসেন বলেন, তেল পাওয়া গেলেও দোকানিরা বেশি দাম নিচ্ছেন। গত সপ্তাহে ১৮০ টাকায় কিনলেও আজ (শুক্রবার) খোলা সয়াবিন কিনতে হচ্ছে ১৮৬ টাকায়। এখন এই তেল কম দামে আমদানি করা হয়েছে, তাহলে আমাদের পকেট কাটা হচ্ছে কেন?

রাজধানীর তেজকুনিপাড়া বাজারে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী আলী আহমেদ বলেন, আমি সব টিভির স্ক্রলে দেখেছি। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেছেন তেলের দাম কমবে। সবাই একটু স্বস্তি পেল। কিন্তু ঘটল উল্টোটা। ব্যবসায়ীরা মন্ত্রীর কথা শোনেন না, নাকি মন্ত্রী জনগণকে বিভ্রান্ত করেন, বোঝার দায়িত্ব তাদের। দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা এমন রসিকতা না করলেওপারতেন।

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহ-সভাপতি এসএম নাজের হোসেন বলেন, বাজেট ঘোষণার দিন সম্প্রতি সয়াবিন তেলের দাম বেড়ে যাওয়া খুবই দুঃখজনক। বাণিজ্যমন্ত্রী দাম কমার কথা বললেও বাস্তবে তার উল্টো। গত সপ্তাহে খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরাও দাম কমানোর কথা বলেছেন। কিন্তু হঠাৎ এমন কী হল যে লিটার প্রতি টাকা বাড়াতে হল? বারবার দাম বৃদ্ধির জন্য ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়হীনতাকে দায়ী করেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *