যেখানে ১৫ জন সেনা কর্মকর্তাকে রাখা হয়েছে
মানবতাবিরোধী অপরাধের তিনটি পৃথক মামলায় অভিযুক্ত পনেরো জন সেনা কর্মকর্তাকে ঢাকা সেনানিবাসের সাব-জেলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কারা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মো. জাহাঙ্গীর কবির এই তথ্য জানিয়েছেন।
আজ বুধবার (২২ অক্টোবর) সকাল ১০টার দিকে ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে কারা কর্তৃপক্ষের প্রিজন ভ্যানে করে এই সেনা কর্মকর্তাদের নিয়ে যাওয়া হয়।
এর আগে, মানবতাবিরোধী অপরাধের তিনটি পৃথক মামলায় সকাল ৭টার পর ১৫ জন সেনা কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। শুনানি শেষে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়।
বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১ সকাল সাড়ে ৮টার দিকে এই আদেশ দেন। এই ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং বিচারক মো. মহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
এদিকে, ট্রাইব্যুনালে শুনানির পর ১৫ সেনা কর্মকর্তার আইনজীবী এম সারওয়ার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন যে, তার মক্কেলদের একটি সাব-জেলে রাখা হবে।
পরবর্তীতে, অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক মো. জাহাঙ্গীর কবির বলেন, “ঢাকা সেনানিবাসের সাব-জেলে ইতিমধ্যেই প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ করা হয়েছে যেখানে ১৫ সেনা সদস্যকে রাখা হবে।”
যাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তারা হলেন- মেজর জেনারেল শেখ মো. সারওয়ার হোসেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারওয়ার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভীর মাজাহার সিদ্দিকী, ব্রিগেডিয়ার কেএম আজাদ, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন, কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান (অবসর প্রস্তুতিমূলক ছুটিতে), লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মশিউর রহমান, লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন, লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. সারওয়ার বিন কাশেম, লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ রেদোয়ানুল ইসলাম এবং মেজর মো. রাফাত-বিন-আলম।
এটা লক্ষণীয় যে, পূর্ববর্তী আওয়ামী লীগ সরকারের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে গুম ও নির্যাতনের সাথে জড়িত মানবতাবিরোধী অপরাধের দুটি মামলায় এবং জুলাইয়ের বিদ্রোহের সময় হত্যাকাণ্ডের সাথে সম্পর্কিত একটি মামলায় ট্রাইব্যুনাল গত ৮ অক্টোবর মোট ২৫ জন প্রাক্তন ও বর্তমান সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। একই দিনে এই তিনটি মামলায় ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে প্রসিকিউশন।
গত ১১ অক্টোবর বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এক সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা করে যে, ১৫ জন কর্মকর্তাকে সামরিক হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন অবসরকালীন ছুটিতে (এলপিআর) রয়েছেন।
গত ১২ অক্টোবর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঢাকা সেনানিবাসের একটি ভবনকে অস্থায়ী কারাগার ঘোষণা করে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর সেনাবাহিনী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে সেনা সদর দপ্তরের ‘এমইএস ভবন নং ৫৪’ ভবনকে অস্থায়ী কারাগার ঘোষণা করার অনুরোধ করে। সেই অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভবনটিকে অস্থায়ী কারাগার ঘোষণা করে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে।
