ঈদের আগে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম আরও উত্তাপ।ভোজ্য তেল এক প্রকার উধাও
মাজান মাসের আগে থেকেই বাজারে সব ধরনের নিত্যপণ্যের দাম সরগরম ছিল। রমজান শেষে ঈদকে ঘিরে কিছু পণ্যে আরো উত্তাপ বেড়েছে। গত চার-পাঁচ দিনে মুরগি, গরু, খাসিসহ সব ধরনের আমিষ জাতীয় খাবারের দাম বেড়েছে। মুরগির দাম বেড়েছে ১৫ থেকে ১০০ টাকা। আর গরুর মাংসের দাম বেড়েছে ৭০ টাকা। বাড়তি দামেও বিক্রি হচ্ছে কয়েক ধরনের ফল।
শনিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার, হাতিরপুল, নাখালপাড়া ও তেজতুরিবাজার ঘুরে দেখা গেছে, এসব পণ্যের দাম বেড়েছে।
ক্রেতাদের অভিযোগ, রমজানের আগেই ব্যবসায়ীরা কৌশলে একের পর এক জিনিসের দাম বাড়িয়েছে। ভোক্তাদের পকেট কাটতে ঈদকে ঘিরে নতুন কিছু জিনিসের দাম বাড়ানো হয়েছে। সরকারি তদারকির কোনো ইতিবাচক প্রভাব বাজারে নেই। বর্তমানে বাজারে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা কেজি, যা চার-পাঁচ দিন আগেও ১৫৫ থেকে ১৬৫ টাকায় কেনা যেত। ফলে প্রতি কেজি ব্রয়লারের দাম বেড়েছে ১৫ টাকা। ব্রয়লারের পাশাপাশি সোনালি ও দেশি মুরগির দামও বেড়েছে। বাজারে সোনালি জাতের মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩২০ থেকে ৩৪০ টাকা কেজি। এক সপ্তাহ আগেও এ জাতের মুরগি ৩০০ থেকে ৩২০ টাকায় পাওয়া যেত। আর এখন প্রতি কেজি দেশি মুরগি কিনতে খরচ হবে ৬০০ থেকে ৭৫০ টাকা। ৮ থেকে ১০ দিন আগে এই মুরগির দাম ছিল ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা। অর্থাৎ দেশি মুরগির দাম কেজিতে বেড়েছে ১০০ টাকা।
গরুর মাংসের দাম শুধু নিম্নবিত্ত নয় মধ্যবিত্তের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। তিন-চার দিন ধরে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে আমিষজাতীয় খাদ্যপণ্য। এক সপ্তাহ আগেও গরুর মাংসের দাম ছিল ৬৫০ টাকা। কিন্তু এখন পাড়া-মহল্লায় বিক্রি হচ্ছে ৬৮০ থেকে ৭২০ টাকায়। তবে বাজারে তা ৬৫০ থেকে ৬৮০ টাকা কম দামে পাওয়া যাচ্ছে। তবে বাজারের গুরুর মাংসের মান নিয়ে ক্রেতাদের মধ্যে রয়েছে নানা প্রশ্ন।
এরই মধ্যে সবজির বাজার মিশ্রিত হয়েছে। গাজর ও বেগুন এখনো বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। কাঁকরোল বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকায়। করোলার দামও ৬০ থেকে ৭০ টাকা। এছাড়া পটোল কিনতে ক্রেতাকে খরচ করতে হবে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা। বিক্রেতারা লাউ বিক্রি করছেন ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। তবে শসা, মরিচ ও লেবুর দাম কিছুটা কমেছে। প্রতি কেজি শসা বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকায়, যা রমজানের শুরুতে ৮০ থেকে ৯০ টাকায় ছিল। এক কেজি কাঁচা মরিচ পাওয়া যাচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকায়। ১০ থেকে ১২ দিন আগে মরিচের দাম ছিল ১০০ থেকে দেড়শ টাকা। রমজানের শুরুতে প্রতি হালি লেবুর দাম ছিল ৫০ থেকে ৬০ টাকা, যা এখন পাওয়া যাচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকায়।
গত কয়েকদিনে বাজার থেকে উধাও হয়ে গেছে সয়াবিন ও পাম অয়েল। রাজধানীর অধিকাংশ বাজারে পাম, সয়াবিন ও বোতলজাত তেল পাওয়া যাচ্ছে না। তবে কোথাও পাওয়া গেলেও প্রতি লিটারে ক্রেতাকে দিতে হচ্ছে অতিরিক্ত ২০ থেকে ৩০ টাকা। আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের দাম বাড়ছে বলেও অভিযোগ করেছেন ব্যবসায়ীরা।
দেশে বর্তমানে চিনির কোনো সংকট নেই। তবে কয়েকদিন ধরেই বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে এই খাদ্যপণ্য। খুচরা বিক্রেতারা প্রতি কেজি চিনি বিক্রি করছেন ৮০ থেকে ৭২ টাকায়। তবে অন্য মাত্রায় বেড়েছে আটার দাম। ব্যবসায়ীরা জানান, ৫০ কেজির বস্তায় দাম বেড়েছে ১০০ টাকা।