নারীসমাজ যাতে বঞ্চিত না হয়, সেদিকে সবার সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে: তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নারী সম্প্রদায় যাতে বঞ্চিত না হয় সেদিকে সকলের সজাগ দৃষ্টি রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। আগামীকাল, শনিবার আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বার্তায় তিনি এই আহ্বান জানান।

আন্তর্জাতিক নারী দিবসে বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল নারীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান এবং তাদের অব্যাহত সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করেন। তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস একটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ দিন। বিশ্বব্যাপী নারীর অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রতিষ্ঠা গুরুত্বপূর্ণ। এই দিনটি নারীর প্রতি সাধারণ শ্রদ্ধা ও প্রশংসা প্রদর্শনের জন্য সচেতনতা তৈরি করে।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘বাংলাদেশে এই দিবসের গুরুত্ব অপরিসীম। আমাদের জনসংখ্যার অর্ধেক নারী। তাই নারী সমাজের অগ্রগতি অর্জন করা গেলে জাতির সামগ্রিক উন্নয়ন সম্ভব হবে। এই সত্য উপলব্ধি করে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় কর্মকাণ্ডে নারীর অধিকতর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন। ’
তিনি বলেন, ‘এর ধারাবাহিকতায়, বেগম খালেদা জিয়ার সরকার এদেশের নারীদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য ব্যাপক কর্মসূচি বাস্তবায়নের পাশাপাশি নারীদের মধ্যে নিরক্ষরতার অন্ধকার দূর করতে এবং শিক্ষার ব্যাপক প্রসার ঘটাতে অনেক কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করে। তার শাসনামলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির হার ৯৭ শতাংশে উন্নীত হয়। মেয়েদের বৃত্তির আওতায় আনা হয় এবং স্কুলে ছেলে ও মেয়েদের মধ্যে লিঙ্গ সমতা প্রতিষ্ঠা করা হয়। মেয়েদের জন্য দুটি নতুন ক্যাডেট কলেজ এবং তিনটি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠিত হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় চট্টগ্রামে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া হয়।’
তারেক রহমান বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার সরকার উচ্চশিক্ষাকে উৎসাহিত করার জন্য একটি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এবং একটি উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজ অনুমোদন করে। যাতে নারীদের অংশগ্রহণের সুযোগও বৃদ্ধি পায়। দেশের জনগণ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব শিক্ষিত হয় তা নিশ্চিত করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনে একটি পৃথক প্রাথমিক ও গণশিক্ষা বিভাগ প্রতিষ্ঠা করা হয়।
তিনি বলেন, ‘১৯৯৩ সালের ১ জুলাই থেকে দেশব্যাপী প্রাথমিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়। দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে শিক্ষা গ্রহণে আগ্রহী করে তোলার জন্য বেগম খালেদা জিয়ার সরকার ১৯৯৩ সালে শিক্ষার বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচি চালু করে। গ্রামাঞ্চলে মেয়েদের জন্য মাধ্যমিক শিক্ষা বিনামূল্যে করা হয় এবং মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য দেশব্যাপী বৃত্তি কর্মসূচি চালু করা হয়। ফলস্বরূপ, নারীর ক্ষমতায়ন ও উন্নয়নের মূলধারায় তাদের সম্পৃক্ততার কারণে তাদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস জাগ্রত হয়। একই সাথে তারা অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার পথ খুঁজে পায়।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘শিক্ষা, প্রশিক্ষণ এবং পুরুষদের সাথে প্রতিযোগিতা করার জন্য নারীদের সমান সুযোগের মাধ্যমে সমাজের অগ্রগতি এবং রাষ্ট্রের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হয়। পরিবর্তনশীল বিশ্বে নারীর উপস্থিতি নিশ্চিত করার জন্য আমাদের একসাথে কাজ করতে হবে। শান্তি, নিরাপত্তা, মানবাধিকার এবং টেকসই উন্নয়নে বিশ্বব্যাপী অগ্রগতির জন্য নারীর অধিকার একটি অপরিহার্য শর্ত। নারীরা যাতে অবহেলা, নির্যাতন ও নিপীড়নের শিকার না হন এবং তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত না হন সেদিকে সকলের সজাগ দৃষ্টি রাখা উচিত। নারীর সমতা এখন বিশ্বব্যাপী কর্মকাণ্ডের প্রথম এজেন্ডা হওয়া উচিত।
নারী দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, ‘এই শুভ দিনে, আমি সকলকে নারীর উন্নয়ন ও কল্যাণের জন্য আন্তরিকভাবে কাজ করার আহ্বান জানাচ্ছি। আমি এই বছরের আন্তর্জাতিক নারী দিবসের মূল প্রতিপাদ্য, “অধিকার, সমতা, ক্ষমতায়ন, নারী ও মেয়েদের উন্নয়ন” এর সাফল্য কামনা করি।