বেনাপোল থেকে দূরপাল্লার বাস দুই দিন ধরে বন্ধ
দুই দিন ধরে বেনাপোলে দূরপাল্লার পরিবহন ধর্মঘট চলছে। গতকাল রোববার দ্বিতীয় দিনের মতো বাস চলাচল বন্ধ থাকায় দুর্ভোগে পড়েছেন পাসপোর্টধারী যাত্রীরা।
জানা গেছে, বেনাপোল পৌরসভা আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট থেকে দুই কিলোমিটার দূরে দিবারাত্রি পরিবহনের স্ট্যান্ড সরিয়ে নেওয়ায় শনিবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটের ডাক দেয় পরিবহন মালিক-শ্রমিক সংগঠনগুলো। পাসপোর্টধারী যাত্রীদের সুবিধার্থে সরকার বেনাপোল চেকপোস্টে ৩০ মিলিয়ন টাকা ব্যয়ে একটি বিশাল পরিবহন টার্মিনাল নির্মাণ করেছে। এর ফলে যাত্রীরা দ্রুততম সময়ে ইমিগ্রেশন ও কাস্টমসের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে পারতেন।
হঠাৎ করে পৌরসভা কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনসহ পাসপোর্ট যাত্রীরা। এর আগে বেনাপোলের যানজট নিরসনে যশোরের জেলা প্রশাসকের সঙ্গে গত সপ্তাহে বৈঠক হয়। সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক বন্দরের নিজস্ব পরিবহন টার্মিনাল থাকলেও ভারতগামী যাত্রীদের চেকপোস্ট থেকে ২ কিমি দূরে পৌরসভা টার্মিনালে ভোর ৩টায় নামানো হচ্ছে যা পাসপোর্ট যাত্রীদের জন্য খুবই অসুবিধাজনক। ফলে ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত পরিবহন টার্মিনালটি অব্যবহৃত পড়ে আছে। এতে বন্দরের পরিবহন টার্মিনাল থেকে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব আয় বন্ধ হয়ে গেছে।
এমন হয়রানিমূলক সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারছেন না পাসপোর্ট যাত্রীরা। ২০ বছর ধরে ঢাকা-চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ছেড়ে যাওয়া রাত-দিন পরিবহনগুলো সরাসরি চেকপোস্ট টার্মিনালে যাত্রী নামিয়ে আসছে। পরে খালি পরিবহনগুলো বন্দর টার্মিনালে রাখা হয়। এটি কেবল বন্দরের জন্য রাজস্ব তৈরি করেনি, যাত্রীদের পায়ে হেঁটে ইমিগ্রেশনে প্রবেশের অনুমতি দেয়।
পাসপোর্টধারী যাত্রী ইমরান হোসেন জানান, সীমান্ত থেকে দুই কিলোমিটার দূরে পৌর টার্মিনালে ঢাকা থেকে আসা পরিবহন বন্ধ থাকে। সেখানে রাত ৩টায় যাত্রীদের বাস থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়। পরে চায়ের দোকানে ২ ঘণ্টা বসে থাকার পর সকালে ইজিবাইক নিয়ে সীমান্তে চলে আসি। একজন পাসপোর্টধারী যাত্রী বন্দর ব্যবহারের জন্য বাংলাদেশ স্থলবন্দর থেকে টাকা নেয়। তাহলে বন্দর আমাদের কি সেবা দিয়েছে? আমরা চাই চেকপোস্টে অবস্থিত স্থলবন্দর টার্মিনাল থেকে বাস চলাচল করুক।
এ ব্যাপারে পরিবহন সমিতির সভাপতি বাবলুর রহমান বাবু বলেন, কয়েকদিন আগে যশোর জেলা প্রশাসকের সঙ্গে আমাদের ও স্থানীয় স্বার্থান্বেষী মহলের মধ্যে বৈঠক হয়। যানজটের কথা উল্লেখ করে প্রশাসন সব বাসকে কাগজপুকুর টার্মিনালের চেকপয়েন্ট ছেড়ে যেতে এবং যানবাহনকে সেখান থেকে ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। বেনাপোল পৌরসভার প্রশাসক কাজী নাজিব হাসান জানান, রাত ১২টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত যাত্রী নিয়ে দূরপাল্লার সব পরিবহন বেনাপোল চেকপয়েন্টে যেতে পারবে। দিনের বেলায় পৌরসভা টার্মিনাল থেকে বাস ছাড়বে। বন্দরে যানজট নিরসনে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।