২০০১ সাল থেকে এই আয়োজন নেই কোনো ভেদাভেদ
আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদে প্রথম দিনে ইফতারে দুই হাজার মানুষের
ভ্রাতৃত্বের অনন্য দৃষ্টান্ত তুলে ধরে অন্যান্য বছরের মতো আন্দরকিল্লাহ শাহী জামে মসজিদে ইফতারের আয়োজন শুরু হয়েছে। এই ইফতারের আয়োজনে চলবে, রোজার ত্রিশ দিন পর্যন্ত।
ধনী-গরিব, বয়স ও শ্রেণি পেশার মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। সব শ্রেণি-পেশার, সব বয়সের মানুষ সারিবদ্ধভাবে বসে ইফতার খাচ্ছেন। এই অপরূপ দৃশ্য দেখে অনেকেই অভিভূত। পরম করুণাময়ের সন্তুষ্টির আশায় ইফতারের ঠিক আগে মোনাজাতের সময় অনেককে হাত তুলতে দেখা গেছে।
গতকাল মঙ্গলবার রমজানের প্রথম দিন আন্দরকিল্লাহ শাহী জামে মসজিদে এ দৃশ্য দেখা গেছে।
তবে এ বছরসহ গত ২৩ বছর ধরে এ মসজিদে ইফতারের আয়োজন হয়ে আসছে। গতকাল প্রথম রমজানে দুই হাজারের বেশি মানুষ অংশ নেন। আয়োজকরা জানিয়েছেন, তাদের অতীত অভিজ্ঞতার আলোকে রমজানের শেষের দিকে ইফতারে যোগদানকারীর সংখ্যা বাড়বে। তিন হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে। তখন ইফতারের প্রসারও হবে। এর কারণ, রমজান শেষে আশেপাশের মার্কেটে ঈদের কেনাকাটা করতে আসা লোকজনও রোজা ভাঙতে মসজিদে ভিড় করেন। তখন জনসংখ্যা বাড়ে।
আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ ১৬৬৭ খ্রিস্টাব্দে নির্মিত বলে জানা যায়। চট্টগ্রামে মুঘলদের বিজয়ের স্মৃতিস্তম্ভ হিসেবে। ৩২৯ বছর পর, মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন তাহের জাবেরী আল মাদানী ১৯৯৬ সালে মসজিদে খতিব হিসেবে যোগদান করেন। এরপর তিনি মক্কা-মদিনার আদলে এই মসজিদে রোজাদারদের জন্য ইফতারের আয়োজন করার কথা চিন্তা করেন।
২০০১ সালে তার প্রচেষ্টায় রোজাদারদের জন্য ছোট পরিসরে ইফতারের আয়োজন করা হয়। ২০০৭ সালে, এই ঘটনাটি একটি বড় আকারে রূপ নেয়। এরপর থেকে প্রতি রমজানে শত শত রোজাদার এখানে ইফতার করেন। জানা গেছে, সকাল থেকেই শুরু হয় ইফতার আয়োজনের কাজ। রমজান জুড়ে ইফতার তৈরিতে আটজন বাবুর্চি কাজ করবেন। ইফতার বিতরণে বেশ কিছু স্বেচ্ছাসেবক কাজ করবে। অতীতের মতো এবারও ইফতারে নয়টি আইটেম রয়েছে। এগুলো হলো খেজুর, ছোলা, চামুচা, পায়জু, বেগুনী, আলুর চপ, মুড়ি, ও জিলাপি। এর সাথে থাকে শরবত আবার কখনো কখনো মৌসুমি ফল ও বিরানি পরিবেশন করা হতো। ইফতার পৃথক প্লেটে এবং বড় প্ল্যাটারে পরিবেশন করা হয় যা ছয়জন ব্যক্তি ভাগ করে নিতে পারেন। তবে ধনী-গরিবের জন্য আলাদা কোনো ইফতার সামগ্রী নেই। তাদের সবার কাছে একই সরঞ্জাম রয়েছে, যা ইসলামী ভ্রাতৃত্বের পরিচায়ক।