আশ্রয় প্রকল্পের বাড়িতে প্রভাবশালীর তালা
মিঠামইন উপজেলার কেয়ারজোড় ইউনিয়নের কৃষ্ণনগরে এক পরিবারের আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরের তালা ঝুলিয়ে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে।
এ ব্যাপারে আশ্রয়ন প্রকল্পের বাসিন্দা হীরেন্দ্র দাস বাদী হয়ে মিঠামইন থানায় একই ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য রউফ ভূঁইয়া ও তার ছেলে জলিল ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন।
জানা যায়, কৃষ্ণনগরের বিনয় দাস নামে এক দিনমজুর দুই বছর আগে কেয়ারজোড় ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য রউফের ছেলে জলিলের বাড়িতে ৬৫ হাজার টাকা ও ২৫ মণ ধানের বিনিময়ে সাত মাসের জন্য কাজ নেয়। কাজ নেওয়ার শুরুতেই বিনয় ৩৪ হাজার টাকা অগ্রিম নেন। তিন মাস কাজ করার পর বিনয় অসুস্থ হয়ে পড়লেও জলিল তাকে জোর করে কাজ করার চেষ্টা করেন। কাজে না গেলে তাকে বিভিন্ন হুমকি-ধমকি দেয়া হয়। একপর্যায়ে বিনয় তার ভাই হীরেন্দ্রকে তার আশ্রয়ন প্রকল্পের বাড়ির দেখাশোনার জন্য রেখে ভয়ে পরিবার নিয়ে ঢাকায় চলে আসেন। পরে জলিল হীরেন্দ্রকে টাকা দিতে চাপ দেয়। এমনকি জোর করে বাড়ি দখলের চেষ্টাও করেছে। হীরেন্দ্র বাধা দিলে তিনি তাকে হুমকি দেন। পরে হীরেন্দ্র ১৫ হাজার টাকা দিয়ে বিষয়টি মিমাংসা করেন। ৪ আগস্ট সন্ধ্যায় জলিল তার লোকজন নিয়ে আবার বাড়ি দখল করতে এলে হীরেন্দ্র তাকে বাধা দেয়। তাকে মারধরের হুমকি দেওয়া হয়। তাই ভয়ে সে স্থান ত্যাগ করে। পরে জলিল বিনয়ের কক্ষে তালা দিয়ে কক্ষটি দখলে নেয়।
অভিযোগকারী হীরেন্দ্র দাস জানান, তিনি অসহায় হয়ে আইনের আশ্রয় নিয়েছেন। পরিবার নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন তিনি। কৃষ্ণনগর আশ্রয়ণ প্রকল্পের ২০টি পরিবারও আতঙ্কে রয়েছে। তিনি বিষয়টি চেয়ারম্যানকে জানান।
কেয়ারজর্ড ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল কাশেম জানান, বিষয়টি তাকে জানানো হয়েছে। একটি প্রভাবশালী মহল দীর্ঘদিন ধরে এ ইউনিয়নে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর অত্যাচার করে আসছে। তারা মুখ খুলতে ভয় পায়। এসব ঘটনার সুষ্ঠু বিচার হওয়া দরকার। এ অবস্থা চলতে থাকলে এলাকায় কোনো হিন্দু পরিবার বসবাস করতে পারবে না।
ফোন করা হলে আসামি জলিল ভূঁইয়ার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। মেসেজ করার পরও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
মিঠামইন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কালিন্দ্র নাথ গোলদার জানান, এ বিষয়ে একজন এসআইকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।