বিশ্ব বাণিজ্যে প্রতিযোগিতার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ
বাংলাদেশ অনুন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উন্নীত হলে বৈশ্বিক বাণিজ্য প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ যাতে টিকে থাকতে পারে তা নিশ্চিত করতে ‘জাতীয় ট্যারিফ নীতি-২০২৩’-এর খসড়া মন্ত্রিসভা অনুমোদন করেছে। এই নীতিমালা বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের জন্য বৈশ্বিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে একটি ইতিবাচক পথ তৈরি করবে বলে মনে করে সরকার।
সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই খসড়ার অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বৈঠক শেষে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন।
তিনি বলেন, ট্যারিফ কমিশন এ পর্যন্ত সরকারের বাণিজ্য নীতি, রপ্তানি নীতি, শিল্পনীতি বা আমদানি নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে শুল্ক নির্ধারণের ক্ষেত্রে সরকারকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়েছে। কিন্তু এ বিষয়ে কোনো নীতিমালা ছিল না, এখন তা হচ্ছে। ব্যবসায়ীদের আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশে সহায়তা করার সুপারিশ করা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, সরকার এই নীতির ভিত্তিতে শুল্ক ও কর কাঠামো নিয়ে ধাপে ধাপে এগোবে।
বাংলাদেশি পণ্য যাতে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বা বাজারে প্রতিযোগিতা করতে পারে তার জন্য এই নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এটি বাংলাদেশি পণ্যের বাজার তৈরিতে সহায়ক হতে পারে।
এই নীতিমালার প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে মাহবুব হোসেন বলেন, আমরা স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের পথে যাচ্ছি। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে আমাদের এখন যে সুবিধা রয়েছে তা ধীরে ধীরে কমে যাবে। তারপর সরাসরি প্রতিযোগিতায় প্রবেশ করুন। তারপর বাজার ধরে রাখতে এবং প্রসারিত করতে, বর্তমান শুল্ক কাঠামোতে কিছু সংযোজন প্রয়োজন।
বাণিজ্য উদারীকরণ, শুল্ক কাঠামো যুক্ত করে দেশীয় শিল্পের সক্ষমতা বৃদ্ধি, রপ্তানি সম্প্রসারণ, বহুমুখীকরণ, বিনিয়োগ বৃদ্ধি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং টেকসই অর্থনীতি অর্জনের লক্ষ্যে এসব নীতি গ্রহণ করা হচ্ছে। এটির ১৭টির মতো নীতি রয়েছে। এর বাস্তবায়ন ও তদারকির জন্য বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির নেতৃত্বে একটি মনিটরিং অ্যান্ড অডিট কমিটি গঠন করা হয়েছে। ১৬ সদস্যের কমিটিতে একজন সচিব, এফবিসিসিআইয়ের সদস্য এবং ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান রয়েছেন।
এদিকে নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এনডিবি) সঙ্গে চুক্তির প্রস্তাব অনুমোদন করেছে মন্ত্রিসভা। এটি ব্রিকস জোটের অধীনে একটি আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান। ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন এবং দক্ষিণ আফ্রিকা: পাঁচটি দেশের অর্থনৈতিক জোট BRICS-এর উদ্যোগে NDB 2015 সালে যাত্রা শুরু করে। প্রতিষ্ঠানটি উন্নয়নশীল দেশগুলির পাশাপাশি ব্রিকস সদস্যদের অবকাঠামো খাত এবং উন্নয়ন প্রকল্পগুলির জন্য ঋণ প্রদান করে।
সিএজিতে দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যয় নিরীক্ষা
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যয় অডিট করবে অডিটর জেনারেল অ্যান্ড কম্পট্রোলার জেনারেল (সিএজি) অফিস। এমন বিধান রেখে দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন সংশোধনের অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এছাড়া সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছার নামকরণের প্রস্তাবও অনুমোদন করেছে মন্ত্রিসভা। আইন সংশোধন হলে সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম হবে ‘বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট’।
গতকাল মন্ত্রিসভা ‘ডিস্ট্রিক্টস (এনফোর্সমেন্ট ইন চিটাগাং পার্বত্য জেলা) আইন-২০২৩’ এবং ‘বাংলাদেশ পুলিশ (সাবঅর্ডিনেট স্টাফ) কল্যাণ তহবিল আইন-২০২৩’-এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, কিছু ভুল সংশোধন করে ১৯৮৪ সালে প্রণীত জেলা অধ্যাদেশকে আইনে রূপান্তর করা হচ্ছে।