সরকারি হাসপাতালে জরুরি সেবা নিয়ে আপত্তি চিকিৎসকদের
দেশের ১০টি জেলা ও ২০টি উপজেলায় আজ বৃহস্পতিবার সরকারি হাসপাতালে নির্ধারিত ফি দিয়ে জরুরি সেবা চালু হচ্ছে। বিকাল ৩টায় এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক। এ সময় হাসপাতালের তালিকা প্রকাশ করা হবে। এরপর আনুষ্ঠানিকভাবে সেবাটি চালু করা হবে। তবে এ সেবা নিয়ে চিকিৎসকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে অনেকেই আপত্তি জানিয়েছেন।
সোমবার স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সভাপতিত্বে এক বৈঠকে এ সেবা নিয়ে আপত্তি তোলেন চিকিৎসকরা। তবে আপত্তির তোয়াক্কা করেননি স্বাস্থ্যমন্ত্রী। মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতালে পাইলট প্রকল্প হিসেবে এ সেবা চালু করা হচ্ছে। সফল হলে পর্যায়ক্রমে সারাদেশে চালু করা হবে।
তবে এই সেবায় বিভিন্ন পরীক্ষার ফি কত হবে তা জানেন না মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের কর্মকর্তারা। কীভাবে এই কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে তাও স্পষ্ট নয়।
চার বছর আগে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া নির্দেশনা বাস্তবায়নে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এমন ঘোষণা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। একটি ভাল উদ্যোগ সঠিক পরিকল্পনার অভাবে পড়ে যেতে পারে। এটি নতুন প্রকল্পগুলিকে প্রভাবিত করতে পারে। গত সোমবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে বৈঠকে স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের সচিবসহ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিএমএ, স্বাচিপের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, পর্যাপ্ত প্রস্তুতি ছাড়া বৈকাল সার্ভিস চালু করা নিয়ে অনেকেই আপত্তি তুলেছেন। বৈঠকের কর্মসূচী নিয়েও কয়েকটি প্রস্তাব করা হয়েছে। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত সেবার সময় বাড়ানো যায় কি না তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। এ ছাড়া সরকারি হাসপাতালে টাকার বিনিময়ে সেবা নেওয়া কতটা সঠিক হবে তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। কিছু ঘোষণা না করায় বেশ কয়েকজন অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক এবং বিশেষজ্ঞরা এই প্রকল্প নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। তবে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে বেশ আশাবাদী স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মাইদুল ইসলাম বলেন, নীতিমালা বিবেচনায় নিয়ে প্রাথমিকভাবে সরকারি মেডিকেল কলেজগুলোতে পাইলট প্রকল্প চালু করা হবে। প্রতিষ্ঠানগুলোর অবকাঠামো বিবেচনা করে সেবার পরিধি নির্ধারণ করা হবে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে মেডিকেল কলেজের এক অধ্যাপক বলেন, “সরকার নির্দেশ দিলে আমাদের ২৪ ঘণ্টা দায়িত্ব পালন করতে হবে। এটা সরকারি চাকরির নিয়ম। কিন্তু যে সেবার কথা বলা হচ্ছে, এখন পর্যন্ত কিছুই পরিষ্কার নয়। এর বাস্তবায়ন নিয়ে উদ্বিগ্ন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) ডা. এহতেশামুল হক চৌধুরী দুলাল বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তে একটি প্রকল্প চালু করা হচ্ছে। কিন্তু পর্যাপ্ত প্রস্তুতি ছাড়া এটি করা কতটা সঠিক তা নিয়ে আমার প্রশ্ন আছে। বৈঠকেও বিষয়টি জানিয়েছি। সরকারি প্রতিষ্ঠানে টাকার বিনিময়ে রোগী সেবা নেওয়ার বিষয়টিকে সমাজের অন্যরা কীভাবে দেখবে সেটাও ভাবার বিষয়। একটি সিদ্ধান্ত যা রোগী এবং ডাক্তারের মধ্যে দূরত্ব তৈরি করতে পারে।