লক্ষ্মীপুরে শিশু হত্যার দায়ে এক নারীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে
লক্ষ্মীপুরের রায়পুরায় পপি সাহা (৭) নামে এক শিশুকে শ্বাসরোধ করে হত্যার দায়ে রুনা আক্তার আঁখি (২৫) নামের এক নারীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করার নির্দেশ দেন বিচারক।
সোমবার দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মো. রহিবুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন। দণ্ডপ্রাপ্ত রুনা রায়পুরা উপজেলার পূর্ব কেরোয়া গ্রামের ইমরানের স্ত্রী। নিহত পপি সাহা উপজেলার বামনি ইউনিয়নের সাগরদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির ছাত্রী।
জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, রায় ঘোষণার সময় রুনা ও তার স্বামী এমরান আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, আসামি রুনাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে এবং রুনার স্বামী এমরান হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত তাকে খালাস দিয়েছেন।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, ঘটনার তিন মাস আগে আসামি রুনা আক্তার আঁখি ও তার স্বামী এমরান রায়পুরা উপজেলার সাগরদী গ্রামে কাশেম হাওলাদারের একটি বাসা ভাড়া নেন। ২০২১ সালের ২ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ১১টা থেকে আড়াইটার দিকে নেপাল সাহার বাড়ির নির্মল সাহার স্কুল পড়ুয়া মেয়ে রুনা পপি সাহাকে তার ভাড়া বাসায় ডেকে নিয়ে যায়। এ সময় শিশুটির কান থেকে স্বর্ণের দুল ছিনিয়ে নেয় রুনা। শিশুটি চিৎকার করতে চাইলে রুনা তার মুখ ও গলা চেপে ধরে। শিশুটি মারা যায়। পরে খাটের নিচে লাশ লুকিয়ে রাখেন। ঘটনার পর রুনার স্বামী এমরান হোসেন বাড়িতে আসলে তার স্ত্রী তাকে হত্যার কথা জানায়। এতে সে লাশ লুকানোর পরিকল্পনা করে।
অন্যদিকে পরিবারের লোকজন ও স্বজনরা শিশুটিকে সর্বত্র খুঁজতে থাকে। একপর্যায়ে রুনার ঘরে শিশু পপির লাশ পাওয়া যায়। পরে খবর পেয়ে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে এবং রুনা ও তার স্বামী এমরানকে আটক করে। এ ঘটনায় শিশুটির মা ববিতা রানী সাহা (৩২) বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে ওই মামলায় তাদের গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়।
১১ ডিসেম্বর, ২০২১ তারিখে, রায়পুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জাহাঙ্গীর আলম মামলাটি তদন্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেন। এতে রুনা হত্যা ও তার স্বামী হত্যাকাণ্ড গোপন করার অভিযোগ আনা হয়।
রায়ের পর মামলার বাদী ববিতা রানী সাহা বলেন, আদালতের রায়ে আমরা সন্তুষ্ট।