অতিরিক্ত ভাড়ার কারণে পথে দুর্ভোগ তো আছেই, রয়েছে যানজটও
ডিজেল ও কেরোসিনের বাড়তি দাম প্রত্যাহার বা ভাড়া বৃদ্ধির দাবিতে রোববার টানা তৃতীয় দিনের মতো সড়ক পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের ধর্মঘট অব্যাহত রয়েছে। সকাল থেকে যান চলাচল বন্ধ থাকায় অফিসগামী লোকজনও চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। অফিসগামী যাত্রীরা বাস না পেয়ে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। মাঝে মধ্যে দু-একটি বিআরটিসি বাস চলাচল করলেও সেগুলোতে প্রচুর মানুষ উঠছে। এ ছাড়া রাজধানীর সড়কে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, রিকশা বা লেগুনা কয়েকগুণ বেশি ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। কিছু মানুষ অসহায় হয়ে ভ্যান ও কাভার্ড ভ্যানে ঝুঁকি নিয়ে তাদের কর্মস্থল ও গন্তব্যে যাচ্ছেন।
এদিকে গণপরিবহন বন্ধ থাকলেও রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে যানজট লক্ষ্য করা গেছে। রিকশা, সিএনজি, মোটরসাইকেল ও প্রাইভেটকারের চাপ বেশি।
শুক্রবার-শনিবারের চেয়ে রোববার রাজধানীর সড়কে মানুষের উপস্থিতি বেশি দেখা গেছে। রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বাসস্ট্যান্ড ও মোড়ে শত শত মানুষকে গাড়ির অপেক্ষায় থাকতে দেখা গেছে।
বেসরকারি চাকরিজীবী মাহফুজুর রহমান মোহাম্মদপুর ছেড়ে তেজগাঁওয়ে যাবেন। কিন্তু ভিড়ের কারণে বিআরটিসি বাস না পাওয়ায় তিনি সিএনজি অটোরিকশা ডাকেন। তবে ভাড়ার কথা শুনে তিনি বলেন, ‘এর চেয়ে হেঁটে যাওয়া ভালো।
সিএনজি ও রিকশার ভাড়া কত জানতে চাইলে মাহফুজ বলেন, সাধারণত মোহাম্মদপুর থেকে তেজগাঁওয়ে আমার অফিস পর্যন্ত সিএনজির ভাড়া ১৫০ থেকে সর্বোচ্চ ১৮০ টাকা। আজ সিএনজি চালকরা চায় ২৫০-৩০০ টাকা। আর রিকশায়ও ২০০-৩০০ টাকা চায়। আমাদের মনে হচ্ছে আমরা তাদের কাছে জিম্মি হয়েগেছি। ‘
এদিকে বাসের ভাড়া বাড়াতে রোববার বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) সঙ্গে বৈঠকে বসছেন বাস মালিকরা। জানা গেছে, জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধিসহ ১৯টি খাতে ভাড়া নির্ধারণের প্রক্রিয়া চলছে। প্রতিটি ধাপে অতিরিক্ত হার যোগ করে নতুন ভাড়া নির্ধারণের দাবি জানিয়েছেন মালিকরা।
বুধবার রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জ্বালানি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ডিজেল ও কেরোসিনের দাম বাড়ানো হবে। লিটারে ১৫ টাকা বাড়ানোর ঘোষণা দেওয়া হয়। এটি রাতে কার্যকর। ফলে ডিজেল ও কেরোসিনের নতুন দাম লিটার প্রতি ৮০ টাকা; যা এতদিন ছিল ৬৫ টাকা।
ডিজেল ও কেরোসিনের দাম বেড়ে যাওয়ায় জীবনযাত্রার খরচ ও পরিবহন ভাড়া বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে। ট্রাক এবং বাস সহ পরিবহনের জন্য ডিজেল সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত জ্বালানী। সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলো বলছে, ট্রাকের ভাড়া বাড়লে পণ্য পরিবহনের খরচ বাড়বে। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বাড়বে। চাপ পড়বে সীমিত আয়ের মানুষের ওপর।