নৌ ধর্মঘটের কারণে চরম বিপাকে পড়েছেন যাত্রীরা।জলপথে পণ্য পরিবহনও বন্ধ

0

গত শনিবার মধ্যরাত থেকে দশ দফা দাবিতে নৌ পরিবহন শ্রমিকদের লাগাতার ধর্মঘট শুরু হয়। ধর্মঘটের কারণে সব ধরনের যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে দুর্ভোগে পড়েছেন ঢাকাসহ সারাদেশের যাত্রীরা। নৌপথে পণ্য পরিবহন বন্ধ থাকায় কয়েকটি সমুদ্রবন্দরে অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে। জাহাজ থেকে পণ্য খালাস বন্ধ করে শ্রমিকরা ধর্মঘটে যাওয়ায় লাখ লাখ টন পণ্য আটকা পড়ে।

গেজেট প্রকাশ, ন্যূনতম মজুরি ২০ হাজার টাকা নির্ধারণ এবং ১২ টাকা শ্রমিকের মৃত্যুতে ক্ষতিপূরণসহ ১০ দফা দাবিতে আটটি নৌ-পরিবহন সংগঠনের জোট নৌযান শ্রমিক সঙ্গম পরিষদ ও বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন এই ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে।

একই দাবিতে কার্গো বাল্কহেড নৌ শ্রমিক ইউনিয়নও রোববার সকাল ৬টা থেকে লাগাতার ধর্মঘট শুরু করেছে।

নৌযান শ্রমিক সঙ্গম পরিষদের আহ্বায়ক খলিলুর রহমান বলেন, ধর্মঘটের আগে গত শুক্রবার শ্রম অধিদফতরে প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ানের সঙ্গে নৌ-শ্রমিক সংগঠনের নেতারা বৈঠক করেন। এ সময় শ্রম প্রতিমন্ত্রী বলেন, তাদের দাবির বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। পরবর্তী আলোচনায় শ্রমিকদের ১০ দফা দাবির মধ্যে তিনটি সুনির্দিষ্ট দাবির কথা বলা হয়। এই তিনটি দাবি হল ন্যূনতম মৌলিক মজুরি ২০,০০০ টাকা নির্ধারণ, মৃত্যুর ক্ষতিপূরণ বৃদ্ধি এবং ভারতে যাওয়া নাবিকদের নিরাপত্তা ও অবতরণ পাস মঞ্জুর করা। এসব দাবি না মানলে ধর্মঘট চলবে। এমনকি ধর্মঘট আরও কঠোর রূপ নেবে।

নৈয়ান শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আতিকুল ইসলাম বলেন, তারা দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছেন। কর্তৃপক্ষ কর্ণপাত করছে না। বারবার আশ্বাস দিলেও কোনোটিই বাস্তবায়ন হয়নি। শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি না মানা পর্যন্ত ধর্মঘট চলবে।

এদিকে নৌ-কর্মীদের লাগাতার ধর্মঘটের কারণে বিপাকে পড়েছেন জাহাজ মালিকরা। তারা এই ধর্মঘটকে ‘অযৌক্তিক’ বলছেন।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন (যাত্রী পরিবহন) সংস্থার সিনিয়র সহ-সভাপতি বদিউজ্জামান বাদল বলেন, নৌকা শ্রমিকরা ধর্মঘট করছে। এখানে আমাদের কিছু করার নেই। শ্রম মন্ত্রণালয়ে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। শ্রমিক-মালিক চুক্তির মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

সংগঠনের সহসভাপতি সাইদুর রহমান রিন্টু জানান, গত শুক্রবার শ্রম প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান তার কার্যালয়ে মালিক-শ্রমিকদের বৈঠক ডেকেছেন। সেখানে এক মাসের মধ্যে নৌ-শ্রমিকদের বেতন-ভাতা সংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়নের জন্য সময় নিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী। তবে শনিবার শ্রমিক প্রতিনিধিরা তাদের সিদ্ধান্ত জানাবেন বলে অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেন। এরপর শনিবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে ধর্মঘট শুরু করেন তিনি।

তিনি বলেন, এই মুহূর্তে লঞ্চ ব্যবসায় মন্দা চলছে। এই ব্যবসা বন্ধ করতে পারলে আমরা বাঁচব। আমরা যদি সেই মুহূর্তে হরতাল ডাকি, তাহলে আমাদের ক্ষতির চেয়ে বেশি লাভ হবে। এখন শ্রমিকদের বেতন-ভাতা বাড়ানো আমাদের পক্ষে অসম্ভব।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) যুগ্ম পরিচালক শহীদুল্লাহ বলেন, নৌ-শ্রমিকদের দাবির বিষয়টি মন্ত্রণালয়ের বিষয়। আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *