গ্রুপ পর্বে ব্রাজিলের জন্য অপেক্ষা করছে ‘ভয়ংকর’ শারীরিক ফুটবল

0

বিশ্বকাপের ‘আজীবন’ ফেভারিট ব্রাজিল। ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষস্থান, তারকা-খচিত স্কোয়াড এবং উড়ন্ত ফর্মের সাথে, কোনও ফুটবল জ্ঞানী সেলেকাওরা ‘ফেভারিট নয়’ বলার সাহস করবে কিনা সন্দেহ। নেইমারের স্বপ্নের সারথি, তরুণ তুর্কি ভিনি। ব্যাক লাইন থিয়াগো সিলভা-কাসেমিরো-অ্যালিসন।

কখনো বিশ্বকাপ মিস  না করা। সবচেয়ে বেশি শিরোপা জিতেছেন। ১৯৬৬ মৌসুমের পর থেকে গ্রুপ পর্বে বাদ পড়া দলটির জন্য গ্রুপ পর্বে একটি বড় পরীক্ষা অপেক্ষা করছে। ফিফা র‌্যাঙ্কিং, ক্ষমতার ঐতিহ্য বিচারে সার্বিয়া (২১), সুইজারল্যান্ড (১৫) এবং ক্যামেরুন (৪৩) গ্রুপে স্পষ্ট ফেভারিট ব্রাজিল। তবে বাকি তিন দলের ডিফেন্স শক্তিশালী। খেলার কৌশল শুধুমাত্র রক্ষণাত্মক নয়, খুব শারীরিকও বটে। এই ‘জি’ গ্রুপকে বলা যেতে পারে কাতার বিশ্বকাপের সবচেয়ে ‘ফিজিক্যাল ফুটবল’ গ্রুপ।

গ্রুপ পর্বে ব্রাজিলের প্রথম প্রতিপক্ষ সার্বিয়া। দলের মূল শক্তি তাদের উচ্চতা। সেপ্টেম্বরে নেশন্স লিগে সুইডেন ও নরওয়েকে হারিয়েছে তারা। ওই দুই ম্যাচে বেশির ভাগ খেলোয়াড়ই কাতার বিশ্বকাপে। শুরুর একাদশে খেলা আন্দ্রিজা জিভকোভিচ ৫ ফুট ৭ ইঞ্চি লম্বা। অন্য সবার উচ্চতা ৬ ফুটের উপরে। শক্ত শরীর নিয়ে। যা প্রতিপক্ষের জন্য ভয়ের কারণ হতে পারে।

জুভেন্টাসের হয়ে খেলছেন সার্বিয়ান স্ট্রাইকার ভিলাহোভিচ।

কর্নার, ফ্রি কিক প্রতিপক্ষের গলার কাঁটা হতে পারে। আবার সার্বিয়ার বিপক্ষে ফ্রি কিক ও কর্নার থেকে গোল করা কঠিন হবে। তাদের দুই স্ট্রাইকার আলেকসান্ডার মিত্রোভিচের সাথে জুভেন্টাসের দুসান ভিলাহোভিচ প্রতিপক্ষকে পরীক্ষা করবে।

সুইজারল্যান্ডও বিস্ময়কর দল। স্পেন, পর্তুগালকে তাদের শেষ ম্যাচে হারায় তারা। ইউরোর গ্রুপ পর্বে পরাজিত চ্যাম্পিয়ন ইতালি, ইউরোর শেষ ষোলোতে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সকে হারিয়েছে। বিশ্বকাপ থেকে বিদায়ের দ্বারপ্রান্তে ঠেলে দিল ইতালিকে। ইউরোপীয় দলগুলি আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলে, সুইসরা রক্ষণাত্মক এবং শারীরিক ফুটবল খেলে। যেখানে প্রাণঘাতী সব ট্যাকল এবং শারীরিক মারামারি হয়।

ইউরোতে সুইসরা ছিল সবচেয়ে ট্যাকল এবং কার্ডেড দল। শেষ ষোলোতে সেই রক্ষণ দেয়াল ভাঙতে পারেনি ফ্রান্স। এমনকি কোয়ার্টারে দুর্ভেদ্য রক্ষণাত্মক দুর্গও ভাঙতে পারেনি স্পেন। তাদের কৌশলের কারণ শারীরিকভাবে শক্তিশালী, লম্বা ডিফেন্ডার ফ্যাবিও সাচার, ম্যানুয়েল আকানজি, ডিফেন্স এবং মিডফিল্ডে রিকার্ডো রদ্রিগো। মিডফিল্ডে গ্রানিট সাকা, ফরোয়ার্ডে রেমো ফ্রুলার এবং শাকিরি, স্টিভেন জুবের শারীরিকতাকে সমর্থন করছেন। তাদের পেছনে আস্থার প্রতীক গোলরক্ষক ইয়ান সামার।

আফ্রিকান ফুটবলের নিজস্ব কৌশল, ঐতিহ্য হল গতি এবং ভয়ঙ্কর ট্যাকলিংয়ের সাথে শারীরিক লড়াই। তারা বিধ্বংসী ট্যাকল করতে দুবার ভাবে না। তাদের মধ্যে ক্যামেরুন বেশি শারীরিক ফুটবল খেলে। কারণ ক্যামেরুনের ফুটবলাররা উচ্চতা ও ফিটনেসের দিক থেকে সেনেগাল, ঘানা বা মরক্কোর চেয়ে এগিয়ে। গ্রুপ পর্বে এই তিন প্রতিপক্ষের বিপক্ষেই সতর্ক হয়ে খেলতে হবে ব্রাজিলকে। শুধু জয়-পরাজয় নয়, ইনজুরিও।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *