গোলটেবিল বৈঠকে বিশিষ্টজিন।জেন্ডার বৈষম্য দূর করতে গণমাধ্যমের ইতিবাচক পদক্ষেপ অপরিহার্য
সামাজিক দায়বদ্ধতা ও গণমাধ্যমের ইতিবাচক কার্যক্রমের মাধ্যমে লিঙ্গ বৈষম্য দূর করা সম্ভব উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, নারী-পুরুষের মধ্যে সামাজিক সম্য প্রতিষ্ঠিত হলে লিঙ্গ বৈষম্যের অবসান ঘটবে। এ জন্য গণমাধ্যমকে সামাজিক দায়বদ্ধতা নিয়ে ইতিবাচক পদক্ষেপ নিতে হবে। লিঙ্গ সংবেদনশীল হতে সরকারি-বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় সমন্বিতভাবে কাজ করা জরুরি বলেও মনে করেন তারা।
বুধবার সকালে প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের (পিআইবি) সেমিনার কক্ষে ‘গণমাধ্যমে জেন্ডার ভিত্তিক সংবাদ উপস্থাপনা: পর্যবেক্ষণ, অভিজ্ঞতা ও বিনিময়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এসব কথা বলা হয়। আয়োজক পিআইবি এবং সাউথ এশিয়া সেন্টার ফর মিডিয়া ইন ডেভেলপমেন্ট (এসএকেএমআইডি)। সহযোগিতায় ছিল ‘ফ্রি প্রেস আনলিমিটেড’ এবং ‘প্রোটেক্টিং ইন্ডিপেন্ডেন্ট মিডিয়া ফর ইফেক্টিভ ডেভেলপমেন্ট (প্রাইমড)’।
পিআইবির মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদের সভাপতিত্বে এবং এসএকেএমআইডির উপ-পরিচালক সৈয়দ কামরুল হাসান এবং পিআইবি স্টাডিজ বিভাগের প্রভাষক শুভ কর্মকারের সঞ্চালনায় গোলটেবিল বৈঠকে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. শামীম রেজা, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আমিনা ইসলাম, নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের সভাপতি নাসিমুন আরা হক মিনু, বাংলাভিশন টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক মোস্তফা কামাল প্রমুখ।
অধ্যাপক শামীম রেজা বলেন, বিশ্বে অর্থনীতির মতো মিডিয়া মনিটর করা হয়। মিডিয়া মনিটরিং শুধু দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে নয়। কিন্তু মিডিয়া মনিটরিং খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মিডিয়া মনিটরিং ব্যবস্থা থাকলে জেন্ডারভিত্তিক সংবাদ উপস্থাপনা কার্যকর হতো। তিনি গণমাধ্যমের দিকনির্দেশনা, সংবাদের ধরন, প্রশিক্ষণ ও অভিজ্ঞতার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, এসব বিষয় না থাকার কারণে অনেক সময় জেন্ডারভিত্তিক সংবাদ উপস্থাপন করা হয় না।
মতামত ও সংবাদের বিষয়ের ওপর গুরুত্বারোপ করেন অধ্যাপক আমিনা ইসলাম। জেন্ডার ভিত্তিক সংবাদ উপস্থাপনার ক্ষেত্রে, তিনি ছবি, ভিডিও (টেলিভিশন), বক্তৃতা শৈলী সম্পর্কে কথা বলেছেন। পাঠক ও দর্শকদের কথা মাথায় রেখেই সংবাদ তৈরি করতে হবে বলেও মন্তব্য করেন এই অধ্যাপক।
মোস্তফা কামাল জেন্ডার সংবেদনশীল শব্দ এড়িয়ে যাওয়ার বিষয়ে আলোকপাত করেছেন। কিভাবে জেন্ডার সংবেদনশীল সংবাদকে প্রাজল ভাষায় উপস্থাপন করা যায় সে বিষয়ে তিনি আলোচনা করেন।
সংবাদে বা প্রচ্ছদে নারীকে পণ্য হিসেবে উপস্থাপনের বিষয়টি তুলে ধরেছেন নাসিমুন আরা হক মিনু। তিনি সুফিয়া কামাল ও নূরজাহান বেগমের সাংবাদিকতার ওপর আলোকপাত করেন। পশ্চাৎপদ নারী গোষ্ঠীকে এগিয়ে নিতে বেগম রোকেয়ার প্রচেষ্টা সবার জন্য অনুপ্রেরণা। দেশীয় চলচ্চিত্রে নারীর অবস্থান নিয়েও কথা বলেন এই সাংবাদিক নেতা।
সভাপতির বক্তব্যে জাফর ওয়াজেদ বলেন, সামাজিক দায়বদ্ধতা ও গণমাধ্যমের ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমেই জেন্ডার বৈষম্য দূর করা সম্ভব। তিনি জেন্ডারভিত্তিক সংবাদ উপস্থাপনার পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিয়ন্ত্রণের ওপর জোর দেন। এ ছাড়া জাফর ওয়াজেদ সংবাদ প্রচারে পাঠক, দর্শক ও শ্রোতাদের সমস্যার কথা মাথায় রেখে কনটেন্ট তৈরির ওপর জোর দেন।