মায়ের পেট ফেটে সড়কে জন্মানো বোনকে দেখে খুশি ভাইবোন
চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী জান্নাত ও পাঁচ বছর বয়সী ইবাদত এখনও বাবা-মা হারানোর শোক পুরোপুরি বুঝতে পারছে না। সবাই বলে তাদের বাবা-মা বাড়ির পাশে কবরে ঘুমাচ্ছে। এদিকে মা-বাবা ভাই-বোনের মৃত্যু হলে রাস্তায় জন্ম নেওয়া শিশুটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
রোববার দুপুরে ওই বোনকে দেখতে হাসপাতালে যান জান্নাত ও ইবাদত। ছোট বোনকে দেখে খুশি তারা। দুপুর ২টার দিকে ময়মনসিংহ শহরের চরপাড়া মোড়ে লাবিব বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছোট বোনের সঙ্গে দেখা করেন তারা।
গত শনিবার ট্রাকের ধাক্কায় তার বাবা-মা ও বোন নিহত হলে মায়ের পেট ফেটে শিশু কন্যার জন্ম হয়। শিশুটির বড় দুই ভাই জান্নাত ও ইবাদত।
মায়ের দুধের এক ফোঁটাও মুখে গেল না, বাচ্চাটা কাঁদছে
শিশু জান্নাত ত্রিশালের মঠবাড়ি ইউনিয়নের রায়মনি গ্রামের ব্র্যাক পরিচালিত একটি স্কুলে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। জান্নাত বলে সে তার বোনের দেখাশোনা করবে। তার কাছে রাখবে। কারও কাছে যেতে দেবে না।
খুশি শিশু ইবাদতও তার ছোট বোনকে হাসপাতালে দেখতে যাওয়ার পর। সে এখনও বুঝতে পারেনি তার বাবা-মা মারা গেছে। দাদা মুস্তাফিজুর রহমান আকুলভাবে জিজ্ঞেস করলেন বাবা কবে ফিরবেন।
লাবিব হাসপাতালের নার্স শরিফা আক্তার বলেন, ভাই-বোন কিছুক্ষন ধরে ছোট বোনের সঙ্গে ছিলেন। বোনকে পেয়ে তারা খুব খুশি। জড়িয়ে ধরে ছবি তোলে।
মোস্তাফিজুর রহমান বাবলু বলেন, মা-বাবা মারা গেছেন, জান্নাত বুঝলেও ইবাদত বোঝেন নাই। নানা ব্যাখ্যা দিয়ে তাকে শান্ত রাখা হচ্ছে।
গত শনিবার ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ত্রিশালের কোর্ট ভবন এলাকায় ট্রাকের ধাক্কায় প্রাণ হারান জাহাঙ্গীর আলম, তার গর্ভবতী স্ত্রী রত্না আক্তার ও ছয় বছরের মেয়ে সানজিদা আক্তার। এ দুর্ঘটনায় অন্তঃসত্ত্বা রত্না আক্তারের পেট ফেটে যায় এবং তার সন্তানের জন্ম হয়। ও এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।