রোববার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ইসির সংলাপ শুরু।বিএনপির সহ আসছে না সমমনা ১১টি নিবন্ধিত দল

0

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ধারাবাহিক সংলাপ শুরু করতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। রোববার প্রথম দিনে চারটি রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এই সংলাপ চলবে ৩১ জুলাই পর্যন্ত ৩৯টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সঙ্গে প্রতিদিন চারটি করে।

দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো এই সংলাপ বয়কটের ঘোষণা দিয়েছে। পূর্ব নির্ধারিত সময় অনুযায়ী প্রথম দিনে চারটি রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তবে প্রথম দিনের সংলাপে অংশ নিচ্ছে না বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (বিএমএল)। বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোট ছাড়াও আজকের সংলাপে আমন্ত্রিত অন্য তিনটি দল হলো জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম), বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট (বিএনএফ) এবং বাংলাদেশ কংগ্রেস।

এর আগে ইভিএম নিয়ে আলোচনায় অংশ নেয়নি মুসলিম লীগ। ১৯ জুন থেকে ২৮ জুন পর্যন্ত তিন দফায় ৩৯টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে এই মতবিনিময়ের আয়োজন করে ইসি। বিএনপিসহ ১১টি দল ওই আলোচনায় অংশ নেয়নি। এসব দল এই সংলাপে অংশ নেবে না বলে মনে করছেন ইসির সংশ্লিষ্ট শাখার কর্মকর্তারা।

বাংলাদেশ মুসলিম লীগের (বিএমএল) ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী বলেন, রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তার দল এই সংলাপ বয়কট করছে। কারণ তার দল মনে করে, এই কমিশন গঠন যথাযথ হয়নি। একই সঙ্গে দলীয় সরকারের অধীনে দেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের কোনো পরিবেশ নেই বলেও মনে করছে তার দল।

রোববার থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ। দলগুলোর সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা হবে। প্রতিটি দলের সর্বোচ্চ ১০ জন প্রতিনিধি সংলাপে অংশ নিতে পারবেন। তবে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে পরামর্শ বা মতামত চাওয়া হবে। প্রথম দিনে চারটি রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও সংলাপে বাংলাদেশ মুসলিম লীগের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা যায়নি।

রোববারের সংলাপে অংশ নিতে যাওয়া বাংলাদেশ কংগ্রেসের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট কাজী রেজাউল হোসেন শনিবার বলেন, তার দল ইসি থেকে ১০ জনকে নেওয়ার আমন্ত্রণ পেয়েছে। আরও দুই থেকে চারজনকে সংগ্রহ করার পরিকল্পনা রয়েছে বলেও জানান তিনি।

রেজাউল হোসেন বলেন, নির্বাচনকালীন প্রশাসনিক ক্ষমতা ইসির হাতে- এটাই তার দলের প্রত্যাশা। তিনি বলেন, কুমিল্লা সিটি নির্বাচনে একজন এমপিকে নিয়ে যে পরিস্থিতি হয়েছে তার পুনরাবৃত্তি তার দল চায় না। এমনটা হলে নির্বাচনে সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখা কঠিন হবে। তার দলের পক্ষ থেকে সংলাপে এসব বিষয় তুলে ধরা হবে।

বাংলাদেশ ন্যাশনাল ফ্রন্টের (বিএনএফ) চেয়ারম্যান সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ বলেছেন, তারা সংলাপে অংশ নিতে যাচ্ছেন। আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে- এমন আশ্বাস পেতে চান বর্তমান ইসি। ইভিএমের জন্য তাদের পরামর্শ হল পোলিং এজেন্ট না থাকা। কারণ ভোট শুরু হলেই এই পোলিং এজেন্টরা গোপন কক্ষে ঢুকে ডাকাত হয়ে যায়।

জাতীয় গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এনডিএম) চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ বলেছেন যে তার দল বিশ্বাস করে যে দেশের বিদ্যমান গণতান্ত্রিক পরিবেশ পরিবর্তন করা দরকার। এ জন্য তারা কমিশনকে তিনটি বিষয়ে লিখিত প্রস্তাব দেবেন। একটি সমগ্র গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সম্পর্কে, অন্যটি নির্বাচনী প্রক্রিয়া এবং ভোট প্রক্রিয়া সম্পর্কে। এর মধ্যে ইভিএম নিয়ে তার দলের অবস্থানও তুলে ধরা হবে সংলাপে।

১৭ থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত ৩৯টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ করবে ইসি। ৩১ জুলাই বিকেল ৩টায় আওয়ামী লীগের সঙ্গে বৈঠকের মধ্য দিয়ে সংলাপ শেষ হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *