আবরার ফাহাদের কথা মনে হলেই চোখে পানি চলে আসে।
আবরার ফাহাদ বেঁচে থাকাকালীন জন্মদিনে বাড়িতে বড় কোনো পার্টি না থাকলেও তার প্রিয় খাবার রান্না করা হতো। দুই ভাই মিলে সেসব খাবার খেত। আবরার ফাহাদ তার ছোট ভাই আবরার ফায়াজকে খুব ভালোবাসতেন। কিন্তু সেসব স্মৃতি এখন অতীত। ভাবলেই চোখে পানি চলে আসে। বাড়ির সবাই কষ্ট পায়। শনিবার বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদের জন্মদিন নিয়ে মোবাইল ফোনে কথা বলতে গিয়ে এভাবেই মনে করিয়ে দেন তার মা রোকেয়া খাতুন। বাবা বরকতুল্লাহ জানান, ছোট ছেলেও ইঞ্জিনিয়ারিং ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
আবরার ফায়াজও তার বড় ভাইয়ের জন্মদিন স্মরণ করেন। ফেসবুকে এক আবেগঘন স্ট্যাটাস দিয়েছেন তিনি। তিনি লিখেছেন, ‘আজ ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২২। ভাইয়ের ২৪তম জন্মদিন। বেঁচে থাকলে আজ তার বয়স হতো ২৫ বছর। কিন্তু দুই বছর চার মাস ভাইয়া আর আমাদের মাঝে নেই। আমাদের বাড়িতে কোনো ভাইয়ের জন্মদিন সেভাবে পালন করতে দেখিনি। বাবা থাকতেন না, আম্মা আমাদের সাথে একাই থাকতেন। তিনি বিশেষ কিছু রান্না করতেন, এবং তাতে দিন লেগে যেত। আমি হয়তো আমার ভাইকে দুবার শুভেচ্ছা জানিয়েছি। বেশি না. কিন্তু এখন এই দিনটিকে ঘিরে যে তীব্র শূন্যতা, তা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না।
আবরারের মা রোকেয়া খাতুন জানান, কয়েকদিন আগে আবরারের মামলার রায় হয়েছে। আমরা সব সময় এসব নিয়ে ভাবি। মন থেকে ছেলেটাকে কখনো ভুলতে পারবো না। তার বিভিন্ন স্মৃতি মনে আসে।
বাবা বরকতুল্লাহ বললেন, জন্মদিনের কথা ভেবে এখন কী হবে? একটি পুত্র হারানো আমাদের চিন্তা করা আরও কঠিন করে তোলে। তিনি আরও বলেন, কনিষ্ঠ পুত্রের অবস্থা তিনি দেখেছেন। তারা ঢাকায় আছেন, ফোনে কথা বলছেন।
২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর রাতে শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী আবরার ফাহাদকে তার কক্ষ থেকে ডেকে নিয়ে যায়। তারা তাকে ২০১১ নম্বর কক্ষে নিয়ে গিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে। পরে বিকেল ৩টার দিকে শেরেবাংলা হলের সিঁড়ি থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।