সাতকানিয়ায় ইউপি নির্বাচনে সহিংসতা।বোন বই হাতে, ছবি নিয়ে মা কাঁদছে

0

তসিবের বই নিয়ে কাঁদছেন তার বোন ইমু  তার পাশে তসিবের মা সখিনা তার ছেলের ছবি নিয়ে মাতম করছেন। ছয় বছর বয়সী ইভা তার মা ও বোনের দিকে শূন্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। মৃত্যুর কঠিন বাস্তবতা বোঝার বয়স তার হয়নি। তবে সে বুঝতে পেরেছে- তসিব ভাইকে নিয়ে সবাই কাঁদছে। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের মৌলভী দোকান থেকে পাঁচ কিলোমিটার পশ্চিমে নলুয়া ইউনিয়ন। তসিব ওই ইউনিয়নের মরফলা আরএমএন উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণিতে পড়ত। ইউপি নির্বাচনে ভোট দেখতে গিয়ে সহিংসতার শিকার হন তিনি। তবে নলুয়া ইউনিয়নে এখনো চলছে তার শোক।

ওপরে টিন। চারদিকে বাঁশের তাঁবু। পাশাপাশি তিনটি ছোট ঘর। সামনের ঘরে থাকতেন তসিব। সঙ্গে থাকতেন তার দাদা নুরুল ইসলাম। এই দাদা সারাদিনের তসিবের সঙ্গী ছিলেন। বিকেল ৪টায় তসিবের বাসার সামনে তার সঙ্গে দেখা হয়। সে রাস্তার পাশে বসে কাঁদছিল। তসিবের কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার নাতিকে নিয়ে এসো। ও আমার সাথে নামাজ পড়তে যেতেন। আমার সাথে ঘুমাতেন।

রিকশায় চেয়ারম্যান প্রার্থী লিয়াকত দিনভর ভোটারদের নিয়ে এসেছেন ও নিয়ে গেছেন। জসিম উদ্দিন। কিন্তু সেই লিয়াকতের অনুসারীরা রামদার রোষানলে প্রাণ হারায়- এই বেদনা ভুলতে পারেন না জসিম উদ্দিন। তাই ছেলের কথা ভাবতেই বারবার অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছেন। তসিবের সামনের ঘরে জসিমের সাথে দেখা হলো। তিনি অজ্ঞান হয়ে বিছানায় শুয়ে আছেন।

ইশতিয়াক সিকদার আরিয়ান তসিবের সাথে একই স্কুলে লেখাপড়া করেন। বাসার সামনে ওর সাথে দেখা। আরিয়ান বলেন, ‘আমরা একসঙ্গে স্কুলে যেতাম। আমার রোল নম্বর ৬৫; তসিবের বয়স ছিল ৩৫। সে স্কুলে সব সময় পড়া বলতে পারত। ভালো ফুটবলও খেলতেন। কিন্তু এখন সে চলে গেছে। আমি আর স্কুলে যেতে চাই না। ‘ ছোট্ট আরিয়ান এই কথাটা বলতেই তার চোখের কোণে জল গড়িয়ে পড়ল।

নির্বাচনে যাওয়ার সময় কেন এমন নৃশংস মৃত্যু কেউ জানে না। তসিবের মা সখিনা বেগম ছেলের ছবি বুকে নিয়ে শুধু চিৎকার করছিলেন। আর বিড়বিড় করে বলল, আমার ছেলেকে কে মেরেছে? কে আমার বুক খালি করেছে? ‘ এই প্রশ্নের উত্তর কেউ জানে না। ছুরিকাঘাতকারী ব্যক্তিকে এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *