অনুষদের মতামত ছাড়াই বাতিলের সিদ্ধান্ত!ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ঘ’ ইউনিট

0

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ‘ঘ’ ইউনিট ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষ থেকে বিলুপ্ত হওয়ার কথা ছিল। সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ ভর্তি কমিটির বিশেষ সভায় ইউনিট হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। একাডেমিক কাউন্সিলের পরবর্তী সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা না করেই ইউনিট বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের তৎকালীন ডিন বলেন যে ডিন কমিটির বৈঠকে এই বিষয়ে কোনও ঐকমত্য ছিল না যা ২০২০ সালে ডিনদের বৈঠকের আলোচনার পরে বাতিল করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান শিক্ষার্থীরাও চান ইউনিটটি বহাল থাকুক। বিষয়টি নিয়ে সোমবার ও মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্তরের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা হয়। তারা বলছেন, অনেক শিক্ষার্থী তাদের ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় ভালো ফল করতে না পারলেও ‘ডি’ ইউনিটের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পান। ‘ডি’ ইউনিট বাতিল হলে তারা আর সেই সুযোগ পাবেন না। এসব ভর্তির কথা বিবেচনা করে ইউনিট ঠিক রাখতে হবে।

সে সময় সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. সাদেকা হালিম বলেন, ২০২০ সালের ৮ নভেম্বর ডিন কমিটির বৈঠকের বিষয়ে আমাকে ভুলভাবে উদ্ধৃত করা হয়েছে। ওই বৈঠকে আমি এমন কোনো বক্তব্য দেইনি। সভা শেষে এটিকে আলোচনার বিষয় হিসেবে তুলে ধরা হয়। তখন আমি সিদ্ধান্ত নিলাম যে এত তাড়াতাড়ি এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে না। আমি বললাম, শিক্ষকরা শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে মতামত দেবেন। বৈঠকে ‘ঘ’ ইউনিট রাখার বিষয়টি উত্থাপন করেছি।

সাদেকা হালিম বলেন, আমরা ৮ নভেম্বরের পর অনুষদের সভা করেছি। সেখানে শিক্ষকরা ‘ঘ’ ইউনিট বাতিল না করার পক্ষে মত দিয়েছেন। তবে ২৩ নভেম্বর ভর্তি কমিটির সভায় যে সিদ্ধান্তের কথা বলা হচ্ছে। সম্পূর্ণ অযৌক্তিক।আমি পুরো ভর্তি কমিটির সামনে বলেছি, আলোচনা সাপেক্ষে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।তখন আমাদের কাউকে বলা হয়নি যে এমন সিদ্ধান্ত হয়েছে।বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (শিক্ষা) তখন গণমাধ্যমকে বলেন। যে ‘ঘ’ এবং ‘চ’ ইউনিট বাতিল করা হয়নি, তবে সংস্কার করা হবে।

ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী সাইফুল ইসলাম খান বলেন, ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা নিতে প্রশাসনকে অনেক ব্যবস্থা নিতে হয়। কোনো শিক্ষার্থী তার ইউনিটে চান্স না পেলে ‘ঘ’ ইউনিটে পরীক্ষা দেয়। অর্থাৎ একই শিক্ষার্থীকে ভর্তি করতে বিশ্ববিদ্যালয়কে অনেক খরচ ও ভোগান্তির মধ্য দিয়ে যেতে হয়। ‘ঘ’ ইউনিট বাতিল হলে আর থাকবে না। তবে এ সিদ্ধান্তের ফলে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী নিজ ইউনিটের বাইরে অন্য ইউনিটের বিভাগে ভর্তির সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে।

এ প্রসঙ্গে উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামান বলেন, মূল উদ্দেশ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের আসন সংখ্যা কমানো নয়, যৌক্তিকতার আলোকে আসন নির্ধারণ করা। সে অনুযায়ী কোনো বিভাগে আসন সংখ্যা বেড়েছে বা কমেছে। অন্যদিকে ‘ঘ’ ইউনিটের পরিবর্তে কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ নিয়ে একটি ইউনিট থাকবে। এ ছাড়া বিজ্ঞান বিভাগের সব অনুষদ নিয়ে একটি ইউনিট এবং বাণিজ্য বিভাগসহ আরেকটি ইউনিট থাকবে। এটা আগের সিদ্ধান্ত। ডিন সাব-কমিটিকে তাদের নিজস্ব ইউনিট ছাড়া অন্য ইউনিটে কীভাবে ভর্তি করা যায় সে বিষয়ে নীতিমালা প্রণয়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *