লক্ষ থেকে এখনো পিছিয়ে দেশ।দেশে করোনা টিকাদান কর্মসূচির এক বছর

0

চলতি ফেব্রুয়ারির মধ্যে দেশের ৮০ শতাংশ জনসংখ্যাকে টিকার আওতায় আনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার। গত জানুয়ারিতে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬৩ শতাংশ। তবে, বাস্তবে, ৫৭ শতাংশেরও বেশি লোককে টিকা দেওয়া হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে হলে ছুটির দিন ব্যতীত ১৮ দিনের মধ্যে ১৩ শতাংশ মানুষকে টিকা দিতে হবে। টিকাদানের গতি বাড়ায় ফেব্রুয়ারির মধ্যে এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করা সম্ভব হবে না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এরই প্রেক্ষিতে আজ দেশে করোনা টিকাদান কর্মসূচির এক বছর পূর্তি হচ্ছে।

এদিকে, এখনও ভ্যাকসিনের বাইরে থাকা জনসংখ্যার একটি বড় অংশ গ্রামীণ ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাস করছে। শুরু থেকেই টিকাদানে শহরের মতো গ্রামকে তেমন গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। এ কারণে টিকাদান কর্মসূচি নিয়ে এক ধরনের বৈষম্য তৈরি হয়েছে। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা গ্রামীণ ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে মনোযোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তারা বলছেন, জনসংখ্যার একটি বড় অংশকে বাদ দিয়ে করোনা প্রতিরোধের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হবে না। ভাইরাস নির্মূলের স্বার্থে বাদ পড়া জনগোষ্ঠীকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব টিকার আওতায় আনতে হবে। স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ মিলিয়ে ১৪ কোটি ৩৪ লাখ ৪০ হাজার ৬৪টি ডোজ ভ্যাকসিন বিতরণ করা হয়েছে। গত শনিবার পর্যন্ত প্রথম ডোজ নিয়েছেন ৯ কোটি ৭৯ লাখ ৩২ হাজার ১০৬ জন। যারা প্রথম ডোজ নিয়েছেন তাদের মধ্যে দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ছয় কোটি ৪৬ লাখ আট হাজার ৫৩৫ জন। একই সময়ে তৃতীয় বা বুস্টার ডোজ নিয়েছেন ১৯ লাখ ৭৫ হাজার ৩৬২ জন।

ইতিমধ্যেই কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে গ্রামীণ ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে টিকা দেওয়া শুরু হয়েছে। গত শনিবার পর্যন্ত এর মাধ্যমে ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ পেয়েছেন এক কোটি ৬১ লাখ ৩৬ হাজার ৪০৬ জন। যারা প্রথম ডোজ পেয়েছেন তাদের মধ্যে দ্বিতীয় ডোজ এক কোটি চার লাখ ৮ হাজার ৯২৮ ডোজ। গ্রামের কেউ এখনো বুস্টার ডোজ পায়নি। সব মিলিয়ে ১৬ কোটি ৫৫ লাখ ৬ হাজার ১৪টি ডোজ ভ্যাকসিন বিতরণ করা হয়েছে। এর মধ্যে গত ২১ দিনে ২ কোটি ২০ লাখ ৬৪ হাজার ১৪০ ডোজ বিতরণ করা হয়েছে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, বেশিরভাগ নগরবাসীকে টিকা দেওয়া হয়েছে। শহরের ভাসমান জনগোষ্ঠীকেও টিকা দেওয়া হয়েছে। এবার টার্গেট হবে গ্রাম ও প্রত্যন্ত এলাকা। সেখানকার মানুষের মধ্যে কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে টিকাদান কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এসব কার্যক্রমের গতি আরও বাড়ানো হবে। এর মাধ্যমে আমরা টিকাদানের কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জন করতে পারব।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, দেশে টিকাদান কার্যক্রমের মাঝপথে যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল তা এখন নেই। মোট ২৯ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন আসবে। ১২ কোটি মানুষকে টিকা দিতে হবে। সে হিসেবে  ২৪ কোটি ডোজ লাগবে। তারপরেও স্টকে থাকবে ৫ কোটি ডোজ। এরই মধ্যে বুস্টার ডোজও দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র করোনার চলমান বৃদ্ধির কারণে টিকা সহায়তা দ্বিগুণ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। ফলে ভ্যাকসিন নিয়ে আর কোনো সংকট থাকবে না।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর টিকাদান কর্মসূচির সমন্বয়ক মো. শামসুল হক বলেন, ফেব্রুয়ারির মধ্যে মোট জনসংখ্যার ৮০ শতাংশকে টিকার আওতায় আনার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *