এক মাসের মধ্যে নতুন শিক্ষালয়ের এমপিও

0

বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য সুখবর আসছে। আগামী এক মাসের মধ্যে নতুন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিও নিবন্ধন (মান্থলি পেমেন্ট অর্ডার-এমপিও) সম্পন্ন হতে যাচ্ছে। গত অক্টোবরে আবেদনের পর এমপিও পাওয়ার অপেক্ষায় সারাদেশের ৮ হাজারের বেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অন্তত ৯০ হাজার বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী। তবে সব আবেদনকারী প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হবে না।

প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি প্রতিষ্ঠানসহ প্রায় তিন হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হতে পারে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এই ৩,০০০ মধ্যে, অন্তত ১৮০০টি নতুন। বাকিগুলো পুরোনো প্রতিষ্ঠান। তবে এমপিও নিবন্ধনের মাত্রা পরিবর্তন হবে।

নতুন এমপিও নিবন্ধন কবে ঘোষণা করা হবে জানতে চাইলে এমপিও আবেদন যাচাই-বাছাই কমিটির চেয়ারপারসন এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (বেসরকারি) ফৌজিয়া জাফরিন শনিবার বলেন, ‘আমাদের কাজ (বেসরকারি)। যাচাই-বাছাই) চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। সামান্য কাজ বাকি। কিছু তথ্য পাওয়া বাকি। সেগুলো পেলেই আমাদের কাজ শেষ হয়ে যাবে। আমরা দ্রুত চেষ্টা করছি।’ “আশা করি, শেষের মধ্যে ঘোষণা হয়ে যাবে। ফেব্রুয়ারি বা মার্চের শুরুর দিকে তিনি বলেন।

তিন বছর পর আবারও এমপিওভুক্ত হচ্ছে নতুন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। একই সঙ্গে লেভেল পরিবর্তনের এমপিও দেওয়া হবে। গত ১০ অক্টোবর থেকে অনলাইন আবেদন শুরু হয়েছে। ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত আবেদনের সুযোগ ছিল। এমপিও নিবন্ধনের জন্য প্রায় ৮ হাজার আবেদন জমা পড়েছে।

এর মধ্যে রয়েছে প্রায় ৫ হাজার মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক এবং ডিগ্রি পর্যায়ের প্রতিষ্ঠান। বাকি তিন হাজার কারিগরি, বৃত্তিমূলক ও মাদ্রাসার আবেদন। বর্তমানে আবেদনপত্র যাচাই-বাছাইয়ের চূড়ান্ত পর্যায়ের কাজ চলছে। প্রশাসন (জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেলা পর্যায় থেকে প্রাথমিক তালিকায় অন্তর্ভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাধ্যমিক তথ্য সংগ্রহ করছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, নতুন শিক্ষা সচিবের যোগদানের কারণে কিছুটা বিলম্ব হলেও এমপিও নিবন্ধনের কাজ এখন পুরোদমে চলছে।

গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করতে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এরপর গত ৭ নভেম্বর এমপিও নিবন্ধনের আবেদন যাচাই-বাছাই করতে ৯ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। একই সঙ্গে কমিটিকে সহায়তার জন্য আরও চার সদস্যের একটি উপ-কমিটি গঠন করা হয়।

দেশে এখন পর্যন্ত এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা প্রায় ৩৩ হাজার। এখনো এমপিওভুক্ত নয় এমন প্রায় ৬ হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সর্বশেষ ২,৭৩০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হয় ২৩ অক্টোবর ২০১৯ তারিখে।

এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা তাদের মাসিক বেতনের মূল অংশ সরকারের কাছ থেকে পান এবং এক হাজার টাকা বাড়ি ভাড়া এবং ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা পান। এছাড়া দুই ঈদে শিক্ষকরা মূল বেতনের ২৫ শতাংশ এবং কর্মচারীরা ৫০ শতাংশ উৎসব ভাতা পান।

জানা গেছে, বর্তমানে সারাদেশে আট হাজারের বেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের অর্ধেক নতুন, বাকিগুলো এমপিওর আবেদনের অপেক্ষায়। নিম্ন মাধ্যমিক পর্যন্ত মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং উচ্চ মাধ্যমিক কলেজ ডিগ্রি পর্যন্ত এমপিওভুক্তিকে শিক্ষা প্রশাসনে ‘স্তরের পরিবর্তন’ বলা হয়।

নন-এমপিও শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি ও খুলনা মহানগরীর সোনাডাঙ্গায় খুলনা আইডিয়াল কলেজের অধ্যক্ষ গোলাম মাহমুদুন্নবী ডলার গতকাল বলেন, যাই হোক শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, প্রতি বছর এমপিও দেওয়া হবে। সর্বশেষ এমপিওভুক্তির আবেদন নেওয়া হয়েছিল ২৯ আগস্ট ২০১৮। এরই মধ্যে ৪ বছর পেরিয়ে গেছে। এত দিন পর এমপিও দেওয়া হলে অনেক প্রতিষ্ঠানের অপেক্ষমাণ আরও বাড়বে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *