চরাঞ্চলের  দিগন্ত জুড়ে সরিষার বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা

0

চাঁদপুর জেলার নদী উপকূলীয় উপজেলা ও চর এলাকাগুলো কৃষি চাষের অন্যতম এলাকা। সরিষার চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় এ বছর চর এলাকায় সরিষার আবাদ তুলনামূলক বেড়েছে। একই সঙ্গে এ বছর প্রথমবারের মতো অনাবাদি চারণভূমিতে সরিষার আবাদ করেছেন কৃষকরা। শুধু সদরের রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নের ৫টি মৌজায় চাষ হয়েছে ৫শ’ হেক্টর। তৃণভূমিতে দিগন্ত জুড়ে হলুদ আর হলুদ সরিষার ক্ষেত। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা। কৃষি বিভাগ বলছে, স্থানীয়ভাবে তেলের চাহিদা মেটাতে চরাঞ্চলে সরিষা চাষের পরিকল্পনা করা হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, রাজরাজেশ ইউনিয়নের মুগদী ও গোয়ালনগরের পশ্চিমে মেঘনা নদীর অধিকাংশ জমি সরিষায় ছেয়ে গেছে। এছাড়া অন্যান্য মৌসুমি ফসল থাকলেও কম।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর জেলার ৮টি উপজেলায় ৩৭৪০ হেক্টর জমিতে ধানের আবাদ হয়েছে। গত বছরের তুলনায় ২০০ হেক্টর বেশি। এর মধ্যে মালটাব উত্তর, চাঁদপুর সদর, হাইমচর উজেল্লার চরাঞ্চল এবং কচুয়া ও হাজীগঞ্জ উপজেলায় সরিষার আবাদ বেড়েছে। একই সঙ্গে চর এলাকার অনাবাদি জমিগুলো সরিষার মাধ্যমে চাষের আওতায় আনা হয়েছে।

রাজরাজেশ ইউনিয়নের মুগদির চরে জনবসতি কম। নদী ভাঙ্গনের শিকার। ইউসুফ আলী। তিনি এ বছর এখানে এসে অস্থায়ী ঘর তৈরি করে ৪ একর জমিতে সরিষার আবাদ করেছেন। তার সরিষা ক্ষেতে ভালো ফলন হয়েছে। ভালো দাম পাওয়ার আশা করছেন তিনি।

গোয়ালনগর চরের বাসিন্দা হাজের খাতুন জানান, এ বছর কুয়াশা থাকলেও সরিষার ফলন ভালো হয়েছে। তারা তাদের পরিবারের ভোজ্য তেলের চাহিদা মেটাতে সরিষা বিক্রি করে এবং তা তাদের পরিবারের জন্য ব্যবহার করে।

একই চরাঞ্চলের কৃষক আনোয়ার হোসেন জানান, প্রতি বছর তিনি তার জমিতে সরিষা চাষ করেন। এ বছরও করেছেন। এ বছর ফলন ভালো হলে আগামীতে করার পরিকল্পনা রয়েছে।

ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হযরত আলী বেপারী জানান, গত বছর সরিষার আবাদ ভালো হয়েছিল। এ কারণে এ বছর চরের ৫টি মৌজায় প্রায় ৫শ’ একর জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে। এ বছর সরিষা চাষে লাভজনক হলে আবারও আবাদ করবেন।

চাঁদপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ডাঃ সাফায়েত আহমদ সিদ্দিকী জানান, সরকার ঘোষিত তৈল ফসলের আবাদ বৃদ্ধিতে প্রণোদনা দেয়ায় সরিষা চাষ বেড়েছে। এ বছর আবাদ বেড়েছে ২০০ হেক্টর জমিতে। বিশেষ করে চর এলাকার অনাবাদি জমি এই সরিষা আবাদের আওতায় আনা হয়েছে। এক্ষেত্রে স্থানীয় জাতের সরিষা ব্যবহার করা হয়েছে। এতেই খুশি কৃষকরা। দিগন্ত জুড়ে হলুদ সরিষার ফুল। সেক্ষেত্রে ক্রমান্বয়ে চারণ এলাকায় সরিষার চাষ বাড়াতে পারলে স্থানীয় চাহিদা মেটাতে পারব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *