নারী কর কর্মকর্তাকে নির্যাতন।আসামি হুমকি দিচ্ছে, পুলিশ তাকে খুঁজে পাচ্ছে না
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) যুগ্ম কমিশনার মাসুমা খাতুনকে অপহরণের পর আট দিন নির্মম নির্যাতন চালিয়েও মাসুদ ওরফে মাসুমকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ তবে গত বুধ ও বৃহস্পতিবার মাসুদ ভুক্তভোগী কর্মকর্তার স্বামী ইলিয়াস খানকে ফোন করে ‘দেখে নেওয়ার’ হুমকি দেন। বিষয়টি তদন্ত কর্মকর্তাকে জানানো হলেও অভিযুক্তদের কোনো হদিস পায়নি পুলিশ।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রমনা মডেল থানার এসআই সহিদুল ওসমান মাসুম বলেন, আসামিদের গ্রেফতারের সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে। খুব শিগগিরই তাকে গ্রেফতার করা হবে।
গত ১৭ আগস্ট রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরীতে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ৯ নম্বর গেটের সামনে মাসুদসহ ১০-১২ জনের একটি দল মাসুমাকে মারধর করে। পরে সবুজবাগকে অপহরণ করে নন্দীপাড়া কবরস্থানের পাশে একটি বাড়ির গ্যারেজে গাড়িতে আটকে রাখে। পরদিন তিনি গাড়ি থেকে নেমে চিৎকার করলে আশপাশের লোকজন এসে তাকে উদ্ধার করে। এ সময় স্থানীয়রা তার প্রাইভেটকার ও মাসুদের তিন সহযোগীকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে।
শুক্রবার মাসুদার স্বামী ইলিয়াস অভিযোগ করেন, এ ঘটনায় তার স্ত্রীর গাড়ির সাবেক ও বর্তমান চালক ও তার সাবেক স্বামী হারুনুর রশিদ জড়িত। হারুন সাবেক কর কমিশনার ছিলেন বলে পুলিশ তেমন কিছু করছে না। মাসুমার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হতে আরও সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ইলিয়াস জানান, গত ১ আগস্ট সিলেটের টাঙ্গুয়ার হাওয়ারে পরিবার নিয়ে একসঙ্গে বেড়াতে গেলে চালক মাসুদ সেখানে দুর্ব্যবহার করেন। এ কারণে মাসুমা তার কাছ থেকে গাড়ির চাবি নিয়ে যান। এ ছাড়া তাকে অন্য হোটেলে থাকতে বলা হয়। কিন্তু সিলেটে না থেকে মাসুদ ঢাকায় এসে হারুনকে নিয়ে এ ঘটনার পরিকল্পনা করে।
গাড়ির বর্তমান চালক আনোয়ারও ওই চক্রের সদস্য। তিনিই মূলত তাদের মাসুমা সম্পর্কে তথ্য দিয়েছিলেন। ঘটনার দিন তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তারা অপহরণ করে। এরপর আনোয়ারও অপহরণকারী চক্রের সদস্যদের নিয়ে মোটরসাইকেলে চলে যায়। তার বাড়িও মাসুদের বাড়ি এলাকায়।
তিনি বলেন, মাসুমাকে অপহরণের দুই-তিন দিন আগে সন্ত্রাসীরা তাকে হুমকি দিয়ে বলেছিল, ধর্ষণের পর তোমাকে তোমার আগের স্বামীর কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হবে। মাসুমাকে উদ্ধারের পর মাসুদ ইলিয়াসকে হুমকি দিয়ে বলেন, তোমাকেও অপহরণ করা হবে। দেখুন কতক্ষণ পালাতে পারেন। আমি তোমাকে দেখে নিবো.
নিহতের স্বামী জানান, গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে তাদের বিয়ে হয়। তার আগের স্বামী ক্ষিপ্ত ছিল। সে মাসুমাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। অপহরণের ঘটনায় মাসুমসহ সাতজনকে অজ্ঞাত আসামি করে ছয়জনকে আসামি করে মামলা করেন ভিকটিম। এদের মধ্যে ইয়াসিন, সাইফুল ও আবুবকর নামে তিনজনকে আটক করা হয়েছে। তারা এখন কারাগারে।
রমনা মডেল থানার ওসি আবুল হাসান বলেন, মামলার তদন্ত চলছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত তিনজনকে আটক করা হয়েছে। তবে মামলার এক নম্বর আসামি মাসুদ এখনো গ্রেপ্তার হয়নি। নির্যাতিতার স্বামীর প্রতিনিয়ত হুমকির বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি অবগত নই।’