৫ লাখ ৫৫ হাজার ৬১৭ পরিবারকে ঘর দিতে পেরেছি: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করে যাচ্ছি। মানুষকে উন্নত জীবন দেওয়ার চেষ্টা করা। আজ আমি আনন্দিত যে আমরা এ পর্যন্ত ৩৩৪টি উপজেলাকে ভূমিহীন করতে পেরেছি। ১৯৯৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত আমরা ৫ লাখ ৫৫ হাজার ৬১৭ পরিবারকে বাড়ি দিতে পেরেছি।
বুধবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের মধ্যে জমি ও বাড়ি হস্তান্তর অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
সরকারপ্রধান বলেন, অনেক বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে ১৯৮১ সালে দেশে ফিরলে জিয়াউর রহমান আমাকে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়িতে ঢুকতে দেননি। যে বাড়িতে আমার বাবা-মা, ভাইকে হত্যা করা হয়েছিল সেখানে আমাকে নামাজ পড়তে দেওয়া হয়নি। রাস্তায় বসে নামাজ পড়লাম। বাড়িটি সিলগালা করা হয়। এমনকি বাড়িটি নিলামে তোলা হয়েছে। আমার ধৈর্য আছে। বাংলাদেশের মানুষের প্রতি আমার আস্থা ও বিশ্বাস আছে।
তিনি বলেন, সারা বাংলায় ঘুরছি। মানুষের কষ্ট দেখেছি। দুর্ভিক্ষ, বর্ষা, ঝড়, বন্যায় মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। লাখ লাখ মানুষ মারা যাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর ১৯৯৭ সালে ঘূর্ণিঝড় হয়েছিল। তারপর কক্সবাজার ও সেন্ট মার্টিন দ্বীপে ৭০টি পরিবার খুঁজে পেয়েছি যাদের কোনো জমি নেই, বাড়ি নেই। সেন্টমার্টিনে আওয়ামী লীগ নেতারা তাদের জমি দান করেছেন এসব ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য। সেখানে আমরা তাদের জন্য ঘর তৈরি করি। দুর্গম এলাকা হওয়ায় সেখানে পৌঁছানোও কঠিন ছিল। তাদের জন্য ঘর তৈরির দায়িত্ব নেয় নৌবাহিনী। এরপর থেকে শুরু হয় আশ্রয়ণ প্রকল্পের যাত্রা।
শেখ হাসিনা বলেন, এরপর থেকে আওয়ামী লীগ সরকার এদেশের মানুষকে ঘরবাড়ি নির্মাণ করে পুনর্বাসনে কাজ করে যাচ্ছে। আমি তাদের জীবনযাপনের পথ তৈরি করতে পেরেছি। আমাদের লক্ষ্য ছিল এদেশে একজন মানুষও ভূমিহীন থাকবে না।
অনুষ্ঠানে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে ২২ হাজার ১০১ পরিবারের হাতে নতুন ঘর তুলে দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের চতুর্থ ধাপের দ্বিতীয় ধাপে এসব বাড়ি দেওয়া হয়।
দুই শতাধিক একর জমিসহ অর্ধ-সজ্জিত এসব ঘর পরিবারকে বিনামূল্যে দেওয়া হয়। একই সঙ্গে দেশের ১২৩টি উপজেলাকে সম্পূর্ণ ভূমিহীন ও গৃহহীন ঘোষণা করেন সরকারপ্রধান। এর মধ্যে ১২টি জেলার সবকটি উপজেলা ভূমিহীন ও গৃহহীন হয়েছে।
ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী খুলনার তেরখাদা উপজেলার বারাসত সোনার বাংলা পল্লী, পাবনার বেড়া উপজেলার চাকলা আশ্রয়ণ-২ প্রকল্প এবং নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার আমানউল্লাহপুর আশ্রয়ণ প্রকল্পে তিনটি আশ্রয়ণ প্রকল্পে যোগ দেন।