ধনে পাতা বেশি খেলে কী মারাত্মক ক্ষতি জানলে চমকে উঠবেন
বাংলার সব খাবারেই ধনেপাতা নিত্যসঙ্গী। খাবারকে সুস্বাদু করতে এটি সর্বত্র ব্যবহৃত হয়। ধনে পাতা দিয়ে খাওয়ার মজাও আলাদা। কিন্তু খাবারের স্বাদ বাড়াতে এই পাতার অতিরিক্ত ব্যবহার শরীরের জন্য কতটা ক্ষতিকর তা জানলে চমকে যাবেন যে কেউ। তবে চলুন জেনে নেওয়া যাক ধনে পাতার অতিরিক্ত ব্যবহার কী কী ক্ষতি করে।
লিভারের ক্ষতিসাধন
অতিরিক্ত ধনে পাতা খাওয়া লিভারের কার্যকারিতাকে বিরূপভাবে প্রভাবিত করতে পারে। এতে এক ধরনের উদ্ভিজ্জ তেল শরীরের বিভিন্ন অঙ্গকে প্রভাবিত করে। এছাড়া এতে এক ধরনের শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে, যা সাধারণত লিভারের বিভিন্ন সমস্যা দূর করে কিন্তু শরীরে এর অতিরিক্ত উপস্থিতি লিভারের ক্ষতি করে।
শ্বাসকষ্ট
আপনি যদি শ্বাসকষ্টে ভুগছেন তাহলে এই ধনে পাতা খাওয়া এড়িয়ে চলুন। কারণ এটি আপনার জন্য শ্বাস নিতে কষ্ট করে, যার ফলে ফুসফুসে হাঁপানির সমস্যা হতে পারে। এই ধনেপাতা খেলে মাঝে মাঝে ছোট শ্বাস নিতে কষ্ট হয়।
পেট খারাপ
ধনেপাতা প্রাকৃতিকভাবে গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যা নিরাময় করে। কিন্তু ধনে পাতা বেশি খেলে পেটে হজমের সমস্যা হয়। গবেষণায় দেখা গেছে যে এক সপ্তাহে ২০০ মিলি সিলান্ট্রো খাওয়া গ্যাসের ব্যথা, পেটে ব্যথা, ফোলাভাব, বমি এবং এমনকি ডায়রিয়া কমাতে পারে।
নিম্ন রক্তচাপ
অতিরিক্ত ধনে পাতা খেলে শরীরের হার্টের স্বাস্থ্যের ক্ষতি হতে পারে। এর ফলে রক্তচাপ কম হয়। উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে বিশেষজ্ঞরা এই ধনে পাতা খাওয়ার পরামর্শ দেন। তাই এটির অত্যধিক সেবনে নিম্ন রক্তচাপ হতে পারে। এটি হালকা মাথাব্যথাও ট্রিগার করতে পারে।
ডায়রিয়া
অল্প পরিমাণে ধনে পাতা খাওয়া পেটের সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে, তবে অতিরিক্ত পরিমাণে ডায়রিয়া হতে পারে। এতে পানিশূন্যতাও হয়। ফলে ডায়রিয়ার সমস্যা চলতেই থাকে। তাই এ ধরনের সমস্যা এড়াতে প্রতিদিনের খাবারে ধনেপাতা কম পরিমাণে খান।
বুক ব্যাথা
অধিক ধনেপাতা খাওয়ার ফলে বুকে ব্যথার মতো গুরুতর সমস্যাও হতে পারে। এটি শুধুমাত্র অস্বস্তিকর ব্যথা সৃষ্টি করে না তবে এটি দীর্ঘকাল স্থায়ী হয়। তাই এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে প্রতিদিনের খাবারে ধনে পাতা কম খেতে পারেন।
ত্বকের সংবেদনশীলতা
সবুজ ধনে পাতায় কিছু ঔষধি অম্লীয় গুণ রয়েছে যা ত্বককে সূর্যের রশ্মি থেকে রক্ষা করে এবং সংবেদনশীল করে। কিন্তু অতিরিক্ত সেবনে সূর্যের রশ্মি ত্বকে একেবারেই প্রবেশ করতে পারে না। ফলে ত্বক ভিটামিন কে থেকে বঞ্চিত হয়। এছাড়া ধনেপাতা ত্বকের ক্যান্সার প্রবণ করে তোলে।
ভ্রূণের ক্ষতি
গর্ভাবস্থায় খুব বেশি ধনে পাতা খাওয়া ভ্রূণ বা শিশুর জন্য খুবই ক্ষতিকর। ধনে পাতার কিছু উপাদান নারী প্রজনন গ্রন্থির কার্যকারিতা নষ্ট করতে পারে। ফলে নারীরা গর্ভধারণের ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। আপনি গর্ভধারণ করলেও ধনে পাতা গর্ভাবস্থায় ভ্রূণের মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে।
এলার্জি সমস্যা
ধনেপাতার প্রোটিন উপাদান শরীরে আইজিই নামক অ্যান্টিবডি তৈরি করে, যা শরীরের বিভিন্ন রাসায়নিক উপাদান সমানভাবে বহন করে। কিন্তু এর আধিক্য উপাদানের ভারসাম্য নষ্ট করে। ফলস্বরূপ, অ্যালার্জি বিকাশ। এই অ্যালার্জির ফলে শরীরে চুলকানি, ফোলাভাব, জ্বালাপোড়া, ফুসকুড়িসহ নানা সমস্যা দেখা দেয়।
মুখের প্রদাহ
অত্যধিক ধনিয়া সেবনের আরেকটি বিশেষ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হল মুখের প্রদাহ। এই ভেষজটির বিভিন্ন অ্যাসিডিক উপাদান আমাদের ত্বককে সংবেদনশীল করে, পাশাপাশি মুখের মধ্যে প্রদাহ সৃষ্টি করে। এটি বিশেষ করে ঠোঁট, মাড়ি এবং গলা ব্যথা করে। পুরো মুখ লাল হয়ে যেতে পারে।