হলফনামায় তথ্যের গোপনীয়তা।’নির্বাচিত হওয়ার পর ইসির কিছু করার নেই’
নির্বাচন কমিশনার বলেন, হলফনামায় তথ্য গোপন থাকলেও নির্বাচিত হওয়ার পর নির্বাচন কমিশন (ইসি) কিছুই করে না। আলমগীর। তিনি বলেন, নির্বাচনের আগে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে প্রার্থীদের জমা দেওয়া হলফনামা প্রকাশ করা ইসির কাজ। হলফনামায় ভুল বা মিথ্যা তথ্য দিলে নির্বাচনের আগে কেউ চ্যালেঞ্জ করলে তা যাচাই-বাছাই করে ব্যবস্থা নিতে পারে কমিশন। কিন্তু নির্বাচিত হওয়ার পর ইসির কিছু করার নেই।
রোববার রাজধানীর আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আবদুস সোবহান হলফনামায় সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন এমন অভিযোগের বিষয়ে তার কাছে জানতে চাওয়া হয়। ইসি আলমগীর আরও বলেন, তথ্য গোপনের বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, দুর্নীতি দমন কমিশন বা আদালত ইসিকে শাস্তিমূলক ব্যবস্থার কথা জানালে তারা আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন।
ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্য ড. আবদুস সোবহান মিয়া (রোজ) যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে ৪ মিলিয়ন ডলার ব্যয়ে বেশ কয়েকটি বাড়ি কিনেছেন বলে জানা গেছে। নির্বাচনী হলফনামায় তিনি এ কথা উল্লেখ করেননি। অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের একটি বৈশ্বিক নেটওয়ার্ক অর্গানাইজড ক্রাইম অ্যান্ড করাপশন রিপোর্টিং প্রজেক্ট (ওসিসিআরপি) তাদের ওয়েবসাইটে এক প্রতিবেদনে এ কথা জানিয়েছে। এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ড. আলমগীর বলেন, হলফনামায় মিথ্যা তথ্যের ওপর ভিত্তি করে কিছু করার কোনো আইন নেই। হলফনামা জাতিকে জানাতে হবে। এর সঙ্গে দুর্নীতির কিছু পাওয়া গেলে তা খতিয়ে দেখবে দুদক। প্রমাণ পেলে আদালতে মামলা করবেন। ট্যাক্স না দিলে, সম্পদ বিবরণীতে না দেখালে রাজস্ব বোর্ডও এটা করতে পারে। ‘
আবদুস সোবহান দ্বৈত নাগরিকত্ব নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন এমন অভিযোগের বিষয়ে ড. আলমগীর বলেন, ‘বিদেশি নাগরিকরা ভোট দিতে পারবেন না। এটা কি প্রমাণ করে? নাগরিকত্বের বিষয়টি দেখছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তারা রিপোর্ট করলে আমরা আইন অনুযায়ী বিষয়টি দেখব।’ কেউ মিথ্যা তথ্য দিলে বা তথ্য গোপন করলে তিনি কি প্রার্থী হতে পারেন- এমন প্রশ্নের জবাবে ড. আলমগীর বলেন, ‘ভুল তথ্য দিলে প্রার্থী হতে পারবেন না। কোনো ভুল তথ্য নির্বাচনের জন্য যোগ্য হবে না। কেউ চ্যালেঞ্জ না করলে এবং নির্বাচিত হলে পরবর্তীতে কিছু করলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ নির্বাচন কমিশনার বলেন, হলফনামায় তথ্য যাচাইয়ের ক্ষমতা ইসিকে দেওয়া হয়নি। তবে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় কোনো চ্যালেঞ্জ করা হলে যাচাই-বাছাইকালে তা প্রমাণিত হলে মনোনয়নপত্র বাতিল করা হবে। এটা ইসির ক্ষমতা। এর পরে, এটি একটি জালিয়াতির মামলা হবে। এই ধারায় শাস্তি দেওয়ার ক্ষমতা আদালতের আছে। আদালতের পদক্ষেপের কথা জানালে ব্যবস্থা নেবে ইসি।
ভোটার তালিকা প্রকাশের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, খসড়া ভোটার তালিকা দেওয়া হয়েছে। মার্চে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। কারো কোনো আপত্তি থাকলে তিনি আপত্তি করবেন। কোনো ভুল থাকলে সংশোধনের জন্য আবেদন করতে পারেন। পরে ভোটার দিবসে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করবে ইসি।