বিশ্বকাপ।শুধু নেই তিনি
কাতারের স্পোর্টস মিউজিয়ামে এখনও সেই জার্সি রয়েছে তার। ১৯৮৬ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যারাডোনা ইতিহাস গড়েন। এবারের বিশ্বকাপ উপলক্ষে কাতারের আমিরের ইচ্ছায় রেখে দেওয়া হয়েছে। মনে করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলেন- এই বিশ্বকাপে তিনি আছেন! তবে স্মৃতিসৌধে শুধু জার্সি দেখেই তাকে চেনা যাবে না।
চোখে কালো চশমা, মুখে সিগারেট- নিরাপত্তারক্ষীদের ভিড় ঠেলে গাড়ি থেকে নামছে। গার্লফ্রেন্ডের সাথে খেলা দেখতে এসো, কখনো খুশি হও, কখনো হতাশায় হাত-পা ছুড়ে দাও। এই বিশ্বকাপ মিস করবে গত কয়েক দশকের চেনা দৃশ্য। তার প্রিয় লিওর শেষ বিশ্বকাপে শিশুর মতো কাতার না এসে কি থাকতে পারতেন? সেদিন আর্জেন্টিনা দলের সাথে অনুশীলনে যাওয়ার সময় দেখা হয় ম্যাক্স রদ্রিগেজের সাথে। ২০০৬ বিশ্বকাপে খেলেছেন। এখন একটি জনপ্রিয় চ্যানেলের জন্য কাতারে এসেছেন রোজারিও। জানালেন ম্যারাডোনাকে ছাড়া বিশ্বকাপ কতটা মিস করেন তারা। ‘সত্যি বলতে, আমরা তাকে অনেক মিস করি। তার আবেগ, তার উন্মাদনা… সবকিছু, সবকিছু প্রতি বিশ্বকাপের আগে সে স্বপ্ন দেখতেন- এবার হয়তো আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপ জিতবে, এবং প্রতিবারই তিনি হতাশ হয়ে কোচ এবং ফুটবল সংস্থার কর্মকর্তাদের বকাঝকা করতেন। লোকটা এখন চলে গেছে।’
তিনি বলেন, মেসির গত বিশ্বকাপ উপলক্ষে আর্জেন্টিনা ফুটবল সংস্থা বেশ কয়েকজন বিশ্বকাপজয়ীকে কাতারে নিয়ে আসে। রঙ Tapia, Riccardo Giusti এবং হেক্টর এরিক.৮৬এর সেই সোনালী দলের অনেকেই টিকেনি। ২৬ জনের মধ্যে ২৩ জন আছে। কিন্তু সবাই তো আর ফুটবলের সঙ্গে নেই। ম্যারাডোনা বেঁচে থাকলে আর্জেন্টিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন তাকে কাতারে আমন্ত্রণ জানাত। অবশ্য আর্জেন্টিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে তাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল! তিনি বারবার নিজ খরচে বিশ্বকাপে এসে মেসির জন্য উল্লাস করেছেন। তা ছাড়া মধ্যপ্রাচ্যের আমির পরিবারের সঙ্গে তার সম্পর্ক খুবই গভীর। তিনি একবার সংযুক্ত আরব আমিরাতে একটি ক্লাবের কোচ ছিলেন। কাতারের আমিরের সঙ্গে তার ছবিও রয়েছে। আর্জেন্টিনার এক সাংবাদিক বলেছেন, ম্যারাডোনা না থাকলেও তার মেয়ে এখানে আসছে।
তাকে দেখলে হয়তো ম্যারাডোনার সেই মুখটা মনে পড়বে। এমনকি ২০১০ সালের বিশ্বকাপেও তার পাশে বসে থাকা দুই মেয়ের সাথে একটি বিখ্যাত ছবি রয়েছে।
মেসির কথা কি মনে থাকবে না? অনুসন্ধিৎসু মন কার কাছে উত্তর খুঁজবে? ম্যারাডোনা সম্পর্কে মেসি কখনোই বেশি কথা বলেননি। মানুষ তার না বলা অনেক গল্প খুঁজে পেয়েছে। মেসির সঙ্গে ম্যারাডোনার দূরত্ব ২০১০ বিশ্বকাপ থেকেই। ম্যারাডোনাও তার কলামে লিখেছেন, ‘মেসি একজন বোকা অধিনায়ক’। এর পর তিনি আবার বললেন, ‘আমি তাকে ভালোবাসি, সে ঈশ্বরের সন্তান। তিনি আর্জেন্টিনাকে বিশ্বকাপ এনে দিতে পারবেন। এসবই মিডিয়ায় এসেছে। এদিন মেসির পরম বন্ধু ও ম্যারাডোনার সাবেক জামাতা আগুয়েরো বলেন, দুজনের মধ্যে তুলনা তিনি কখনোই পছন্দ করেন না। দুই প্রজন্মের সেরা দুইজন।
ম্যারাডোনার মৃত্যুর পর কোপা আমেরিকায় প্রিয় মানুষটির ছবি দিয়ে জার্সি পরে মাঠে নামেন মেসি। মেসিকে তার দীর্ঘ ক্যারিয়ারে ম্যারাডোনা সম্পর্কে অসম্মানজনক কিছু বলতে শোনা যায়নি। ম্যারাডোনাকে মনে মনে নিয়ে বিশ্বকাপে নামবেন মেসি। টানা ৩৬ ম্যাচে অপরাজিত থাকার পর আজ মাঠে নামছে আর্জেন্টিনা। আগে যেসব বিশেষজ্ঞের সমালোচনা করতেন তাদের অনেকেই এখন তার দেশকে ফেভারিটের তালিকায় রাখছেন। তিনি বেঁচে থাকলে গর্ববোধ করতেন। তিনি হয়তো অনন্তকাল থেকে তার ‘ঈশ্বরের সন্তান’কে আশীর্বাদ করছেন। হয়তো