হুমায়ুন জয়ন্তী।দুই লেখকের হাতে এক্সিম ব্যাংক-অ্ন্যদিন পুরস্কার

0

তিনি সাহিত্যে শব্দের জাদু সৃষ্টি করতেন। সেই রহস্যময় মায়াজালে আটকা পড়েন পাঠক। জীবনের অনেক কঠিন সত্যকে তিনি সহজ ভাষায় তুলে ধরেছেন। হুমায়ূন আহমেদ চলে গেলেও তার সাহিত্য রয়ে গেছে। তিনি রয়ে গেছেন মানুষের হৃদয়ে। তার ৭৫তম জন্মদিনের আগে শনিবার বিকেলে বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদ মিলনায়তনে আনুষ্ঠানিকভাবে দুই কথাসাহিত্যিকের হাতে ‘এক্সিম ব্যাংক-অন্যদিন হুমায়ূন আহমেদ সাহিত্য পুরস্কার ২০২২’ তুলে দেওয়া হয়। এবারের পুরস্কার পেয়েছেন আনোয়ারা সৈয়দ হক ও মৌরী মরিয়ম।

সাহিত্যে সামগ্রিক অবদানের জন্য আনোয়ারা সৈয়দ হক এবং জুনিয়র সাহিত্য ক্যাটাগরিতে ‘ফানুস’ উপন্যাসের জন্য মৌরী মরিয়ম (৪০ বছরের নিচে)। ক্রেস্ট, নর্দান ও সার্টিফিকেট ছাড়াও প্রাইজমানি হিসেবে পেয়েছেন যথাক্রমে ৫ লাখ ও ১ লাখ টাকা।

শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যার কণ্ঠে রবীন্দ্রসঙ্গীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। তিনি ‘আজ জ্যোৎস্না রাত সিয়া গায়ে বন’ এবং ‘দুরে খে দুরি দুরি দুরি’ গেয়েছেন। প্রয়াত কথাসাহিত্যিকের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওনও মিলনায়তনে উপস্থিত ছিলেন।

পুরস্কার প্রাপ্তির অনুভূতি ব্যক্ত করে আনোয়ারা সৈয়দ হক বলেন, আজ তার জীবনের বিশেষ দিন। এত বড় পুরস্কার তিনি আগে কখনো পাননি। পুরস্কারের অর্থ তিনি তার শৈশবের স্কুলের দরিদ্র শিশুদের জন্য দান করবেন। সব্যসাচী লেখক প্রয়াত সৈয়দ শামসুল হকের স্ত্রী ডা. তিনি লেখার সাথে ছিলেন, তিনি বলেন, হুমায়ূন আহমেদ মানুষের সঙ্গে মিশতে চেয়েছিলেন। তার নাটক সব বয়সের মানুষকে আনন্দ দেয়। হুমায়ূন আহমেদের ভেতরে একটা উন্মাদনা ছিল। জীবনের কঠিন বিষয়গুলোকে তিনি সহজ করে দিয়েছেন।

মৌরী মরিয়ম তার অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন, হুমায়ূন আহমেদ শুধু তার প্রিয় লেখক নন, তিনি তার ‘অবসেশন’। তাঁর নামে একটি পদক পেয়ে তিনি ধন্য।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষিমন্ত্রী মো. আবদুর রাজ্জাক। বিশেষ অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পুরস্কারের জন্য গঠিত জুরির সভাপতি প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম। এক্সিম ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহ মোঃ আব্দুল বারী, সুরকার ও হুমায়ূনের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন। পুরস্কার পাঠ করেন জুরির সম্মানিত সদস্য শিক্ষাবিদ সৈয়দ আজিজুল হক ও কবি বিশ্বজিৎ চৌধুরী।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধে অসাম্প্রদায়িক চেতনা সৃষ্টিতে লেখকদের ভূমিকা মহান। সেই সাম্য ও আইনের ভিত্তিতে সমাজ ও রাষ্ট্রব্যবস্থা বিনির্মাণে শিল্পী-সাহিত্যিকরা প্রধান ভূমিকা পালন করেছেন। দেশপ্রেম থাকতে হলে দেশকে গভীরভাবে দেখতে হবে। তিনি বলেন, হুমায়ূন আহমেদ দেশকে গভীরভাবে দেখেছেন। তার ছিল দেশপ্রেম, মানুষের প্রতি ভালোবাসা। তার স্থান হবে অনেক উঁচুতে।

সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন, হুমায়ূন আহমেদের লেখা সবাইকে মুগ্ধ করে। এমনই এক সাহিত্য শতবর্ষ আসে।

সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, যোগ্য ব্যক্তিদের এই সাহিত্য পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। সাহিত্য পুরস্কার লাভের বিষয় নয়, অনুপ্রেরণা ও সম্মানের বিষয়।

মেহের আফরোজ শাওন বলেন, আট বছরে হুমায়ূন আহমেদের সাহিত্য পুরস্কারে অনেক প্রিয়জন এসেছেন। আজ তাদের অনেক নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *