চট্টগ্রামে নানা উদ্যোগে লাফিয়ে বাড়ছে ইলিশ

0

বছরের নির্দিষ্ট সময়ে মাছ শিকার বন্ধ করে জাটকা নিধন কম হয়। ইলিশের উৎপাদন বাড়ছে। পাশাপাশি ইলিশের ঐতিহ্যও ফিরে আসছে। গত এক বছরে চট্টগ্রামে ইলিশের উৎপাদন বেড়েছে ৪৮৭ টন। গত ২০২০-২১ অর্থবছরে ৬ হাজার ৯৫৬ দশমিক ৬৩ টন ইলিশ ধরা পড়লেও ২০২১-২২ অর্থবছরে পাওয়া গেছে ৭ হাজার ৪৪৩ দশমিক ৬২ টন ইলিশ।

২০১৯-২০ অর্থবছরে চট্টগ্রামে ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে ৫ হাজার ৬৮৩ দশমিক ৭১ টন। এ হিসাবে দুই বছরের ব্যবধানে প্রায় ১ হাজার ৭৬০ টন ইলিশ পাওয়া গেছে। এতে বোঝা যায় ইলিশের উৎপাদন কীভাবে বাড়ছে। আর উৎপাদন শুধু বাড়ছেই না; বড় সাইজের ইলিশও পাওয়া যাচ্ছে। ৬৫ দিনের সরকারি নিষেধাজ্ঞার পর গত শনিবার রাত থেকে আবারও বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরা শুরু হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইলিশ আমাদের জাতীয় মাছ। অর্থনীতিতে এর বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। তাই ইলিশ উৎপাদনে ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে চলমান প্রকল্পগুলো অব্যাহত রাখার পাশাপাশি জেলেদের আরও সম্পৃক্ত করতে বিভিন্ন উদ্যোগ নিতে হবে। প্রকৃত জেলেদের আরও প্রণোদনা দিতে হবে। তবেই ভবিষ্যতে আরও সুবিধা পাবেন।

চট্টগ্রাম জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফারহানা লাভলী বলেন, সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগে ইলিশের উৎপাদন দিন দিন বাড়ছে। প্রজনন মৌসুমে ২২ দিন ইলিশ সংগ্রহ, পরিবহন, বিপণন, মজুদ, ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ করলে ভালো সুফল পাওয়া যাচ্ছে। আর নভেম্বর থেকে জুন- এই আট মাস জাটকা মাছ ধরা বন্ধ থাকে এবং ৬৫ দিন সাগরে মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকে, এতে ইলিশের আকার বাড়ে। সব মিলিয়ে ইলিশ উৎপাদনে চলমান উদ্যোগ অব্যাহত থাকলে আশানুরূপ ইলিশ পাওয়া যাবে।

এর আগে নির্বিচারে ইলিশ আহরণ ও নির্বিচারে জাটকা নিধনের ফলে দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মতো চট্টগ্রামেও ইলিশের উৎপাদন তলানিতে পড়ে। বিশেষ করে ডিমওয়ালা ইলিশ শিকারের ফলে মাছের উৎপাদন আশঙ্কাজনক হারে কমে যাচ্ছে। তবে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের ফলে কয়েক বছর ধরে ধীরে ধীরে ইলিশের উৎপাদন বাড়ছে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মঞ্জুরুল কিবরিয়া  বলেন, ইলিশ উৎপাদনে সরকারের বহুমুখী উদ্যোগ কাজ করেছে। উৎপাদন বৃদ্ধি একই ইঙ্গিত বহন করে। তবে অধিক উৎপাদন নিশ্চিত করতে ইলিশ রক্ষায় যেসব প্রকল্প সফলতা এনেছে সেগুলো অব্যাহত রাখতে হবে। মনে রাখতে হবে জেলেদের আত্মত্যাগের কারণেই এ সাফল্য এসেছে। ফলে ভবিষ্যতে আরও সংখ্যক জেলেকে প্রণোদনার আওতায় আনতে হবে। প্রকৃত জেলেরা যাতে সুফল পান তা নিশ্চিত করতে হবে। এভাবেই একদিন ইলিশ নিয়ে আমাদের ঐতিহ্য ফিরে আসবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *