অফিসে ২৫% বিদ্যুৎ কমানোসহ ৮ সিদ্ধান্ত

0

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সংকট মোকাবিলায় সরকারি অফিসে বিদ্যুতের ব্যবহার ২৫ শতাংশ কমানো, খরচ সাশ্রয় এবং দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আটটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। একই সঙ্গে বিভিন্ন সরকারি দফতরকে জ্বালানি খাতে বাজেট বরাদ্দের ২০ শতাংশ কম ব্যবহার করতে বলা হয়েছে। বিশেষ করে জ্বালানি তেলের ব্যবহার কমানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। একেবারে প্রয়োজনীয় না হলে সশরীরে সভা এবং বিদেশ ভ্রমণ এড়ানোর সিদ্ধান্তও তুলে ধরেন। গতকাল বুধবার প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. আহমদ কায়কাউস উচ্চপর্যায়ের বৈঠকের পর এসব সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন। সরকারের ব্যয় সাশ্রয় করতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিবরা অংশ নেন।

সভার সিদ্ধান্ত: ১. সমস্ত মন্ত্রণালয় (মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ সকল দপ্তর) বিদ্যুৎ  ব্যবহার কমাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। সব সরকারি অফিসে বিদ্যুতের ব্যবহার ২৫% কমাতে হবে। ২. জ্বালানি খাতে বাজেট বরাদ্দ ২০ শতাংশ কমাতে অর্থ বিভাগ প্রয়োজনীয় সার্কুলার জারি করবে। অর্থাৎ তেল ব্যবহারকারী সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বরাদ্দ ২০ শতাংশ কমানো হবে। ৩. ব্যক্তিগত মিটিং এড়ানো উচিত যদি না অনিবার্য এবং বেশিরভাগ মিটিং অনলাইনে অনুষ্ঠিত হবে। ৪. অত্যাবশ্যকীয় না হলে, বিদেশ ভ্রমণ যতটা সম্ভব এড়ানো উচিত। ৫. নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় রাখতে বাজার মনিটরিং, মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে মজুদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণসহ অন্যান্য ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে। ৬. শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবহার যৌক্তিক করার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেবে। ৭. অভ্যন্তরীণ সম্পদ সংগ্রহ বাড়ানোর জন্য আর্থিক বছরের শুরু থেকেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে এবং লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য এনবিআরকে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। ৮. প্রতিটি মন্ত্রণালয় তার নিজস্ব সংগ্রহ পরিকল্পনা পর্যালোচনা করবে এবং রাজস্ব ব্যয় কমানোর উদ্যোগ নেবে।

বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে মুখ্য সচিব বলেন, জ্বালানি সাশ্রয়ের পাশাপাশি দাম পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাজার মনিটরিংয়ের পাশাপাশি কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা অফিস-আদালতে বিদ্যুতের ব্যবহার কমাতে পারি, যাতে উৎপাদন খুব বেশি ব্যাহত না হয়। আমরা যদি অফিসে দুটির পরিবর্তে একটি ফ্যান চালাই তবে আমরা কাজ করতে পারি। সেজন্য আমরা সরকারী অফিসে বিদ্যুতের ব্যবহার সহনীয় পর্যায়ে ২৫ শতাংশ কমানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছি।

একই সঙ্গে সরকারি অফিসে জ্বালানি খাতে বাজেট বরাদ্দের ২০ শতাংশ কম ব্যবহার করতে অর্থ বিভাগ থেকে সার্কুলার জারির সিদ্ধান্তের কথা জানান তিনি। তিনি বলেন, অনেক আগেই এ খাতে বরাদ্দের ১০ শতাংশের কম ব্যবহার করতে বলা হয়েছিল। এখন বলা হচ্ছে- যারা জ্বালানি ব্যবহার করবেন, তারা এখনকার তুলনায় ২০ শতাংশ কম ব্যবহার করবেন।

এর আগে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে একটি সার্কুলার জারি করে অফিসগুলোতে এসির তাপমাত্রা ২৪ ডিগ্রি রাখতে বলা হয়েছিল। আবার আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে এসির তাপমাত্রা ২৪/২৫ ডিগ্রির কম হবে না। এতে বিদ্যুতের ব্যবহার কিছুটা হলেও কমবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নির্দেশনা তুলে ধরে মুখ্য সচিব বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনেক যানবাহন চলাচল করে। তেল ও বিদ্যুতের ব্যবহার আছে। আমরা শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়কে বলেছি শিক্ষার্থীরা যেন ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহার করে।

বাস বা মাইক্রোবাসে শিক্ষার্থীদের যাতায়াত কীভাবে নিশ্চিত করা যায় সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কথা বলে পদ্ধতি নির্ধারণ করতে বলা হয়েছে মন্ত্রণালয়কে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *