সিলেট পিবিআই’র তদন্ত।জুলমত ঋণের হাত থেকে বাঁচতে আত্মগোপন করে
কয়েক মাস ধরে সিলেটে ফেঞ্চুগঞ্জে অপহরণের বিষয়টি আলোচিত হচ্ছিল। সম্প্রতি মামলার বিচার বিভাগীয় তদন্ত শেষে অপহৃত ভিকটিমকে উদ্ধার করতেও পিবিআইকে নির্দেশ দেন বিচারিক আদালতের বিচারক। এরপর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) সদস্যরা নিহতের খোঁজে যান। ৭ মাসের তদন্তে আলোচিত অপহরণ মামলার রহস্য উদঘাটনের পাশাপাশি অভিযুক্ত অপহরণকারীকে উদ্ধার করে আদালতের মাধ্যমে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
পিবিআই জানায়, ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার পূর্ব যুধিষ্ঠিপুর গ্রামের বাসিন্দা জুলমতকে ২০২১ সালের ৮ অক্টোবর সিলেটের একটি আদালতে তার স্ত্রী লিপি বেগম অপহরণ করে। মামলায় একই গ্রামের রুফাই মিয়া, তখাই মিয়া ও জিলু মিয়াকে আসামি করা হয়। ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত করতে পিবিআইকে নির্দেশ দেন আদালত। তদন্তে তারা জানতে পারেন, ঘটনাটি সাজানো নাটক। এরপর তাদের কাছে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতে থাকে। তদন্তে একপর্যায়ে অপহরণ ও গুমের বিষয়টি বেরিয়ে আসে।
পিবিআই জানায়, প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে স্বামীকে লুকিয়ে রেখে অপহরণ মামলা করেন লিপি বেগম। ২০২১ সালের ৫ অক্টোবর রাতে কাউকে কিছু না জানিয়ে জুলমত চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা হন। সেখানে গিয়ে রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। এদিকে তার স্ত্রী রুফাই, তখাই ও জিলু মিয়ার বিরুদ্ধে সিলেটের আদালতে অপহরণের মামলা করেন। গত রোববার চট্টগ্রামের চকবাজার থেকে আত্মগোপনে থাকা জুলমতকে উদ্ধার করে পিবিআই। সোমবার তাকে পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
পিবিআই সূত্রে জানা গেছে, জুলমত পেশায় রাজমিস্ত্রি। তিনি দীর্ঘদিন দুবাইয়ে ছিলেন। প্রবাস থেকে দেশে ফিরে মাছ ধরার ছাইয়ের ব্যবসা করতেন। এক পর্যায়ে ব্যবসা করার জন্য এলাকার বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা ধার নেন। ব্যবসায় ক্ষতির জন্য চিন্তিত। জুলমত একটি এনজিও থেকেও কিস্তি নিয়েছিলেন, যার কাছ থেকে তিনি টাকা ধার করেছিলেন, কিন্তু যখন তিনি টাকা ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তখন তিনি পরিশোধ করতে ধীর হয়েছিলেন। একপর্যায়ে তিনি বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
সিলেট জেলা পিবিআইয়ের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. শাহ ফজলে আজিম পাটোয়ারী বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে তাকে নির্যাতন করা হয়েছে এবং তাকে কেউ অপহরণ করেনি। ঋণ পরিশোধ করতে না পারায় কাউকে কিছু না বলে আত্মগোপনে ছিলেন তিনি। প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর জন্য তার স্ত্রী সিলেটের আদালতে অপহরণ মামলা করেন।