পদ্মা সেতুতে তিন বিশ্ব রেকর্ড
পদ্মা সেতু দেশের দীর্ঘতম সেতু। পদ্মা নদী জলপ্রবাহের দিক থেকে আমাজনের পরে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম নদী। পদ্মায় সেতু নির্মাণ করে তিনটি বিশ্ব রেকর্ড গড়েছেন প্রমত্তা। কারিগরি ও প্রাকৃতিক বাধা অতিক্রম করে নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত পদ্মা সেতু শুধু বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্ভাবনারই প্রতীক নয়, এটি নজিরবিহীন।
পদ্মা সেতুর পিলারের সংখ্যা ৪২টি। নদীর দুই তীরে দুটি পিলার। বাকি ৪০টি নদীর পানিতে। ৯৮ থেকে ১২২ মিটার গভীরতায় পিলার নির্মাণ করা হয়েছে, যা বিশ্ব রেকর্ড। এত গভীরে কোনো সেতুকে পাইলিং করতে হয়নি। পদ্মা সেতুর পাইলের ব্যাস তিন মিটার। অন্য কোনো সেতুর পাইলের ব্যাসার্ধ এত বেশি নয়। পদ্মা সেতুর প্রতিটি পাইল ৫০ মিলিমিটার পুরু স্টিলের পাইপে মোড়ানো। পাইল পাইপগুলো হাইড্রোলিক হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে নদীতে পুঁতে ফেলা হয়। পৃথিবীর ইতিহাসে এর আগে কখনও এত গভীরভাবে স্টিলের পাইপ খনন করা হয়নি।
পদ্মা সেতু ভারবহন ক্ষমতায় আরেকটি বিশ্ব রেকর্ড গড়েছে। সেতুর নীচের অংশের (নিম্ন ডেক) পিলার এবং ডেকের মধ্যে একটি ১০,০০০ টন ‘ঘর্ষণ পেন্ডুলাম বিয়ারিং’ রয়েছে। এত শক্তিশালী ভারবহন নিয়ে পৃথিবীতে আর কোনো সেতু নেই। ভারবহন ক্ষমতার কারণে পদ্মা সেতু ৯ মাত্রার ভূমিকম্প থেকে রক্ষা পাবে।
পদ্মা সেতু নির্মাণে নদীর উভয় তীরে ১৪ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। নদী শাসনে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকা। আর কোনো সেতু নির্মাণে নদী ব্যবস্থাপনায় এত খরচ করার দরকার ছিল না। নদী ব্যবস্থাপনায় ১ কোটি ৩৩ লাখ কংক্রিট ব্লক ব্যবহার করা হয়েছে। সাড়ে চার কোটি জিওর ব্যাগ ভর্তি বালি ফেলা হয়েছে।
আগামী ২৫ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বহুল প্রতীক্ষিত পদ্মা সেতু উদ্বোধন করবেন। তবে, সেতুটি পরিকল্পিত এবং পূর্ব জরিপ হয়েছিল ২৪ বছর আগে ১৯৯৮ সালে। দুই যুগে নানা চড়াই-উতরাই কাটিয়ে স্বপ্নের পদ্মা সেতু এখন বাস্তবে রূপ নিয়েছে।