শান্তিনিকাতনে হাতে কাগজ তৈরি
শান্তিনিকেতনের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্জ্য পদার্থ, প্রাকৃতিক জৈব এবং বর্জ্য পদার্থ নিয়ে ‘হ্যান্ডমেড পেপার’-এর উপর একটি উদ্ভাবনী কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে। কর্মশালাটি ২৪ মার্চ শুরু হয়েছিল এবং কলাভবনের প্রাক্তন এবং বর্তমান ছাত্রদের দ্বারা আয়োজিত হয়েছিল। এখন যেভাবে বনের গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে তাতে ভবিষ্যতে কাগজ তৈরি নিয়ে শঙ্কিত অনেকেই। তাই রবীন্দ্রনাথের দেখানো পথ অনুসরণ করে কাগজ তৈরির এই কর্মশালায় ভালো সাড়া পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
শান্তিনিকেতনের প্রথম দিকে, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, নন্দলাল বসু এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক উপাদান শিক্ষার্থীদের হাতে কাগজ তৈরি করতে অনুপ্রাণিত করেছিলেন। পরবর্তীকালে শ্রীনিকেতনের ইন্ডাস্ট্রিয়াল হাউসে এ ধরনের কাগজ তৈরির ওপর জোর দেওয়া হয়। সময়ে সময়ে কলাভবনে কাগজ তৈরির কর্মশালারও আয়োজন করা হয়।
প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা হস্তশিল্প শেখাতে এগিয়ে এসেছেন যাতে শিক্ষার্থীরা নিয়মিত হাতে কাগজ তৈরিতে মনোনিবেশ করতে পারে। এই কর্মশালায় আঁশযুক্ত উদ্ভিদ যেমন শবই, উল, প্যাপিরাস ঘাস, কলার ছোলা, কাণ্ড ইত্যাদি প্রাকৃতিক উপকরণ কাগজ তৈরিতে ব্যবহার করা হচ্ছে। এছাড়া পুরনো জিন্স ও অন্যান্য পুরনো কাপড়ের টুকরো এবং বিভিন্ন কৃত্রিম উপকরণও ব্যবহার করা হচ্ছে।
কলাভবনের প্রাক্তন শিক্ষার্থী রোশমী বাগচী ও কিংশুক সরকার বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে যেভাবে বিভিন্ন উদ্দেশ্যে গাছ কাটা হচ্ছে তাতে বৈশ্বিক উষ্ণতা বাড়ছে। কাগজ তৈরির জন্য প্রচুর গাছও কাটা হয়। শীঘ্রই এটি বন্ধ করা না হলে অদূর ভবিষ্যতে মানবজাতির জন্য বড় বিপদ অপেক্ষা করছে। তিনি বলেন, হাতে কাগজ তৈরির প্রক্রিয়া খুবই সহজ। এই ধরনের কাগজ অনেক দৈনন্দিন জিনিস তৈরি করতে ব্যবহার করা যেতে পারে, যা প্লাস্টিকের বিকল্প হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে।
প্রাচীন মিশর ও অন্যান্য সভ্যতায় এভাবেই কাগজ তৈরি হতো। এই কর্মশালায় কোনো অ্যাসিড বা রাসায়নিক ছাড়াই হাতে তৈরি কাগজ, যা মূলত শিল্পে ব্যবহার করা হবে।